উচ্চ ও নিম্ন আদালতকে ‘ফ্যাসিস্টমুক্ত’ করতে হবে: সালাহউদ্দিন আহমদ
Published: 3rd, July 2025 GMT
উচ্চ ও নিম্ন আদালতকে ‘ফ্যাসিস্টমুক্ত’ করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, ‘উচ্চ ও নিম্ন আদালতে ফ্যাসিস্টদের বহাল রেখে যতই আমরা স্বাধীন বিচারব্যবস্থা করি না কেন, এর সুবিধাভোগী এরাই হবে। আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য, ফ্যাসিস্টমুক্ত হতে হবে উচ্চ ও নিম্ন আদালত। তারপর স্বাধীন বিচারব্যবস্থা সত্যিকার অর্থে কার্যকর হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের নবম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলে সালাহউদ্দিন আহমদ। বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, সাংবাদিকসহ সমাজের সমস্ত শ্রেণি–পেশার মানুষকে তারা অবৈধভাবে সাজা দিয়েছে। সেই ফ্যাসিস্টদেরকে যেন আমরা রক্ষা না করি, আমরা চাই উচ্চ ও নিম্ন আদালতে যাতে ফ্যাসিস্টের দোসররা না থাকে।’
এ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘এখন যাদের বিরুদ্ধে বদলি, বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, এটা যথেষ্ট নয়। তাদেরকে অপরাধের জন্য নির্দিষ্ট করে শুধু চাকরি গেলে হবে না, অপরাধের জন্য তাদের বিচারও করতে হবে। যদি আমরা সেটি নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে সত্যিকার অর্থে স্বাধীন বিচারব্যবস্থা কার্যকর হবে। তা ছাড়া উচ্চ ও নিম্ন আদালতে ফ্যাসিস্টদেরকে বহাল রেখে যতই আমরা স্বাধীন বিচারব্যবস্থা করি না কেন, সেটার সুবিধা এরাই ভোগ করবে। এদের মাধ্যমে যদি বিচারব্যবস্থা কার্যকর হয়, যতই আমরা কড়া আইন করি, এটার অপব্যবহার তারাই করবে এবং এখনই করছে।’
জেলা পর্যায় থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত সব আদালত থেকে ‘অপরাধকারী’ আওয়ামী লীগের লোকজনের জামিন হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। ‘এসব কারা করছে, করছে তো এই ফ্যাসিস্টদের দোসররা,’ বলেন তিনি।
ক্ষমতা বিকেন্দ্রীরকরণের জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়ে একমত জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
বিগত সময়ে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের বিধানের অপপ্রয়োগ দেখতে পেয়েছেন দাবি করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ বড় বড় অপরাধ করা আসামিদেরকে ক্ষমা প্রদর্শনের মাধ্যমে হত্যাযজ্ঞের একটা উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। ফলে দেশে এটার মাধ্যমে আলোচনায় আসছে এই ক্ষমতাটা রাষ্ট্রপতির হাতে এভাবে অবারিত থাকা উচিত কি না।.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ল হউদ দ ন আহমদ ব যবস থ অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব