ইউক্রেনে আবারো ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেন জুড়ে রাতভর চালানো এই হামলায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত এবং ২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। খবর আল জাজিরার।

শনিবার (৭ জুন) ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া রাতভর ২১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেনীয় বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ৮৭টি ড্রোন ও সাতটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করে নিষ্ক্রিয় করেছে।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভের মেয়র ইহোর তেরেখভ জানান, রাশিয়ার হামলায় কারকিভে কমপক্ষে তিনজন নিহত এবং দুই শিশুসহ ১৭ জন আহত হয়েছেন। ২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে এই আক্রমণটিকে শহরের ওপর ‘সবচেয়ে শক্তিশালী’ আক্রমণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি।

আরো পড়ুন:

ইউক্রেনে ব্যাপক হামলা রাশিয়ার

ইউক্রেনের ড্রোন হামলার প্রতিশোধ নেবেন পুতিন, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

তেরেখভ আরো জানান, রাশিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার (৩০ মাইল) দূরে অবস্থিত ১৪ লাখ মানুষের শহরটিতে ভোর হওয়ার আগে ৪৮টি ইরানি তৈরি ড্রোন, দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ও চারটি গাইডেড বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে।

তিনি স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে টেলিগ্রামে এক পোস্টে লিখেন, “ড্রোন এখনও আকাশে উড়ছে। আবাসিক ভবন ও বেসামরিক অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”

দক্ষিণাঞ্চীয় শহর খেরসনে রাশিয়ার গোলাবর্ষণে এক দম্পতি নিহত এবং আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আঞ্চলিক গভর্নর ওলেকসান্ডার প্রোকুদিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ডিনিপ্রোতে, পৃথক হামলায় ৪৫ এবং ৮৮ বছর বয়সী দুই নারী আহত হয়েছেন।

এর আগে, গতকাল শুক্রবার (৬ জুন) ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানান, শুক্রবার ইউক্রেন জুড়ে রাশিয়ার ব্যাপক হামলায় কমপক্ষে সাতজন নিহত এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, হামলায় ৪০০টিরও বেশি ড্রোন এবং ৪০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে রাশিয়া।

শুক্রবার ব্যাপক হামলার পর রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘ইউক্রেনের সন্ত্রাসী হামলার জবাবে’ এ হামলা চালানো হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরো দাবি করে, সব হামলাই হয়েছে ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে।

গত সপ্তাহে রাশিয়ার অন্তত চারটি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় ইউক্রেন। ওই হামলায় রুশ বিমানবাহিনীর ৪০টির বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করেছিল ইউক্রেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক ফোনালাপে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানান, তার দেশ এ হামলার বদলা নেবে। এরপরই গতকাল শুক্রবার ও আজ শনিবার টানা দুইদিন রাশিয়ার ব্যাপক হামলায় কেঁপে ওঠে ইউক্রেন।

হামলায় প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগ এক্স-এ একটি পোস্টে বলেন, “এখন ঠিক সেই মুহূর্ত যখন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং বিশ্বের সকলেই একসঙ্গে রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ করে এই যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে।”

তিনি রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগে ট্রাম্পের আপাত অনিচ্ছার দিকেও ইঙ্গিত দেন। 

পোস্টে জেলেনস্কি উল্লেখ করেন, “যদি কেউ চাপ প্রয়োগ না করে এবং এই যুদ্ধকে আরো দীর্ঘায়িত করে, তাহলে সেটি একধরনের সহযোগিতা এবং দায় বহনের নামান্তর। আমাদের কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।”

ইউক্রেন ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ অব্যাহত রেখেছে এবং গত সোমবার ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত আলোচনায় তাদের সর্বশেষ প্রস্তাব পেশ করেছে। কিন্তু মস্কো যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে জোর দিয়ে বলেছে, ‘যুদ্ধ জাতীয় টিকে থাকার বিষয়’।

শুক্রবার (৬ জুন) ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “আমাদের জন্য, এটি একটি অস্তিত্বের বিষয়। এটি আমাদের জাতীয় স্বার্থ, আমাদের নিরাপত্তা এবং আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।”

জেলেনস্কি যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্প এবং পুতিনের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ য় ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন ইউক র ন র শ ক রব র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

কেনিয়ায় ভূমিধসে নিহত ২১, নিখোঁজ ৩০

কেনিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় রিফ্ট ভ্যালি অঞ্চলের এলগেয়ো-মারাকওয়েট কাউন্টির চেসোঙ্গোচে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে রাতারাতি ভূমিধস ঘটেছে। কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, এতে অন্তত ২১ জন নিহত এবং এক হাজারেরও বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে।

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। 

আরো পড়ুন:

কক্সবাজারে পাহাড়ধস: কারণ ও করণীয়

বহু জাতি-সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্তিমূলক বাস্তবতা দেখতে পাচ্ছি না: সন্তু লারমা

শনিবার (১ নভেম্বর) কেনিয়ার স্বরাষ্ট্রসচিব কিপচুম্বা মুরকোমেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক বিবৃতি বলেন, গুরুতর আহত কমপক্ষে ২৫ জনকে এলগেয়ো-মারাকওয়েট কাউন্টি থেকে চিকিৎসার জন্য এলডোরেট শহরে বিমানযোগে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া কমপক্ষে ৩০ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

তিনি জানান, সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহায়তায় রবিবার থেকে উদ্ধার অভিযান পুনরায় শুরু করা হবে।

স্বরাষ্ট্রসচিব আরো জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে আরো ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহের প্রস্তুতি চলছে। এ কাজে সামরিক ও পুলিশের হেলিকপ্টারগুলো প্রস্তুত রাখা রয়েছে।

কেনিয়ার রেড ক্রস পাহাড়ি এলাকা চেসোঙ্গোচের আকাশ থেকে তোলা ছবি শেয়ার করেছে, যেখানে ব্যাপক কাদা ধস ও আকস্মিক বন্যা ছড়িয়ে পড়ার দৃশ্য দেখা গেছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা সরকারের সঙ্গে উদ্ধার প্রচেষ্টা সমন্বয় করছে, যার মধ্যে আহতদের বিমানযোগে স্থানান্তরও রয়েছে।

রেড ক্রস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ এক বিবৃতি বলেছে, বন্যা ও অবরুদ্ধ সড়কের কারণে কিছু ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছানো খুবই কঠিন।

চেসোঙ্গোচের পাহাড়ি এলাকা আগেও ভূমিধসের ঝুঁকিতে ছিল। ২০১০ ও ২০১২ সালে কয়েক ডজন মানুষ মারা গিয়েছিল এবং ২০২০ সালে প্রচণ্ড বন্যায় একটি শপিং সেন্টার ভেসে গিয়েছিল।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেনিয়ায় ভূমিধসে নিহত ২১, নিখোঁজ ৩০