যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ‘আপসহীন প্রতিপক্ষ’ খামেনি কীভাবে প্রভাবশালী নেতা হয়ে উঠলেন
Published: 18th, June 2025 GMT
ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা হিসেবে আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি প্রায় চার দশক ধরে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে সুন্নি রাষ্ট্রগুলোর প্রতিপক্ষ হিসেবে শিয়া–অধ্যুষিত ইরানকে এক আঞ্চলিক শক্তিতে পরিণত করেছেন। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রতি আপসহীন বৈরিতাও বজায় রেখেছেন। এ সময় দেশে একাধিকবার গণবিক্ষোভ হলেও তা কঠোর হাতে দমন করেছেন তিনি।
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতিষ্ঠাতা ও ক্যারিশমাটিক নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির উত্তরসূরি হিসেবে প্রথম দিকে আয়াতুল্লাহ খামেনিকে দুর্বল ও অনুপযুক্ত মনে করা হয়েছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমতার রাশ দৃঢ়ভাবে নিজের হাতে নিয়েছেন তিনি। এখন তিনিই ইরানের সর্বোচ্চ ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ব্যক্তি।
ক্ষমতায় আসার সময় খামেনির ‘আয়াতুল্লাহ’ উপাধি ছিল না। রুহুল্লাহ খোমেনির ছায়াতেই তাঁর উত্থান। ধর্মীয় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় তেমন সফল না হলেও দেশের নিরাপত্তাকাঠামোকে শক্তিশালী করে ক্ষমতা সুসংহত করেছেন তিনি।
সর্বোচ্চ নেতার পদে খামেনিকে কারও চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ নেই। একের পর এক নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের ওপর তিনি প্রভাব বিস্তার করেছেন। তিনি অবস্থান নিয়েছেন পারমাণবিক প্রযুক্তির পক্ষে; যা ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
তবে ইসরায়েলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার পর থেকে খামেনির আঞ্চলিক প্রভাব হ্রাস পেতে শুরু করেছে। ইসরায়েল গাজায় হামাস, লেবাননে হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনে হুতি ও ইরাকে ইরানপন্থী মিলিশিয়াদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে। এদিকে ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদও ক্ষমতা হারিয়েছেন।
খামেনির নেতৃত্বের ধরনে একদিকে আদর্শগত কঠোরতা, অন্যদিকে কৌশলগত বাস্তবতা
৮৬ বছর বয়সী খামেনি ১৯৮৯ সাল থেকে ইরান শাসন করছেন। নির্বাহী, সামরিক, বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রের সব শাখার চূড়ান্ত কর্তৃত্ব তাঁর হাতে। নির্বাচিত কর্মকর্তারা দৈনন্দিন প্রশাসনিক কাজ দেখভাল করলেও, কোনো গুরুত্বপূর্ণ নীতি, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রকে ঘিরে নীতিগত সিদ্ধান্ত খামেনির অনুমতি ছাড়া হয় না।
ইতিহাসের এক দুর্ঘটনা (১৯৮৯ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে খামেনির নির্বাচিত হওয়ার অপ্রত্যাশিত ঘটনা) একজন দুর্বল প্রেসিডেন্টকে প্রাথমিকভাবে একজন দুর্বল সর্বোচ্চ নেতায় এবং সেখান থেকে তাঁকে গত এক শ বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী পাঁচ ইরানির একজনে পরিণত করেছে।করিম সাদজাদপুর, কারনেগি এন্ডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের বিশ্লেষকখামেনির নেতৃত্বের ধরনে একদিকে আদর্শগত কঠোরতা, অন্যদিকে কৌশলগত বাস্তবতা দেখা যায়। তিনি পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রকে গভীর সন্দেহের চোখে দেখেন। তাঁর অভিযোগ, ইরানে শাসনব্যবস্থায় বদল আনতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। তা সত্ত্বেও, প্রয়োজনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র রক্ষায় ছাড় দেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুনখামেনিকে হত্যায় ইসরায়েলি পরিকল্পনা আটকে দেন ট্রাম্প১৫ জুন ২০২৫২০১৩ সালে খামেনি প্রথম ‘বীরের নমনীয়তা’র ধারণা দেন, যার মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনে কৌশলগত আপসকে বৈধতা দেওয়া হয়। তাঁর এ ধারণা ১৯৮৮ সালে ইরাকের সঙ্গে ৮ বছরের যুদ্ধ শেষে যুদ্ধবিরতিতে খোমেনির সম্মতির সিদ্ধান্তের সঙ্গে তুলনা করা যায়।
২০১৫ সালে ৬ বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের পারমাণবিক চুক্তিকে খামেনি সতর্কভাবে সমর্থন দেন। তাঁর হিসাব ছিল, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল হবে এবং ক্ষমতার ভিত্তি আরও মজবুত হবে।
চলতি বছরের মার্চেও খামেনি একই রকম উভয়সংকটে পড়েন। তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, তিনি খামেনিকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন নতুন পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে এবং হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তেহরান দাবি করে যে তার পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব এটি বিশ্বাস করে না। আর ইসরায়েল এ কর্মসূচিকে নিজের অস্তিত্বের জন্য হুমকি বলে মনে করে।
আরও পড়ুননেতানিয়াহুর হত্যার হুমকি: আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এখন কী করবেন১৭ জুন ২০২৫২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রথম দফা প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ওই চুক্তি থেকে সরে আসেন এবং ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান ধীরে ধীরে চুক্তির শর্ত থেকে বেরিয়ে আসতে থাকে।
এ পরিস্থিতিতে খামেনির প্রতিক্রিয়া ছিল তাঁর চিরচেনা ভঙ্গিতে, যার কয়েকটি এ রকম:
‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের শত্রুতা (ইরানের সঙ্গে) চিরকালই ছিল। ওরা আমাদের হামলার হুমকি দেয়, যদিও তা খুব সম্ভাব্য বলে মনে করি না। তবে যদি কোনো দুঃসাহস দেখায়, উপযুক্ত জবাব পাবে।’
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতিষ্ঠাতা ও ক্যারিশমাটিক নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির উত্তরসূরি হিসেবে প্রথম দিকে আয়াতুল্লাহ খামেনিকে দুর্বল ও অনুপযুক্ত মনে করা হয়েছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমতার রাশ দৃঢ়ভাবে নিজের হাতে নিয়েছেন তিনি। এখন তিনিই ইরানের সর্বোচ্চ ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ব্যক্তি।‘আর যদি তারা দেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চক্রান্ত করে, যেমন আগেও করেছে, তবে জনগণই তাদের জবাব দেবে।’
ইরানের জটিল ধর্মীয় শাসনব্যবস্থা ও সীমিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ হিসেবে খামেনি সব সময় এমন একটি কাঠামো নিশ্চিত করেছেন; যেখানে কোনো গোষ্ঠী, এমনকি তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের কেউ যেন তাঁকে ও তাঁর যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ করতে না পারে।
আরও পড়ুনইসরায়েলি হামলায় ইরানের আইআরজিসির বিমানবাহিনীর প্রধান নিহত১৩ জুন ২০২৫আধুনিক নিরাপত্তাকাঠামোর ওপর নির্ভরতা
ধর্মীয় দিক থেকে খোমেনির মতো মর্যাদা না থাকায় খামেনি বরাবর তাঁর আধুনিক নিরাপত্তাকাঠামোর ওপর নির্ভর করেছেন। অভিজাত ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কোর (আইআরজিসি) ও বাসিজ বাহিনীর সহায়তায় তিনি বিরোধী মত দমন করেছেন। আধা সামরিক ধর্মীয় সংগঠন বাসিজে লাখো স্বেচ্ছাসেবী রয়েছেন।
আয়াতুল্লাহ খামেনির শক্তি বহু বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য ‘সেতাদ’-এর ওপরও নির্ভরশীল। এটি খামেনির সরাসরি নিয়ন্ত্রণে ও তাঁর শাসনামলে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে শিয়া সম্প্রদায়ের উপস্থিতি শক্তিশালী করতে, বিশেষ করে ইরাক, লেবানন ও ইয়েমেনে এবং সিরিয়ায় বাশার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে আইআরজিসির জন্য বিপুল অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।
২০০৯ সালে ইরানে বিতর্কিত নির্বাচনে মাহমুদ আহমাদিনেজাদ আবার নির্বাচিত হলে আইআরজিসি বিক্ষোভ দমনে অভিযান চালায়। খামেনি তাঁকে সমর্থন দিলেও পরে আহমাদিনেজাদের আচরণে বিরক্ত হন।
২০২২ সালে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুকে ঘিরে শুরু হওয়া বিক্ষোভেও খামেনি কঠোর অবস্থান নেন। বহু আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তার, কারাবন্দী কিংবা কখনো মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনজনগণকে মোবাইল ফোন থেকে কেন হোয়াটসঅ্যাপ মুছে ফেলতে বলল ইরান৯ ঘণ্টা আগেইরানের বাইরের গবেষকেরা খামেনিকে একজন গোপন আদর্শবাদী হিসেবে চিত্রিত করেন, যিনি সব সময় বিশ্বাসঘাতকতার আশঙ্কায় থাকেন। ১৯৮১ সালে এক হত্যাচেষ্টায় তাঁর ডান হাত আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে তাঁর মধ্যে এ উদ্বেগ বাড়ে।
খামেনির অফিশিয়াল জীবনী অনুযায়ী, ১৯৬৩ সালে মাত্র ২৪ বছর বয়সে তিনি শাহ সরকারের বিরোধিতার কারণে প্রথমবারের মতো কারাবন্দী ও ব্যাপক নিপীড়নের শিকার হন।
ইসলামি বিপ্লবের পর উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে খামেনি ইরাক-ইরান যুদ্ধ (১৯৮০–৮৮) চলাকালে বিপ্লবী গার্ডের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন। যুদ্ধে দুই পক্ষ মিলিয়ে নিহত হন ১০ লাখ মানুষ।
পরে খোমেনির সমর্থনে আয়াতুল্লাহ খামেনি ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তবে খোমেনির মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে তাঁকে বেছে নেওয়া অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত ছিল। কারণ, তাঁর জনপ্রিয়তা বা ধর্মীয় মর্যাদা ছিল তুলনামূলক কম।
কারনেগি এন্ডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের বিশ্লেষক করিম সাদজাদপুর বলেন, ‘ইতিহাসের এক দুর্ঘটনা (১৯৮৯ সালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে খামেনির নির্বাচিত হওয়ার অপ্রত্যাশিত ঘটনা) একজন দুর্বল প্রেসিডেন্টকে প্রাথমিকভাবে একজন দুর্বল সর্বোচ্চ নেতায় এবং সেখান থেকে তাঁকে গত এক শ বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী পাঁচ ইরানির একজনে পরিণত করেছে।’
আরও পড়ুনহোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের জরুরি বৈঠক, কী জানা গেল১০ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আয় ত ল ল হ খ ম ন য ক তর ষ ট র আইআরজ স কর ছ ন ত কর ছ ইসর য ক ষমত প রথম বছর র ইসল ম র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
আগামী জাতীয় নির্বাচন দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘দেশে যাতে আর কখনো ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ, চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে বিষয়ে নারীসমাজকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। আমি বাংলাদেশের মা-বোনদের আহ্বান জানাই, আপনারা সচেতন ও সজাগ থাকুন।’
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের অবদান’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তারেক রহমান। তিনি লন্ডন থেকে সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পটভূমিতে নারীসমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে উল্লেখ করে সভায় তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা চাই, একজন মায়ের চোখে যেমন বাংলাদেশ হওয়া উচিত, তেমনই একটি ইনসাফভিত্তিক, গণতান্ত্রিক ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।’
তারেক রহমান বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে যেসব পরিবার আপনজন হারিয়েছে, তাদের আত্মত্যাগের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে। এসব পরিবারে একজন পুরুষ সদস্যের মৃত্যুর পর একজন নারী যেভাবে প্রতিদিন সংসার টেনে নিয়ে যাচ্ছেন, তা এক অনবদ্য সংগ্রাম।
নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে তারেক রহমান বলেন, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীকে রাষ্ট্র এবং রাজনীতির মূলধারার বাইরে রেখে কখনোই নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন সম্ভব নয়। নারীশক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে কোনো রাষ্ট্রই এগিয়ে যেতে পারে না। তিনি বলেন, নারী-পুরুষ ভেদাভেদ না করে সবাইকে শিক্ষা ও দক্ষতার মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে।
নারীর অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে তারেক রহমান বলেন, নারীদের স্বাবলম্বী করা গেলে বৈষম্য কমবে, পারিবারিক সহিংসতাও রোধ হবে। তাই বিএনপির স্লোগান হচ্ছে—‘ক্ষমতায়িত নারীশক্তি, পরিবারের মুক্তি।’
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি আগামী দিনে ক্ষমতায় এলে প্রান্তিক ৫০ লাখ পরিবারের জন্য ‘ফ্যামিলি কার্ড’ চালু করবে। এই কার্ড নারীদের নামে ইস্যু করা হবে। ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে প্রান্তিক পরিবারগুলোকে প্রতি মাসে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আর্থিক বা খাদ্যসহায়তা দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন ঘটবে এবং পরিবারগুলো ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হবে।
তারেক রহমানের বক্তব্যের আগে সভায় একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এই তথ্যচিত্রে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের অবদান তুলে ধরা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আফরোজা খানম বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের ভূমিকা ছিল অসামান্য। এই লড়াইয়ে সবচেয়ে সাহসী ভূমিকা রেখেছে নারীসমাজ।
যাঁরা রক্ত-অশ্রু ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন, সেই নারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস।
সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান ও সেলিমা রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তাজমেরি এস এ ইসলাম ও তাহসীনা রুশদির, বিএনপির স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রব প্রমুখ।
এ ছাড়া বক্তব্য দেন মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম, টক শো উপস্থাপক হাসিনা আখতারের ধারণ করা বক্তব্য সভায় প্রচার করা হয়। সভার সঞ্চালক ছিলেন মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান। সভায় শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা জানানো হয়।