মোশাররফ করিম–জয়া আহসানদের সাজানোই তাঁর পেশা, পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
Published: 28th, June 2025 GMT
মানিক হোসেনের বয়স তখন সবে ১৩ বছর। বাবাকে হারিয়ে দিশাহারা অবস্থা। পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়ে কাঁধে। কিন্তু গ্রামে রোজগারের তেমন পথ নেই। সেই সময় আরও বিপদে ফেলল ’৮৮–এর ভয়াবহ বন্যা। উপায়ান্তর না পেয়ে একদিন করিমগঞ্জের বাড়ি থেকে ঢাকায় চলে এলেন মানিক।
ঢাকায় আসার অন্য উদ্দেশ্যও ছিল। তাঁদের গ্রামেই ইলিয়াস কাঞ্চনের বাড়ি। নায়কের সঙ্গে দেখা করে যদি কোনো কাজের ব্যবস্থা করা যায়। একে-ওকে ধরে নায়কের সঙ্গে দেখাও হলো। মানিক বলেন, ‘ভয়ে আমি কথাই বলতে পারছিলাম না। পরে অবশ্য বলে ফেলি আমাকে যেন শুটিংয়ে কোনো কাজের ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু ভাই আমাকে বললেন, গ্রামে ফিরে পড়াশোনা কর। শুনে আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল।’
এফডিসিতে কাজ করার স্বপ্নটাই ভেস্তে গেল। তবে হাল ছাড়লেন না মানিক। এফডিসির গেটেই ঘুরতে থাকলেন। এদিকে সঙ্গে আনা সামান্য টাকাও শেষ। ঢাকায় থাকা-খাওয়ার কোনো জায়গা নেই। নিউমার্কেটে একটি দোকানে কাজ নিলেন। মন কিন্তু পড়ে থাকল এফডিসিতে। প্রায় দিনই গেটে আসেন। এভাবেই একদিন মামা সম্পর্কের একজনের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। প্রোডাকশন ম্যানেজারের কাজ করেন এই মামা। তাঁর সহযোগিতায় রূপসজ্জাকর আবদুল মান্নানের সহকারীর কাজ পান মানিক হোসেন। চিত্রনায়ক মান্নার সব সিনেমায় রূপসজ্জাকরের কাজ করেন তখন মান্নান। প্রায় পাঁচ বছর তাঁর সঙ্গে থেকে কাজ শেখেন মানিক।
মোশাররফ করিমের সঙ্গে মানিক হোসেন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী নির্বাচন হবে মাইনাস আওয়ামী লীগ: অলি আহমদ
আওয়ামী লীগ চিরদিনের জন্য বিতাড়িত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন মাইনাস আওয়ামী লীগ হবে। এখন একমাত্র লক্ষ্য হলো সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, নট ইনক্লুসিভ। দেশদ্রোহীদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। ইনক্লুসিভ মানে হলো দেশদ্রোহীদেরও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মগবাজারের এলডিপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন অলি আহমদ।
বর্তমান সরকার সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী আবু হোসেন সরকারের মতো কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন অলি আহমদ। তিনি বলেন, নিগৃহীত নেতা–কর্মীরা বিগত এক বছরে যেসব মামলা করেছেন, সেগুলোর সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে নীরব ভূমিকা পালন করা হচ্ছে। এভাবে একটা সরকার চলতে পারে না। এটা হলো আবু হোসেন সরকার। ১৯৫৮ সালে আবু হোসেন সরকারে সকালে একজন প্রধানমন্ত্রী, বিকেলে একজন প্রধানমন্ত্রী হতো। বর্তমান সরকারও আবু হোসেন সরকারের মতো কাজ করছে, এভাবে না থেকে জনগণের সরকারের মতো কাজ করুন।
অলি আহমদ বলেন, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া মিথ্যা মামলা এখনো পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়নি। আইন উপদেষ্টাকে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সমগ্র দেশে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে উল্লেখ করে অলি আহমদ বলেন, কিছু কিছু মন্ত্রণালয় দেউলিয়াপনায় ভুগছে। কারণ, এখনো স্বৈরাচারী সরকারের মদদপুষ্ট অনেক কর্মকর্তা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঘাপটি মেরে বসে আছেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে দেশদ্রোহীদের গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধার ও শাস্তির ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়ে অলি আহমদ বলেন, অন্যথায় কখনো সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ, শেখ হাসিনা ভারতে বসে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছেন।
নির্বাচনের আগে লটারির মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের বদলি করার প্রসঙ্গে অলি আহমদ বলেন, মনে হয় অনেকে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন। বদলির জন্য লটারি কোনো সমাধান হতে পারে না। বরং বদলি করা হবে নির্দিষ্ট এলাকার গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে। লক্ষ্য হওয়া উচিত অস্ত্রধারী এবং গুন্ডারা যেন নির্বাচন প্রভাবিত করতে না পারেন।
অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুততম সময়ে দুর্নীতিবাজ ও দেশদ্রোহীদের খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়ে অলি আহমদ বলেন, তাদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে। যারা স্বৈরাচারদের সাহায্য করবে, তারা পরাজিত হবে এবং ভারতের দালাল হিসেবে চিহ্নিত হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ফার্মেসিগুলোতে বিভিন্ন ধরনের জরুরি ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন অলি আহমদ। তিনি বলেন, দেশে সঠিক চিকিৎসাও নেই। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের অবস্থা কী হবে, কোথায় যাবেন তাঁরা? এর সমাধান বা কোথায়? এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম তালুকদার, চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী, নেয়ামুল বশির, আওরঙ্গজেব বেলাল, হামিদুর রহমান খান, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহে আলম চৌধুরী প্রমুখ।