বিদেশ থেকে ফিরে আমের বাগান, সুদিন ফিরেছে কামালের
Published: 29th, June 2025 GMT
পাহাড়ের টিলায় ছোট ছোট গাছে ঝুলছে আম। কোথাও ডালে ঝুলে থাকা আম প্রায় মাটি ছুঁয়েছে। কিছু আম ‘ফ্রুট ব্যাগে’ মোড়ানো। আম্রপালি, হাঁড়িভাঙা, হিমসাগর, সূর্যডিম, কিউজাইসহ ১৩টি জাতের আম রয়েছে বাগানে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের জোড়আমতলে পাহাড়ি এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে এই আমের বাগান। বাগানটি স্থানীয় উদ্যোক্তা কামাল উদ্দিনের।
জীবিকার তাগিদে প্রায় ১৫ বছর বিদেশে ছিলেন কামাল উদ্দিন। এরপর দেশে ফিরে তিনি হয়ে ওঠেন কৃষি উদ্যোক্তা। আর তাতেই সুদিন ফিরেছে তাঁর। গত শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচজন শ্রমিকের সঙ্গে আমবাগানে কাজ করছেন কামাল উদ্দিন। জানালেন, এরই মধ্যে কিছু আম বিক্রি করেছেন, কিছু আম বিক্রির উপযোগী হচ্ছে। মৌসুমের শুরু থেকে আমের ভালো দাম পাচ্ছেন এবং পাইকারের বাগান থেকেই আম কিনে নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
কামাল উদ্দিন জানান, ২০০০ সালে জীবিকার তাগিদে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যান তিনি। সেখানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। ২০১৫ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। তিনি বলেন, ‘শুরুতে নিজেদের পাহাড়ি জমির কিছু অংশে পেঁপেগাছ লাগাই, কিছু অংশে শিম চাষ করি। এরপর ধীরে ধীরে চাষাবাদ বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে ২০২০ সালে আমবাগান গড়ে তুলি’।
কামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সাত একর জমিতে আমের বাগান তাঁর। পরিকল্পিতভাবে তিনি আমের চারা লাগিয়েছেন। বাগানের শুরুতে নাগ ফজলি, হিমসাগর ও গুটি আমের চারা লাগিয়েছেন। এই আমগুলো মৌসুমের শুরুতেই বাজারে আসে। এরপর লাগিয়েছেন আম্রপালি জাতের আম। বাগানের শেষের দিকে লাগিয়েছেন আশ্বিনী জাতের আম। এই আম মৌসুমের শেষেই আসে। তাঁর বাগানে ২ হাজার ৫০০ আমগাছ রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ২০০ আম্রপালির গাছ লাগিয়েছেন।
নওগাঁ থেকে আমের চারা এনে বাগান শুরু করেন জানিয়ে তিনি বলেন, তিন বছরের মাথায় আমের ফলন আসতে শুরু করে। এ বছর থেকেই পুরোদমে আম পাওয়া যাচ্ছে। এবার বাগানে দুই লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি পাঁচ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছেন। আরও পাঁচ লাখ টাকার আম গাছে রয়েছে। ধীরে ধীরে উৎপাদন বাড়বে বলে তাঁর আশা।
টিলায় রোপণ করা গাছে ঝুলছে আম। কিছু আম ‘ফ্রুট ব্যাগে’ মোড়ানো হয়েছে। গত শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের জোড়আমতল পাহাড়ে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এবার অর্পিতাদের সাফ মিশন, অভিজ্ঞরাই ভরসা
সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে আগামীকাল ভুটান যাবে বাংলাদেশ দল। তার আগে আজ বিকেলে এই টুর্নামেন্টের জন্য ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
গত বছর অনূর্ধ্ব-১৬ সাফে খেলা ১৫ জনই আছেন এই দলে। নতুন আটজন হলেন— রিয়া, প্রতিমা রানী, জবা রানী, সুরভী রানী, মামনী চাকমা, ঈশিতা ত্রিপুরা, পূর্ণিমা মারমা, আমেনা খাতুন। দলটির অধিনায়ক অর্পিতা বিশ্বাস।
এ বছর এখনো কোনো ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল দল। ২০২৪ সালে সাফে চার ম্যাচের চারটিতে জেতে তারা। সেই প্রতিযোগিতায় ভারতের সঙ্গে খেলা ফাইনালই মেয়েদের সর্বশেষ ম্যাচ।
জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলার গত ১১ আগস্ট লাওসে অনূর্ধ্ব-২০ দলের খেলা শেষে ছুটিতে গেছেন। আগস্টের বাকি সময় তিনি ছুটিতে থাকবেন। কোচ হিসেবে অনূর্ধ্ব-১৭ দলের সঙ্গে ভুটান যাবেন মাহবুবুর রহমান।
বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপাল—এই চার দেশ নিয়ে ২০ থেকে ৩১ আগস্ট থিম্পুতে হবে এই টুর্নামেন্ট। রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে একদল অন্য দলের সঙ্গে দুটি করে ম্যাচ খেলবে। এরপর সর্বোচ্চ পয়েন্টধারীর হাতে উঠবে ট্রফি।
২৩ সদস্যের বাংলাদেশ স্কোয়াড:ইয়ারজান বেগম, মেঘলা রানী, মমিতা খাতুন, শিউলি রায়, তানিয়া আক্তার, অর্পিতা বিশ্বাস (অধিনায়ক), ফাতেমা আক্তার, উম্মে কুলসুম, আরিফা আক্তার, মোসাম্মত আলমিনা, রেশমি আক্তার, থুইনুয়া মারমা, সুরভী আকন্দ, ক্রানুচিং মারমা, রিয়া, আলফি আক্তার, প্রতিমা রানী, জবা রানী, সুরভী রানী, মামনি চাকমা, ঈশিতা ত্রিপুরা, পূর্ণিমা মারমা ও আমেনা খাতুন।২০ আগস্ট ভুটান ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করবে বাংলাদেশ। একদিন বিরতি দিয়ে ২২ আগস্ট দলটির প্রতিপক্ষ ভারত। ২৪ ও ২৭ আগস্ট পরপর দুই ম্যাচে নেপালকে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ। ২৯ আগস্ট ভুটান এবং ৩১ আগস্ট আবার ভারতের মুখোমুখি হবে মেয়েরা। সবগুলো ম্যাচ থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে।
এই টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। সাতবার অংশ নিয়ে দুবার ট্রফি জিতেছে তাঁরা। বাংলাদেশের সমান দুবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত।
এ বছর অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ের টুর্নামেন্ট হলেও ২০১৭ সালে প্রথম আসর থেকে চতুর্থ আসর পর্যন্ত হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৫ পর্যায়ে। এরপর ২০২৩ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ ও ২০২৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সাফের এই প্রতিযোগিতা।