Risingbd:
2025-11-02@00:40:07 GMT

১ জন ডাক্তারে চলছে হাসপাতাল!

Published: 14th, June 2025 GMT

১ জন ডাক্তারে চলছে হাসপাতাল!

দীর্ঘদিন ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কট রয়েছে। তাই নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় ধরে বাড়তি সেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসরা নিজেরাই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাই মাত্র একজন চিকিৎসক দিয়ে কোনো রকমে চলছে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার কাজ।

এদিকে, চিকিৎসক সঙ্কটে কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নিয়োগের দাবি তাদের।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা বন্দর, তিনটি তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনসহ বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পে কর্মরত রয়েছে দেশি-বিদেশি কয়েক হাজার শ্রমিক। এসব শ্রমিকসহ কলাপাড়া ও পার্শ্ববর্তী উপজেলা রাঙ্গাবালীর প্রায় চার লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র আশ্রয়স্থল এই কলাপাড়া ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল। 

বছরের অধিকাংশ সময়ে রোগীতে ভরা থাকে হাসাপাতালটি। অনেক সময় ওয়ার্ডে সিট না পেয়ে রোগীরা চিকিৎসা নেয় হাসপাতালের মেঝে কিংবা করিডোরে। অথচ এ হাসাপতালে চিকিৎসকের ৩৬টি পদের মধ্যে ২৭টি পদই শূন্য। বাকি ৯ জনের মধ্যে দুজন ঢাকায় সংযুক্তিতে, দুজন বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে ও একজন রয়েছেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। 

বর্তমানে মাত্র চার জন চিকিৎসক রয়েছেন এ হাসপাতালে। এর মধ্যে উপেজলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকতে হয় দাপ্তরিক কাজে। এছাড়া দুজন রয়েছেন জুনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে। এরমধ্যে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ এবং অপরজন গাইনি ও অবস বিশেষজ্ঞ। যাদের কাজ শুধুমাত্র রেফার অর্থাৎ জটিল রোগের শিশু এবং গাইনি বিষয়ে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া। এছাড়া শুধুমাত্র একজন রয়েছেন মেডিকেল অফিসার। যার আউটডোর, ইনডোর ও জরুরি বিভাগের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কথা। 

সীমবদ্ধার মধ্যে এই চার চিকিৎসক সময় ভাগ করেই চালাচ্ছেন পুরো ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। তবে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় ধরে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে চার চিকিৎসকই এখন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বার বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। 

এদিকে কাঙ্খিত চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও তাদের স্বজনরা। 

কলাপাড়া হাসাপতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী মুরাদ হোসেন বলেন, “মঙ্গলবার দুপুরে জ্বর ও শাসকষ্ট নিয়ে এখানে ভর্তি হয়েছি। আজ সকালে শুধু একজন ডাক্তার এসে দেখে গেছে। এখানে ডাক্তারের সংকট থাকার কারণে আমরা ঠিকমতো সেবা পাচ্ছি না।” 

শিশু ওয়ার্ডের ভর্তি রোগী জুবাইদার (৫ মাস) নানি হোসনেয়ারা বলেন, “এখানে শুধু একজন শিশু রোগের চিকিৎসক রয়েছেন। তিনি এতো শিশু রোগীর কীভাবে সেবা দিবেন? নার্সরা তো সব বোঝে না। এখানে নাতীকে ভর্তি করানোর পর আমাদের প্রেসক্রিপশন নিয়ে বেশ কয়েকবার ডাক্তারের পার্সোনাল চেম্বারে গিয়ে ওষুধ লিখে নিয়ে আসতে হয়েছে। আমরা এ হাসপাতালের চিকিৎসক সঙ্কটের সমাধান চাই।”

কলাপাড়া হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি ও অবস) ডা.

শরীফ শায়লা ইসলাম বলেন, “আমাদের এখানে প্রচুর চিকিৎসক সংকট। যার কারণে অতিরিক্ত সময় ধরে সেবা দিতে গিয়ে আমি নিজেই এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছি। শরীরে জ্বর উঠেছে। আপনাদের আসার খবর পেয়ে ওষুধ খেয়ে জ্বর কমিয়ে এখন আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি। আসলে এভাবে রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়।” 

অপর জুনিয়র কনসালটেন্ট (পেডিয়াট্রিক্স) ডা. কামরুননাহার মিলি বলেন, “আমাদের তো আসলে আউটডোরে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কথা না। তারপরও সঙ্কটের কারণে দিতে হচ্ছে। অতিরিক্ত সময় ধরে সেবা দিতে গিয়ে আমি নিজেই এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছি। এত বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ এলাকার দিক বিবেচনা করা হলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসক সঙ্কট সমাধানের অনুরোধ জানাচ্ছি। এতো সঙ্কটে আসলে রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়।” 

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জুনায়েদ হোসেন লেলিন বলেন, “চিকিৎসক সঙ্কটের ব্যাপারে বার বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে- এমনকি চিঠি দিয়েও এর সুরাহা পাইনি।”

পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ খালেদুর রহমান মিয়া বলেন, “শুধু কলাপাড়া নয়, পুরো জেলা জুড়েই চিকিৎসক সঙ্কট রয়েছে। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। আশা করছি দ্রুত এর সমাধান হবে।”

ঢাকা/ইমরান/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ক ৎসক স র চ ক ৎসক র কল প কল প ড় ত সময়

এছাড়াও পড়ুন:

মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদন

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে নতুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

আরো পড়ুন:

নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা

১৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের আগে একটা মানবাধিকার কমিশন ছিল, কিন্তু সেটি কার্যত দন্তহীন একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। নিয়োগ পদ্ধতিতে ত্রুটি, এখতিয়ারে ঘাটতি এবং নেতৃত্বের দুর্বলতায় প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। এবার সেটিকে সত্যিকারের এখতিয়ারসম্পন্ন, ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।”

তিনি জানান, নতুন অধ্যাদেশে মানবাধিকার কমিশনের কাঠামো, এখতিয়ার ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। কমিশন একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সার্বক্ষণিক সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা নিশ্চিত করতে আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করা হবে এবং প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বাছাই কমিটি সুপারিশ করবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমরা নিয়োগ পদ্ধতিটা এমনভাবে করেছি যাতে অভিজ্ঞ, যোগ্য ও মানবাধিকার রক্ষায় সক্রিয় মানুষরা কমিশনে জায়গা পান।”

তিনি আরো বলেন, “আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ কর্তৃক অনুসমর্থিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি এবং প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত মানবাধিকারগুলোকেও এই কমিশনের এখতিয়ারে আনা হয়েছে। এর ফলে কমিশন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী কাজ করতে পারবে।”

অধ্যাদেশে কমিশনের এখতিয়ার বহুলাংশে বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাতেও কমিশন তদন্ত করতে পারবে। আইন উপদেষ্টা বলেন, “আগের কমিশনের এখতিয়ারে গুরুতর সীমাবদ্ধতা ছিল, বিশেষ করে শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ক্ষেত্রে। এবার সেই সীমাবদ্ধতা দূর করা হয়েছে।”

এছাড়া, গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা আইনসহ মানবাধিকার সংরক্ষণমূলক যেকোনো আইনের বাস্তবায়নের দায়িত্ব মানবাধিকার কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। আলাদা করে ‘গুম কমিশন’ গঠনের প্রয়োজন হবে না বলে তিনি জানান।

অধ্যাদেশে কমিশনের আদেশ প্রতিপালনকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা বলেন, “এখন থেকে কমিশনের সুপারিশ বা নির্দেশ উপেক্ষা করা যাবে না। এর বাধ্যবাধকতা আইনি কাঠামোয় যুক্ত করা হয়েছে।”

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন। খবর বাসসের।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স
  • নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের ৩১ বিভাগকে প্রস্তুতির নির্দেশ ইসির
  • কর্মদিবসের শেষ দিনে প্রধান শিক্ষকের মৃত্যু
  • প্রশিক্ষকদের দায়িত্বে উদাসীনতাসহ যেসব অসংগতি উঠে এল প্রাথমিক তদন্তে
  • চবি ছাত্রদলের ৪২০ জনের কমিটিতে নারী মাত্র ১১
  • চলন্ত গাড়ির নিচে পড়েও অক্ষত অবস্থায় ফিরল ৩ বছরের শিশুটি
  • মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদন