এনবিআর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্তে সরকারের হস্তক্ষেপ নেই: অর্থ উপদেষ্টা
Published: 30th, June 2025 GMT
এনবিআরের আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত সম্পর্কে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দুদকের কার্যক্রমে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো হস্তক্ষেপ নেই।
আজ সচিবালয়ে ৭২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের নতুন বাজেট ব্যবস্থা ঘোষণা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। অর্থসচিব মো.
সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন, অতীতেও দেখা গেছে, সরকার দুদককে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। এনবিআরের আন্দোলনের মধ্যে ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত কি আগের সরকারের ধারাবাহিকতায় করা হয়েছে? এই প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় না; বরং আগে যাঁরা গভর্নর ছিলেন, তাঁরা অনেক সময় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। এখন সেই ধারা বদলেছে।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘কেউ চাইলে ভাবতে পারেন, এই সময়ে অনুসন্ধান শুরু হলো কেন। তবে এনবিআর ও বন্দর বন্ধ–সংক্রান্ত সমস্যার কারণে প্রতিদিন আমার কাছে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ নিয়ে এসেছেন—হিসাব বন্ধ, বড় ক্ষতি হয়েছে ইত্যাদি। এটা কিন্তু একদম গ্রহণযোগ্য নয়।’
জাতীয় স্বার্থ–সংক্রান্ত সেবা বন্ধ করা চলে না উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এনবিআর হোক বা বন্দর, এসব তো ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। এটা সরকারি প্রতিষ্ঠান, যেখান থেকে রাজস্ব আসে। আপনি যদি একতরফাভাবে একটি সেবা বন্ধ করে দেন, সেটা জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী।’
তবে এনবিআরের সমস্যার সমাধান হওয়ায় সরকার খুশি। এখন যৌক্তিকভাবে সমাধানের পথ বেরোচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সালেহউদ্দিন আহমেদ।
আন্দোলনে যুক্ত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভালো করে কাজ করুন। পক্ষপাত বা ভয় ছাড়া কাজ করতে হবে। জনসেবা যেন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মাধ্যমে হয়, সেটা হলে কারও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কেউ বিচ্যুতি ঘটালে জবাবদিহি করতে হবে, এটাই স্বাভাবিক।’
ঘুষের বিনিময়ে করদাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। তাঁরা হলেন আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য এ কে এম বদিউল আলম; নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার; অতিরিক্ত কমিশনার মির্জা আশিক রানা; অতিরিক্ত কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা; অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুণ্ডু ও যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান।
এনবিআর সূত্র প্রথম আলোকে বলছে, অনুসন্ধানের মুখে পড়া অন্তত পাঁচ কর্মকর্তা এনবিআরের আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি। এই ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এত দিন এনবিআরে আন্দোলন হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত সরক র র তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ইমিউনিটি বাড়াবেন যেভাবে
মৌসুম সামান্য রদবদলেই হাঁচি-কাশি শুরু হয়ে যায়? সম্ভবত দুর্বল ইমিউনিটিই এর কারণ। অনেকেই ভাবেন, ভালো ইমিউনিটি জিনগত ব্যাপার। জিন ছাড়াও এমন অনেক ফ্যাক্টর রয়েছে, যেগুলো ইমিউনিটির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। স্ট্রেস, পুষ্টি, এক্সারসাইজ় এবং মেডিটেশন তার মধ্যে অন্যতম। ইমিউনিটি আসলে শরীরের ডিফেন্স সিস্টেম; যা বিভিন্ন ধরনের বাহ্যিক টক্সিন, কেমিক্যালস, ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস থেকে শরীরকে সুরক্ষা দেয়। তবে অসুস্থ হওয়া মানে এই নয় যে, আপনার লাইফস্টাইলে কোনো ত্রুটি রয়ে গেছে। চূড়ান্ত স্বাস্থ্যসচেতন মানুষও অসুস্থ হতে পারেন। তবে ঘন ঘন অসুস্থ হওয়া অপুষ্টি এবং দুর্বল ইমিউনিটির পরিচায়ক। ইমিউনিটি বাড়াতে তাই নজর দিন বিশেষ কিছু দিকে।
পুষ্টি হোক শরীরের অস্ত্র
আমাদের শরীরে যে ইমিউন বডিস রয়েছে, তারা মূলত প্রোটিন দিয়ে তৈরি। সুতরাং, ভালো ইমিউনিটির জন্য শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন থাকা জরুরি। ডেয়ারি প্রডাক্ট, লিন মিট, মাছ এবং ডাল প্রোটিনের অন্যতম উৎস। ডেয়ারি প্রডাক্টের মধ্যেও টকদই এবং ইয়োগার্ট ইমিউনিটি বুস্টার হিসেবে ভালো। এছাড়া প্লান্ট ফুডসও ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, ক্যান্সার প্রতিরোধে নিরামিষাশীদের শরীরের শ্বেতরক্তকণিকা আমিষাশীদের চেয়ে বেশি কার্যকরী। নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসও এক্ষেত্রে জরুরি ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন সি, ই, ক্যারোটিনয়েডস, জিঙ্ক, আয়রন, কপার এবং সেলেনিয়াম তার মধ্যে অন্যতম। ভিটামিন সি-এর জন্য কাঁচালঙ্কা, পেয়ারা, টোম্যাটো, খরমুজ; ভিটামিন ই-এর জন্য চিনাবাদাম, ভেজিটেবল অয়েল, কাজু ইত্যাদি খেতে পারেন। এই দুই প্রকার ভিটামিনের সঙ্গে ক্যারোটিনয়েডস খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো। তরমুজ, সবুজ শাকসবজি, টোম্যাটো, আম ইত্যাদি শরীরে ন্যাচারাল কিলার সেল এবং টি-লিম্ফোসাইটের পরিমাণ বাড়িয়ে ইমিউনিটি আরও শক্তিশালী করে তোলে। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে হুইট ব্র্যান, জোয়ার, বাজরা, শেলফিশ, বাদাম, বাদামের তেল খেলে সর্দি-কাশি থেকেও সুরক্ষা পাবেন। তবে অনেক সময়ই খাবারের গুণগত মানের জন্য শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না। এর সঙ্গে কোনো মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট নিতে পারলে ভালো।
ন্যাচারাল ইমিউন বুস্টার
‘সুপারফুডস’ প্রতিদিন ডায়েটে রাখলে সুস্থ থাকাও সহজ হবে। আমাদের চারপাশে যে সমস্ত সুপারফুডস রয়েছে, রসুন তার মধ্যে অন্যতম। এছাড়া মৌরি, হলুদ, আদা, লবঙ্গ এবং দারচিনিও ইনফেকশনের বিরুদ্ধে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। ঘন ঘন চা-কফির অভ্যাস কমিয়ে গ্রিন-টি বেছে নিতে পারেন। এতে থাকা ক্যাটেকিনসের অ্যান্টি-কারসিনোজেন হিসেবে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। মনে রাখবেন, মজবুত ইমিউনিটি গড়ে তুলতে অনবরত শরীরের খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
জীবনযাপনের রদবদল
শরীরকে আপনি যেভাবে ট্রিট করবেন, তার ওপর নির্ভর করবে আপনার সুস্থতা। বিশ্রামের অভাব, অনিয়মিত বা অপর্যাপ্ত শরীরচর্চা, ঘুমের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করলে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে ইমিউনিটিতেও। জীবনধারার এই দিকগুলোয় তাই একটু নজর দিন। পরিমিত ঘুম এবং বিশ্রাম শরীরের একান্ত প্রয়োজন। দিনে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। স্ট্রেস কমাতে মেডিটেশন ট্রাই করতে পারেন।