কুমিল্লায় বাড়িতে হামলা করে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা
Published: 3rd, July 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় মোবাইল চুরিকে কেন্দ্র করে একটি বাড়িতে হামলা করে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার কড়ইবাড়ী গ্রামে তাদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহতরা হলেন, রুবি বেগম (৫৮), তার ছেলে রাসেল (৩৫) ও মেয়ে জোনাকি আক্তার (২৭)। রাসেলের ভাবি রুমা আক্তার গুরুতর আহত হয়ে মুরাদনগর উপজেলা কমপ্লেক্স হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, নিহত রুবি বেগমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক কারবারসহ বিভিন্ন অভিযোগ অর্ধশতাধিক মামলা রয়েছে। তার পরিবার দীর্ঘ দিন ধরে মাদক কারবার, চাঁদাবাজি ও নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। সম্প্রতি এলাকায় মোবাইল চুরির ঘটনা নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এতে রুবি বেগম ও তার ছেলে রাসেল কয়েকজনকে মারধর করেন। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে শতাধিক গ্রামবাসী লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের বাড়িতে হামলা চালায়। এলোপাতাড়ি মারধরের একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে রুবি, রাসেল ও জোনাকি মারা যায়।
আরো পড়ুন:
প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে প্রাণ গেল স্কুলছাত্রের
গাজায় ‘গণহত্যার অর্থনীতি’ থেকে লাভবান মাইক্রোসফট-অ্যামাজনসহ যত কোম্পানি
নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার বলেন, “আমাদের দোকানের এক কর্মচারী কয়েক দিন আগে বশির মিয়ার বাড়ি থেকে মোবাইল চুরি করে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার জের ধরে বশির ও তার লোকজন আমাদের কর্মচারীদের আটকে রেখে নির্যাতন করেন। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার সালিশে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। কিছু বুঝে ওঠার আগে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমার স্বামী, শাশুড়ি ও ননদকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।’’ তিনি এ হত্যার বিচার দাবি করেন।
মীম আক্তার বলেন, ‘‘আমার শাশুড়ির পরিবার তিন বছর আগে মাদক কারবারি ছেড়ে দিয়েছেন।’’
স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী ও শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “চুরি বা মাদক— যে অভিযোগই থাকুক, কোনোভাবে কাউকে এভাবে পিটিয়ে মারা যায় না। এটা কেবল আইনহীনতা নয় বরং মানবতাবিরোধী আচরণ।”
বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, “নিহত রুবি বেগমের বিরুদ্ধে ৮২টি মামলা রয়েছে। এই পরিবার মাদক কারবারে জড়িত। সেই ক্ষোভ থেকে গ্রামবাসী এ হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারা এতে জড়িত তা শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।”
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) নজির আহমেদ খান বলেন, “নিহতদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও কাউকে হত্যার অধিকার কারো নেই। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। ইতোমধ্যে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।”
এ ঘটনার পর কড়ইবাড়ী গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অনেকে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। নিহতদের স্বজনরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ঢাকা/রুবেল/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য পর ব র
এছাড়াও পড়ুন:
মুরাদনগরে তিন শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি