তেহরান থেকে পাকিস্তান হয়ে ফিরবেন বাংলাদেশিরা
Published: 19th, June 2025 GMT
ইরান–ইসরায়েলের সংঘাত অব্যাহত থাকার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকার তেহরান থেকে যেসব লোক দেশে ফিরতে চান, তাঁদের সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তেহরান থেকে প্রথমে এসব লোককে স্থলপথে ইরান–পাকিস্তান সীমান্তে নেওয়া হতে পারে। তারপর পাকিস্তান থেকে আকাশপথে ফেরানো হতে পারে বাংলাদেশে।
ইরানের রাজধানী তেহরানে অবস্থানরত প্রায় ৪০০ বাংলাদেশির মধ্যে ১০০ জনের মতো দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
গতকাল বুধবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যে ১০০ জন বাংলাদেশি যোগাযোগ করেছিলেন, তাঁরা তেহরান থেকে বেশ কিছুটা দূরে সরে গেছেন। তাঁদের সংখ্যা ৫০ জনের বেশি। এ ছাড়া ইরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের কূটনীতিকসহ দূতাবাসের ৪০ জনও নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে এখন ইরানে প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন অবস্থান করছিলেন রাজধানী তেহরানে। এখন পর্যন্ত ইরানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের কেউ হতাহত হননি।ইরানে বাংলাদেশের লোকজনের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.
ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি চলমান সংঘাতের কারণে সে দেশে টাকা পাঠানোর জটিলতার বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম জানান, এই মুহূর্তে ইরানের সীমান্তবর্তী কোনো দেশ থেকে বাংলাদেশ দূতাবাসে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরপর সে দেশে কার্যক্রম চালু আছে, বাংলাদেশের এমন একাধিক বন্ধুরাষ্ট্রের মাধ্যমে লোকজনকে নিরাপদে সরানো ও দেশে ফেরানোর জন্য বাড়তি তহবিলের বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা চলছে।
এরই মধ্যে বাংলাদেশের যেসব লোক দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্তত ৫০ জন তেহরান থেকে বেশ কিছুটা দূরে নিরাপদ স্থানে সরে গেছেন। তাঁদের সবার আবাসনের ব্যবস্থা একসঙ্গে করাটা এই মুহূর্তে কিছুটা দুরূহ। মো. নজরুল ইসলাম, সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়এই মুহূর্তে ইরানের রাজধানীতে যে ৪০০ বাংলাদেশি রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্তত অর্ধেক ব্যক্তি দেশে ফিরতে পারেন বলে তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্মকর্তাদের মত। সে ক্ষেত্রে প্রায় ২০০ বাংলাদেশিকে দেশে ফেরানোর পরিকল্পনা করছে সরকার।
ইরান থেকে বাংলাদেশের যেসব লোক দেশে ফিরতে চান, তাঁদের ফেরানোর পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে মো. নজরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে লোকজনকে তেহরান থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হবে। এরপর যত দ্রুত সম্ভব কয়েক দিনের মধ্যে তাঁদের স্থলপথে ইরান–পাকিস্তান সীমান্তে নেওয়া হতে পারে। পাকিস্তান থেকে তাঁদের করাচি–দুবাই হয়ে ফেরত আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিকে তেহরান থেকে একটি কূটনৈতিক সূত্র গতকাল সকালে জানিয়েছে, ইরানের রাজধানী মোটামুটি খালি হতে শুরু করেছে। এমন এক পরিস্থিতিতে সেখানে বাংলাদেশ দূতাবাস লোকজনকে দেশে ফেরানো এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে পুরোদমে চালু থাকবে। বাংলাদেশের যেসব লোক তেহরান ছাড়তে চান এবং দেশে ফিরতে চান তাঁদের সমস্যার সমাধান করা হবে। এ পরিস্থিতিতে তেহরানের পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটলে ইরানে বাংলাদেশ দূতাবাসের কার্যক্রম স্থগিত বা অন্য কোথাও গিয়ে কাজ চালানোর বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হবে। তবে পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে কয়েক দিনের মধ্যে অবস্থার আরও অবনতি ঘটতে পারে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সব মিলিয়ে এখন ইরানে প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন অবস্থান করছিলেন রাজধানী তেহরানে। এখন পর্যন্ত ইরানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের কেউ হতাহত হননি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল দ শ র য সব ল ক নজর ল ইসল ম ন র পদ স থ ন য গ য গ কর ছ য সব ল ক দ কর মকর ত পর স থ ত অবস থ ন ন র পর
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫