মামদানির প্রশাসনে কাজ করতে ৫০ হাজার আবেদন
Published: 15th, November 2025 GMT
নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির প্রশাসনে চাকরির জন্য ৫০ হাজারের বেশি মানুষ আবেদন করেছেন। মামদানির ট্রানজিশন দল জানিয়েছে, তাদের চাকরির পোর্টালের মাধ্যমে ৫০ হাজারের বেশি চাকরিপ্রার্থী মামদানির সঙ্গে কাজের জন্য এ আবেদন করেন।
মামদানি এক লিখিত বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আবেদনকারীর বিশাল সংখ্যা এই আন্দোলনের মধ্যকার উদ্দীপনাকেই তুলে ধরে। এটি এমন একটি আন্দোলন যা মানুষকে বিশ্বাস করিয়েছে যে সরকার কর্মজীবী মানুষের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে পারে। এটি নিউইয়র্কের মানুষের গড়ে তোলা একটি আন্দোলন। আমাদের প্রশাসন তার প্রতিফলন দেখাবে।’
মামদানির ট্রানজিশন দল জানিয়েছে, তাদের চাকরির পোর্টালে এখনো আবেদনপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে। মামদানি ‘সব ধরনের অভিজ্ঞতা’র মানুষকে আবেদন করতে আহ্বান জানিয়েছেন। অভিজ্ঞ নীতিবিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি যাঁরা একেবারে নতুন কর্মজীবন শুরু করতে যাচ্ছেন, তাঁদেরও খুঁজছেন মামদানি।
ট্রানজিশন দল জানিয়েছে, তাঁরা বিশেষভাবে কমিউনিটি সংগঠক, নীতিবিশেষজ্ঞ, সরকারি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি, কর্মজীবী নিউইয়র্কবাসী, এমনকি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যোগ দিতে ইচ্ছুক এমন মানুষকে খুঁজছেন যারা শুরু থেকেই দ্রুত কাজ শুরু করতে পারবেন।
জোহরান মামদানি নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত মেয়র হিসেবে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণ করবেন ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসে। ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত যে নির্বাচনে তিনি জিতেছেন, তা বিশ্বব্যাপী নজর কেড়েছে। একজন ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট হিসেবে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় শহরটিকে আরও কম ব্যয়বহুল করে তোলার। মামদানির ট্রানজিশন এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এলানা লিওপোল্ড এক বিবৃতিতে বলেছেন, ৫০ হাজার আবেদনকারী প্রমাণ করছেন যে তাঁরা সরকারে সব স্তরে এই কাজটি এগিয়ে নিতে প্রস্তুত। এই আবেদনকারীরাই এই আন্দোলন ও আসন্ন প্রশাসনকে আরও শক্তিশালী করে তুলছেন।
মামদানির প্রশাসন কবে থেকে নতুন পদে নিয়োগ শুরু করবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। আগামী বছরের ১ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন মামদানি।
মামদানির দলে কাজ করতে আগ্রহীদের ব্যাপারে এই খবর এসেছে এমন সময়ে যখন মামদানির ট্রানজিশন কমিটি জানিয়েছে যে তারা ৩০ ঘণ্টার কম সময়ে ৭ হাজারের বেশি দাতার কাছ থেকে ইতিমধ্যেই পাঁচ লাখ ডলারের বেশি তহবিল সংগ্রহ করেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন উইয়র ক ন ম মদ ন ৫০ হ জ র
এছাড়াও পড়ুন:
এপস্টেইন–কাণ্ডে নিজেকে বাঁচাতেই কি বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করলেন ট্রাম্প
যৌন নিপীড়নকারী কুখ্যাত মার্কিন ধনকুবের জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের কী সম্পর্ক ছিল, তা নিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধানদের তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর আহ্বানের পর মার্কিন বিচার বিভাগ ক্লিনটনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
প্রয়াত এপস্টেইনের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন ক্রমেই বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দিতেই গতকাল শুক্রবার তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধানদের প্রতি এ আহ্বান জানান বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান জে পি মরগান চেজ এবং হার্ভার্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ল্যারি সামারসের বিরুদ্ধেও বিচার বিভাগ ও এফবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। ল্যারি সামারস ক্লিনটনের অর্থমন্ত্রী ছিলেন।
সম্প্রতি যৌন নিপীড়ন ও নারী পাচারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত এপস্টেইনের নতুন একগুচ্ছ ই-মেইল প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে একাধিকবার ট্রাম্পের নাম এসেছে। এতে ট্রাম্পের ওপর চাপ বাড়ছে।
এপস্টেইনের প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েল অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের যৌনকাজে সম্পৃক্ত করতেন। ই-মেইলে দেখা গেছে, ট্রাম্প ওই মেয়েদের সম্পর্কে জানতেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প একজন কিশোরীর সঙ্গে তাঁর নিজের বাড়িতে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন।বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন প্রকাশিত ই-মেইলগুলো এপস্টেইন পাঠিয়েছিলেন তাঁর সহযোগী ও সাবেক প্রেমিকা গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল এবং ট্রাম্প–ঘনিষ্ঠ লেখক মাইকেল ওলফকে। প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি ওইসব ই–মেইল লিখেছিলেন।
এপস্টেইনের প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েল অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদেরও জোরপূর্বক যৌনকাজে সম্পৃক্ত করতেন। ই–মেইলে দেখা গেছে, ট্রাম্প ওই মেয়েদের সম্পর্কে জানতেন। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প একজন কিশোরীর সঙ্গে তাঁর নিজের বাড়িতে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটিয়েছেন।
শিশুদের যৌন নিপীড়নের দায়ে দোষী সাব্যস্ত ও নারী পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার এপস্টেইন ২০১৯ সালের ১০ আগস্ট নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে কারাবন্দী অবস্থায় আত্মহত্যা করেন। তাঁর প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েলের ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।
এপস্টেইন–কেলেঙ্কারিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অনেক ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম এসেছে।
৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্পের অভিযোগ, ডেমোক্র্যাটরা এপস্টেইন–কেলেঙ্কারিতে তাঁর নাম জড়ানোর ‘ষড়যন্ত্র’ করছে।
শুক্রবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে করে ছুটি কাটাতে ফ্লোরিডা যাওয়ার সময় ট্রাম্প উড়োজাহাজে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তাদের এটা অনেক আগেই ঘোষণা দেওয়া উচিত ছিল। বহু বছর ধরে জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে আমার খুবই খারাপ সম্পর্ক ছিল।’
নথিতে দেখা যাচ্ছে, এই ব্যক্তিরা এবং আরও অনেকে তাঁদের জীবনের একটি বড় অংশ এপস্টেইনের সঙ্গে তাঁর দ্বীপে কাটিয়েছেন।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টএ বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্পকে বারবার এপস্টেইনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে।
২০১৯ সালে এপস্টেইনের বিরুদ্ধে যৌনকর্মে নারী পাচারের অভিযোগে হওয়া মামলার বিচার প্রস্তুতি চলছিল। তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিউইয়র্কের একটি কারাগারে রাখা হয়েছিল। কারাগারে নিজের কক্ষ থেকে পরে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এপস্টেইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এমন একটি যৌন চক্র চালাতেন, যেখানে কিশোরী মেয়েদের যৌনকর্মের জন্য সমাজের ধনী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে পাঠানো হতো।
আরও পড়ুনজেফরি এপস্টেইনের ব্যক্তিগত ইমেইলে একাধিকবার ট্রাম্পের নাম১২ নভেম্বর ২০২৫ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি ও এফবিআইকে জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে বিল ক্লিনটন, ল্যারি সামারস, রেইড হফম্যান, জে পি মরগ্যান চেজ এবং আরও অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক ও জড়িত থাকার বিষয়টি তদন্ত করার জন্য অনুরোধ করবেন।
ট্রাম্প আরও লিখেছেন, ‘নথিতে দেখা যাচ্ছে, এই ব্যক্তিরা এবং আরও অনেকে তাঁদের জীবনের একটি বড় অংশ এপস্টেইনের সঙ্গে তাঁর দ্বীপে কাটিয়েছেন।’
আরও পড়ুনএকই নারীর সঙ্গে ট্রাম্প ও যৌন নিপীড়ক এপস্টেইনের সম্পর্ক ছিল১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫