প্রসূতির মৃত্যু, অবহেলার অভিযোগে চিকিৎসক নার্স গ্রেপ্তার, ক্লিনিক সিলগালা
Published: 15th, June 2025 GMT
নীলফামারীর ডোমার উপজেলা শহরের একটি ক্লিনিকে বেবি আক্তার (২৮) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকের অবহেলায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ ওই নারীর স্বজনদের। ঘটনার পর একজন চিকিৎসকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডোমার থানা-পুলিশ। পাশাপাশি ক্লিনিকটি সিলগালা করা হয়েছে।
মৃত বেবি আক্তার ডোমার উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের বড়গাছা দরগাপাড়া গ্রামের মো.
স্বজনদের অভিযোগ, সন্তান প্রসবের পর রোগীর অবস্থার অবনতি হলেও চিকিৎসক রিজওয়ানা ইয়াসমিন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে অপর চিকিৎসক নাজমুস সাকিবকে দায়িত্ব দিয়ে ক্লিনিক ত্যাগ করেন। পরে রাতে নাজমুস সাকিব ওই রোগীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে ভর্তি করা হলে রোববার ভোররাতে বেবি আক্তারের মৃত্যু হয়।
বেবি আক্তারের স্বামী নূর আলম বলেন, ‘সিজারের তিন ঘণ্টা পরও রোগীর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলেও চিকিৎসক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। চিকিৎসকের অবহেলায় আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে।’
অভিযোগের ভিত্তিতে আজ রোববার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শায়লা সাঈদ তন্বী এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. রায়হান বারী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেওয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. রায়হান বারী বলেন, এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ না পেলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেনে তদন্ত কমিটি ঘটনা করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ক্লিনিকটি এখনো লাইসেন্স পায়নি বলে তিনি জানান।
ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোহসীন আলী প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় রোববার সকালে মৃত নারীর স্বামী মো. নূর আলম বাদী হয়ে ডোমার থানায় মামলা করেন। মামলায় অভিযুক্ত চিকিৎসক মো. নাজমুস সাকিব, নার্স সুমনা আক্তার ও সাবিয়া আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বেবি আক্তারের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত চ ক ৎসক প রস ত উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।
সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।
স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা