২৫ মে (২০২৫) রোববার নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমিলি পার্কার লিখেছেন– ‘শহরজুড়ে অবিরাম বৃষ্টিপাত সত্ত্বেও, সাহিত্যের প্রতি আবেগ কুইন্সের হৃদয়কে আলোকিত করে তুলেছিল। শুক্রবার ৩৪তম নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বইমেলা জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। আবহাওয়ার পূর্বাভাসকে উপেক্ষা করে এবং স্থানটিকে উষ্ণতা ও উৎসাহে ভরিয়ে তোলে এমন জনতার উপস্থিতিতে (২৩ মে) উদ্বোধনী রাতটি ছিল বই, সংস্কৃতি এবং বাঙালি জাতির এক প্রাণবন্ত উদযাপন।’ 
গত ৩৩ বছরের মতো এবারও মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ৩৪তম নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিনিধিত্ব করার একটি বিশেষ আয়োজন হলো নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা। এই উদ্যোগ বিশ্বব্যাপী বাংলা ভাষাভাষী সম্প্রদায়ের মধ্যে সংস্কৃতির সংহতি, সাহিত্যচর্চার প্রসার এবং নতুন প্রজন্মের লেখক ও পাঠকদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে করা হয়। মুক্তধারা ফাউন্ডেশন মূলত বাংলাভাষী লেখক, পাঠক এবং সংস্কৃতিকর্মীদের একত্র করে একটি শক্তিশালী সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে কাজ করে থাকে। মুক্তধারা টিমের নিরলস চেষ্টার ফসল হলো– জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারের সবুজ প্রাঙ্গণে তিন দিকে তাঁবু খাটানো স্টলে সজ্জিত বইয়ের স্টলগুলো। স্টলের সামনের খোলা জায়গায় লেখক-পাঠক আড্ডায় মেতে উঠেছিলেন। ২৩ থেকে ২৬ মে (২০২৫)– এই চার দিনের মধ্যে তিন দিনই আবহাওয়া বেশ বৈরী ছিল। কিন্তু মানুষের সমাগম বৃষ্টি আটকে রাখতে পারেনি। বইমেলা প্রাঙ্গণটি ছিল একটি মহৎ সভার স্থান, যেখানে নতুন বই প্রকাশ, সাহিত্য আলোচনা, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ও পাঠক-লেখক সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এ ধরনের উদ্যোগ বাংলা diaspora-এর মাঝে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালে ‘বাঙালির চেতনা মঞ্চ’ ও ‘মুক্তধারা নিউইয়র্ক’-এর যৌথ উদ্যোগে যাত্রা শুরু করা এ বইমেলা বর্তমানে এককভাবে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের আওতায় সাফল্যমণ্ডিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এতে শহীদ পরিবার, মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, সাংবাদিক ও তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন।
মনে রাখা দরকার, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির অগ্রযাত্রায় নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলার গুরুত্ব অপরিসীম। এটি শুধু একটি বইমেলা নয়, বরং সাহিত্যপ্রেমী মানুষের মিলনক্ষেত্র এবং নতুন প্রজন্মের জন্য বাংলা সাহিত্য চর্চার এক প্রাণবন্ত কেন্দ্র হিসেবে অঙ্গীকারবদ্ধ। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের এ স্বর্ণযুগে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে এই আয়োজন অনন্য ভূমিকা রাখছে। এই মেলায় ২৫টির বেশি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে এবং তিন হাজারের বেশি নতুন ও পুরোনো বই প্রদর্শিত হয়। বইমেলায় সাহিত্য আলোচনা, পাঠ, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার মাধ্যমে বৈচিত্র্যময় অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়।  ২৩ মে জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে বইমেলার উদ্বোধন করেন জনপ্রিয় লেখক সাদাত হোসাইন। সে সময় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তার আগেই মেলাস্থল সংগীত ও নৃত্যের আসরে জমে ওঠে। উন্মুক্ত মঞ্চে চলতে থাকে বাঙালির গৌরবগাথার সাড়ম্বর পরিবেশনা। এরপর আমরা বিশিষ্টজনদের নিয়ে মিলনায়তনে গমন করি এবং সেখানে বাঙালি-অবাঙালি অতিথিবৃন্দ উপস্থিত হয়ে মেলার কৃত্যাদি সম্পন্ন করেন। উদ্বোধনী মঞ্চে অতিথিরা ৩৪টি মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে ৩৪তম বইমেলার শুভসূচনা করেন এবং পরে উদ্বোধনের অংশ হিসেবে তাদের বিশেষ উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানটি অতিথিদের উপস্থিতিতে সফল ও স্মরণীয় হয়ে ওঠে, যা ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পরিচায়ক হিসেবে কাজ করেছে। 
সন্ধ্যায় মিলনায়তনে বক্তব্য পর্ব শুরু হয়। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধকালীন মার্কিন বন্ধু ফিলিস টেইলর। তিনি তাঁর প্রয়াত স্বামী রিচার্ড টেইলরের মুক্তিযুদ্ধে উজ্জ্বল অবদান তুলে ধরে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘আজ তিনি না থাকলেও আমাদের মাঝে অমর হয়ে রয়েছেন।’ অনুষ্ঠানে বীরপ্রতীক ক্যাপ্টেন (অব.

) ডা. সিতারা বেগম, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহান, ভাষাতাত্ত্বিক অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক রওনক জাহান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামীম রেজাসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। ড. রেহমান সোবহান মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘এ ধরনের আয়োজন আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ ও সমৃদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’ মিলনায়তনে বিশেষভাবে মনোমুগ্ধকর ছিল মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের স্মৃতিচারণ ও মুক্তিযুদ্ধকালীন বন্ধুত্বের গল্প।
এবার বইমেলাকে সাজানো হয়েছিল বহির্বিশ্বে বাংলাকে গুরুত্ব দিয়ে। ‘বিশ্ব বলয়ে বাংলা’ এই অনুষ্ঠানটি সেদিক থেকে ছিল অনেক ইতবাচক এবং গুরুত্বপূর্ণ । আলোচনায় অংশ নেন আবু সাঈদ খান, অধ্যাপক ড. শামীম রেজা এবং মঈনউদ্দিন মুনশী। উপস্থাপনা করেন অভীক সারোয়ার রহমান।
শনিবারের আরেকটি দর্শকনন্দিত অনুষ্ঠান ছিল সাংবাদিক রোকেয়া হায়দারের সঞ্চালনায় পক্ষ-বিপক্ষ বিতর্ক ‘প্রবাসজীবন অসম্পূর্ণ’। অসাধারণ প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানটি ছিল উপভোগ্য। কারণ এই প্রবাসজীবন একদিকে মধুর আবার বেদনারও। এই প্রবাস অনেক কিছু যেমন দেয় আবার অনেক কিছু কেড়েও কিন্তু নেয়। সঞ্চালক রোকেয়া হায়দারের প্রাণবন্ত উপস্থাপনা, উপস্থিত অংশগ্রহণকারীদের অকাট্য যুক্তি এবং দর্শকদের অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ততা সব মিলিয়ে এটি হয়ে উঠেছিল দ্বিতীয় দিন বইমেলার অন্যতম প্রাণ। জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ফাহমিদা নবীর গান শুনতে শুনতে মুক্তধারা আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলার দ্বিতীয় দিনের পর্দা নামে।
মুক্তধারা আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলার তৃতীয় দিন ছিল বাঙালির সাংস্কৃতিক গৌরব উদযাপনের এক উজ্জ্বল উপলক্ষ। ২৫ মে, রোববার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টার বিপুল মানুষের ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে। প্রবাসে বসবাসরত বাঙালিরা সমস্ত ব্যথা ও বিভাজন ভুলে একত্র হয়ে বাংলার সংস্কৃতি ও সাহিত্যের হীরন্ময় স্পর্শ অনুভব করেন। অনুষ্ঠানে জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ফাহমিদা নবীর সুরেলা গান মেলা প্রাঙ্গণকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ করে তোলে। বইমেলার চতুর্থ দিনে শিশু-কিশোর ও যুবসমাজের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল এক মনোজ্ঞ ও রঙিন সাংস্কৃতিক উৎসব। ‘শিশু-কিশোর-যুব উৎসব’ শিরোনামে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক পর্বে পাঁচ থেকে আঠারো বছর বয়সী শতাধিক প্রতিভাবান অংশগ্রহণ করে। সেদিন রং-তুলিতে ছবি আঁকার মাধ্যমে শিশুরা তাদের সৃজনশীলতা প্রকাশ করে। এরপর নাচ-গান ও আবৃত্তির মাধ্যমে মঞ্চ মাতানো হয়। কবি বদরুজ্জামান আলমগীর এবং শিশুসাহিত্যিক আশিক মুস্তাফার উপস্থিতিতে সৃজনশীল লেখালেখি পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বস্তুত নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা শুধু বই বিক্রয়-ক্রয়ের একটি জায়গা নয়, এটি বাঙালিদের মিলনের আড্ডাঘর, যেখানে সংস্কৃতি ও সাহিত্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। শিশুসাহিত্যের প্রতিযোগিতা, লেখকের সাক্ষাৎকার, পাঠচক্র এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন দর্শকদের মনোজ্ঞ সময়ে যুক্ত করে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করা এবং তাদের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যচর্চায় আগ্রহী করে তোলাই ছিল মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য। অতএব, ৩৪তম নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি বাঙালিদের অগাধ আকর্ষণ ও ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ প্রমাণিত হয়েছে। ভবিষ্যতে এই মেলার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা এবং আরও সমৃদ্ধ করে তোলা প্রয়োজন, যাতে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্ববাসীর কাছে অনায়াসে পৌঁছাতে      পারে। v

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল অন ষ ঠ ন র প র ণবন ত ন উইয়র ক অন ষ ঠ ত প রফর ম বইম ল র উপস থ ত প রজন ম প রক শ প রব স

এছাড়াও পড়ুন:

এপস্টেইন–কাণ্ডে নিজেকে বাঁচাতেই কি বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করলেন ট্রাম্প

যৌন নিপীড়নকারী কুখ্যাত মার্কিন ধনকুবের জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের কী সম্পর্ক ছিল, তা নিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধানদের তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর আহ্বানের পর মার্কিন বিচার বিভাগ ক্লিনটনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।

প্রয়াত এপস্টেইনের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন ক্রমেই বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দিতেই গতকাল শুক্রবার তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধানদের প্রতি এ আহ্বান জানান বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ট্রাম্প বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান জে পি মরগান চেজ এবং হার্ভার্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ল্যারি সামারসের বিরুদ্ধেও বিচার বিভাগ ও এফবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। ল্যারি সামারস ক্লিনটনের অর্থমন্ত্রী ছিলেন।

সম্প্রতি যৌন নিপীড়ন ও নারী পাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত এপস্টেইনের নতুন একগুচ্ছ ই-মেইল প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে একাধিকবার ট্রাম্পের নাম এসেছে। এতে ট্রাম্পের ওপর চাপ বাড়ছে।

এপস্টেইনের প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েল অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের যৌনকাজে সম্পৃক্ত করতেন। ই-মেইলে দেখা গেছে, ট্রাম্প ওই মেয়েদের সম্পর্কে জানতেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প একজন কিশোরীর সঙ্গে তাঁর নিজের বাড়িতে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন প্রকাশিত ই-মেইলগুলো এপস্টেইন পাঠিয়েছিলেন তাঁর সহযোগী ও সাবেক প্রেমিকা গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল এবং ট্রাম্প–ঘনিষ্ঠ লেখক মাইকেল ওলফকে। প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি ওইসব ই–মেইল লিখেছিলেন।

এপস্টেইনের প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েল অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদেরও জোরপূর্বক যৌনকাজে সম্পৃক্ত করতেন। ই–মেইলে দেখা গেছে, ট্রাম্প ওই মেয়েদের সম্পর্কে জানতেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প একজন কিশোরীর সঙ্গে তাঁর নিজের বাড়িতে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন।

শিশুদের যৌন নিপীড়নের দায়ে দোষী সাব্যস্ত ও নারী পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার এপস্টেইন ২০১৯ সালের ১০ আগস্ট নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে কারাবন্দী অবস্থায় আত্মহত্যা করেন। তাঁর প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েলের ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।

এপস্টেইন–কেলেঙ্কারিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অনেক ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম এসেছে।

৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্পের অভিযোগ, ডেমোক্র্যাটরা এপস্টেইন–কেলেঙ্কারিতে তাঁর নাম জড়ানোর ‘ষড়যন্ত্র’ করছে।

শুক্রবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে করে ছুটি কাটাতে ফ্লোরিডা যাওয়ার সময় ট্রাম্প উড়োজাহাজে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তাদের এটা অনেক আগেই ঘোষণা দেওয়া উচিত ছিল। বহু বছর ধরে জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে আমার খুবই খারাপ সম্পর্ক ছিল।’

নথিতে দেখা যাচ্ছে, এই ব্যক্তিরা এবং আরও অনেকে তাঁদের জীবনের একটি বড় অংশ এপস্টেইনের সঙ্গে তাঁর দ্বীপে কাটিয়েছেন।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

এ বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্পকে বারবার এপস্টেইনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।

২০১৯ সালে এপস্টেইনের বিরুদ্ধে যৌনকর্মে নারী পাচারের অভিযোগে হওয়া মামলার বিচার প্রস্তুতি চলছিল। তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিউইয়র্কের একটি কারাগারে রাখা হয়েছিল। কারাগারে নিজের কক্ষ থেকে পরে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এপস্টেইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এমন একটি যৌন চক্র চালাতেন, যেখানে কিশোরী মেয়েদের যৌনকর্মের জন্য সমাজের ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে পাঠানো হতো।

আরও পড়ুনজেফরি এপস্টেইনের ব্যক্তিগত ইমেইলে একাধিকবার ট্রাম্পের নাম১২ নভেম্বর ২০২৫

ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি ও এফবিআইকে জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে বিল ক্লিনটন, ল্যারি সামারস, রেইড হফম্যান, জে পি মরগ্যান চেজ এবং আরও অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক ও জড়িত থাকার বিষয়টি তদন্ত করার জন্য অনুরোধ করবেন।

ট্রাম্প আরও লিখেছেন, ‘নথিতে দেখা যাচ্ছে, এই ব্যক্তিরা এবং আরও অনেকে তাঁদের জীবনের একটি বড় অংশ এপস্টেইনের সঙ্গে তাঁর দ্বীপে কাটিয়েছেন।’

আরও পড়ুনএকই নারীর সঙ্গে ট্রাম্প ও যৌন নিপীড়ক এপস্টেইনের সম্পর্ক ছিল১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এপস্টেইন–কাণ্ডে নিজেকে বাঁচাতেই কি বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করলেন ট্রাম্প
  • মামদানির প্রশাসনে কাজ করতে ৫০ হাজার আবেদন