বেনাপোলে ভারত থেকে আসা যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা শুরু
Published: 9th, June 2025 GMT
ভারতের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় বেনাপোল বন্দরে স্ক্রিনিংসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মানার পদক্ষেপ নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ৪ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়েছে, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা সন্দেহজনক যাত্রীদের হেলথ ডেস্কের সহায়তার বিষয়ে স্বাস্থ্য বার্তা প্রদান এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিবিড়ভাবে পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে ভারত থেকে ফিরে আসা যাত্রীদের করোনার উপসর্গ আছে কিনা তা প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ভারত ফেরত আফজাল হোসেন বলেন, ১৩ দিন আগে মেডিকেল ভিসায় ভারত গিয়েছিলাম। ভারতের কোথাও করোনা পরীক্ষা করেনি।
সীমা রানী নামে একজন বলেন, একমাস ভারতে চিকিৎসার পর দেশে ফিরলাম। ভারতের কোথাও নতুন করে করোনার প্রভাব ছড়িয়েছে, শুনিনি। তবে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে আসার পর দেখছি করোনা পরীক্ষা করছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার আব্দুল মজিদ বলেন, ভারতে জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, দেশটির কিছু কিছু স্থানে ওমিক্রন ধরনের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে করোনার এ নতুন ধরনটি যাতে ছড়াতে না পারে সে জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সতর্কতার জন্য ভারত ফেরত প্রত্যেক যাত্রীকে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
বেনাপোলর ইমিগ্রেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নতুন রূপে করোনা ভাইরাস দেখা দিচ্ছে। যার নামকরণ করা হয়েছে কোভিড-ওমিক্রন এক্সবিবি। এখন পর্যন্ত এ অঞ্চলে কেউ আক্রান্ত না হলেও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সবাইকে মাক্স পরা ও করোনার সময় যে সব স্বাস্থ্য বিধি ছিল সেগুলো আবারও মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। কোভিড-ওমিক্রন এক্সবিবির লক্ষণ হলো জ্বর, কাশি ছাড়া মাথা, গলা, পিঠ ও জয়েন্টে ব্যথা, নিউমোনিয়া, ক্ষুধা কমে যাওয়া। কোভিড-ওমিক্রন এক্সবিবি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ৫ গুণ বেশি বিষাক্ত, মৃত্যুর হারও বেশি। অতি অল্প সময়ের মধ্যে লক্ষণগুলো তীব্র হয়ে উঠবে ও স্পষ্ট লক্ষণগুলোর অনুপস্থিতিতেও পরিবর্তন ঘটবে।
যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জরায়ুর ফাইব্রয়েড কতটা ভয়ের
প্রতিবছর জুলাই মাস বিশ্বব্যাপী ‘জরায়ুর ফাইব্রয়েড সচেতনতা মাস’ হিসেবে পালিত হয়। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য নারীদের মধ্যে জরায়ুর ফাইব্রয়েড বা টিউমার নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো, এর সঠিক চিকিৎসা ও পরামর্শের সুযোগ নিশ্চিত করা এবং সুস্থ জীবনযাত্রার গুরুত্ব তুলে ধরা।
ফাইব্রয়েড হলো জরায়ুর একধরনের নন ক্যানসারাস টিউমার বা মাংসপিণ্ড, যা প্রজননক্ষম নারীদের হতে পারে। লেইওমায়োমা বা মায়োমা নামেও এটি পরিচিত। জরায়ুতে নানা ধরনের টিউমারের মধ্যে বেশি দেখা যায় ফাইব্রয়েড। সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি নিরীহ হয়। তবে সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা না করলে জীবনমানের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলে।
লক্ষণ বা উপসর্গ
এই টিউমার লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও থাকতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অন্য কোনো সমস্যায় পেটের আলট্রাসাউন্ড করতে গিয়ে ধরা পড়ে। তবে যেসব লক্ষণ দেখা যেতে পারে—
অতিরিক্ত ও দীর্ঘ সময় ধরে ঋতুস্রাব।
তলপেটে চাপ বা ব্যথা। শরীর ফুলে যাওয়া।
ঘন ঘন প্রস্রাব বা মূত্রনালির সমস্যা।
সহবাসের সময় ব্যথা অনুভব করা।
গর্ভধারণে সমস্যা বা বন্ধ্যত্ব।
বয়স ও বংশগতির প্রভাব।
ওজনাধিক্য, হরমোন পরিবর্তন ইত্যাদি।
নির্ণয় ও চিকিৎসা
আলট্রাসাউন্ড, পেলভিক ইমেজিং, এমআরআই বা জরুরি ক্ষেত্রে হাইফু বা হিস্টেরস্কোপি ব্যবহারের মাধ্যমে জরায়ুতে ফাইব্রয়েড শনাক্ত করা যায়।
টিউমার ছোট হলে বা উপসর্গ না থাকলে ওষুধ ও পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। গুরুতর ক্ষেত্রে মায়োমেকটমি, ইউটেরাইন আর্টারি এম্বোলাইজেশন, এমআরআই গাইডেড ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড বা জরায়ু অপসারণ করা হয়। চিকিৎসার ধরন বাছাইয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কেন সচেতনতা জরুরি
ফাইব্রয়েড খুবই পরিচিত একটি সমস্যা। কিন্তু অনেক নারী উপসর্গ পেয়েও সময়মতো এর চিকিৎসা নেন না। এতে করে দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা হতে পারে। মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, ক্ষুধা, ক্লান্তি, বন্ধ্যত্ব নিয়ে উদ্বেগ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা—এসব ঝুঁকি মোকাবিলায় মানসিক সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে।
এই টিউমার ডিজেনারেটিভ, ইনফেকশন অথবা সারকোমেটাজে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে সারকোমেটাজ বা জরায়ু ক্যানসারে রূপ নেয় মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ ক্ষেত্রে। তাই ক্যানসার ভেবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
ফাইব্রয়েড নিয়ে গবেষণা এখনো সীমিত। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা ও সময়মতো চিকিৎসা। ফাইব্রয়েড হলে সন্তান হবে না, এমন ধারণাও অমূলক। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগনির্ণয় ও চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক জটিলতা এড়ানো যায়। এ জন্য স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
ডা. শারমিন আব্বাসি, স্ত্রীরোগ ও বন্ধ্যত্ববিশেষজ্ঞ