কৃষি ক্যাডারের তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) সাবেক উপপরিচালক (প্রশাসন) ও সদ্য মেহেরপুর হর্টিকালচার সেন্টারে বদলিকৃত ড.

মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ, মৌলভীবাজার জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা এবং ডিএই হবিগঞ্জের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. রেজাউল ইসলাম (মুকুল)।

মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর ৩০ (ক), (খ), (গ) ও (ঘ) এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩(খ) ও ৩(ঙ)-এর আওতায় অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮–এর ধারা ৩৯(১) অনুযায়ী তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকালীন তাঁরা বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাসহ আরও কিছু কর্মকর্তা গত ৫ আগস্টের পর থেকে নিজেদের ‘বিএনপিপন্থী পরিচয়’ তুলে ধরে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে জড়ান। ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদের বদলির আদেশকে কেন্দ্র করে তাঁরা রাজধানীর খামারবাড়ি এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি, সংবাদ সম্মেলন এবং এমনকি সড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করেন।

এই কর্মকর্তাদের একাংশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে বিশৃঙ্খল করে তোলে বলে দাবি করেছে মন্ত্রণালয়। এতে সেখানে কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বদলির প্রজ্ঞাপন জারির পরপরই এই কর্মকর্তারা নতুন পদায়ন হওয়া একজনকে নানা হুমকি দেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে খামারবাড়ির অভ্যন্তরে স্বাভাবিক দাপ্তরিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। একাধিক কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলন করে নিজের বদলি নিয়ে প্রকাশ্যে আপত্তি জানান। এতে সরকারি কর্মচারীদের নিরপেক্ষতা ও আচরণবিধি ভঙ্গ হয়েছে বলে মনে করছে মন্ত্রণালয়।

কৃষিসচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য ও দালিলিক প্রমাণ অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলবে। বিশৃঙ্খলা ও অনিয়মে জড়িত অন্য কর্মকর্তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা রক্ষা ও দাফতরিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেউই ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক পরিচয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনাকে অস্থিতিশীল করতে পারেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনা উদাহরণস্বরূপ ব্যবহৃত হবে, যেন ভবিষ্যতে আর কেউ প্রশাসনিক আদেশকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা না করেন।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বরখ স ত কর মকর ত ম হ ম মদ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বাড্ডায় মন্দিরে দায়িত্বরত পুলিশের গুলি চুরি, ওসি প্রত্যাহার ও ৭ পুলিশ বরখাস্ত

রাজধানীর বাড্ডায় একটি মন্দিরে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ৩০টি গুলি চুরির ঘটনায় বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে থানার একজন উপপরিদর্শক (এসআই), একজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও পাঁচজন কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একাধিক সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ডিএমপির গুলশান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাড্ডার নিমতলীর শ্রীশ্রী মহাদেব আশ্রম ও কালীমন্দিরে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের জন্য মন্দিরের সীমানাপ্রাচীরের মধ্যে থাকা একটি নির্মাণাধীন ভবনের দোতলায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে মঙ্গলবার ভোররাত সাড়ে চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটার মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা চারজন পুলিশ সদস্য ও তিনজন আনসার সদস্যের পাশ থেকে তাঁদের ব্যবহৃত চারটি ব্যাগ, দুটি মানিব্যাগ ও তিনটি মুঠোফোন চুরি হয়। এর মধ্যে একটি ব্যাগে শটগানের ৩০টি গুলি ছিল। পরে সকাল পৌনে ১০টায় পুলিশ মণ্ডপের পাশের একটি জায়গা থেকে চুরি হওয়া গুলিগুলো অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দায়িত্বে অবহেলার কারণে একজন উপপরিদর্শক, একজন সহকারী উপপরিদর্শক এবং পাঁচজন কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে ওসি প্রত্যাহারের অফিস আদেশ এখনো পাইনি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাড্ডা থানার নতুন ওসি হাবিবুর রহমান
  • রেললাইনে বিকল যাত্রীবাহী অটোরিকশা, ট্রেনের ধাক্কায় মা-মেয়ে নিহত
  • বাড্ডায় মন্দিরে দায়িত্বরত পুলিশের গুলি চুরি, ওসি প্রত্যাহার ও ৭ পুলিশ বরখাস্ত