দু’পক্ষের মারামারি থামাতে গিয়ে যুবদল নেতার মৃত্যু
Published: 4th, July 2025 GMT
গ্রামের দুই কিশোর গ্রুপের মধ্যে চলছিল মারামারি। তাদের থামাতে গিয়েছিলেন যুবদল নেতা মোহাম্মদ আলমগীর (৪৩)। দু’পক্ষের ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামের রাউজানের উরকিরচর ইউনিয়নের হারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আলমগীর উরকিরচর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হারপাড়া গ্রামে মুরগি বিক্রির দোকান করেন আলমগীর। তাঁর দোকানের সামনেই কিশোরদের দুটি পক্ষের মধ্যে মারামারি চলছিল। ১০-১২ জন মারামারিতে লিপ্ত ছিল। সেখানে গিয়ে আলমগীর দু’পক্ষের মাঝে সমঝোতার চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তির মাঝে এক পর্যায়ে বুকে ব্যথা অনুভব হলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
স্থানীয় বাসিন্দা কবির সওদাগর দাবি করেন, দু’পক্ষের ধস্তাধস্তির মাঝে তাঁর বুকে ঘুসি লাগার পর তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাঁকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আলমগীরের ছোট ভাই মুহাম্মদ রফিক দাবি করেন, তাঁর ভাই ঘুসির আঘাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন ও পরে মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া সমকালকে বলেন, দুই কিশোর গ্রুপ মারামারি করছিল। তাদের থামাতে যান আলমগীর। এ সময় দু’পক্ষের ধস্তাধস্তির মাঝে ধাক্কায় তিনি মাটিতে পড়ে যান। হৃদরোগের কারণে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নিহত ব্যক্তির পরিবারেরও কোনো অভিযোগ নেই। তাই আমরা এটাকে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে মনে করছি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য বদল ন ত ধস ত ধস ত র আলমগ র
এছাড়াও পড়ুন:
আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
খুলনা মহানগরীর লবণচরার বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার ঘের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ (২৪) হত্যা মামলার বিচার কাজ এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে আসামিরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে বাদীর অপর ছেলেকে হত্যার ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে।
এ অবস্থায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা এবং আসামিদের অপতৎপরতা থেকে রক্ষা করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন নিহত বিদ্যুতের মা জাহানারা বেগম। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আরো পড়ুন:
কেএমপির ৮ থানার ওসি রদবদল
জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: ইইউ রাষ্ট্রদূত
লিখিত বক্তব্যে জাহানারা বেগম বলেন, “২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ছেলে মো. আলমগীর হোসেন ওরফে বিদ্যুৎকে (২৪) নগরীর খানজাহান আলী (র.) সেতু এলাকায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর ৭ ডিসেম্বর আমি বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা করি (মামল নং- ০৩)। মামলাটি বর্তমানে খুলনা মহানগর দায়রা জজ (মামলা নং: ৪৪৯/১৫) বিচারাধীন আছে।”
“মামলায় লবণচরা বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার নাজিম খলিফার দুই ছেলে আরমান খলিফা ও আরিফ খলিফা, লবণচরা মোহাম্মদীয়া পাড়া মসজিদ এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে হারুন হাওলাদার, লবণচরা ইব্রাহীমিয়া মাদরাসা রোড এলাকার হামিদ মিস্ত্রীর ছেলে মো. সিরাজ এবং লবণচরা মোক্তার হোসেন রোড এলাকার হযরত আলী ফকিরের ছেলে বাদল ফকিরকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই সব আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলাও রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।
জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে হত্যা করেও সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি। উপরন্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা এখন মামলা তুলে নিতে আমি ও আমার এক মাত্র সন্তান এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবননাশসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার সাধারণ ডায়রি (জিডি) করার ফলে হত্যাকারী-সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তারা আমি ও আমার বড় ছেলেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”
তিনি আরো বলেন, “হত্যাকারী-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুলনা ও লবণচরা থানায় চারটি সাধারণ ডায়রি করেছি। সর্বশেষ গত ৩ মার্চও আমি লবণচরা থানায় জিডি করি। কারণ ২ মার্চ দুপুরে মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আরমান তার ভাই আরিফ এবং অপর আসামি জুয়েল শেখ, হারুন হাওলাদার, সিরাজ ও বাদল ফকিরসহ আরো অনেকে আমার বাসার সামনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমাকে ও আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লবকেও হত্যা করবেন বলেও হুমকি দেয়। এ ছাড়া, একই ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে আমি ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ও ২ মে খুলনা থানায় এবং একই বছরের ৪ মে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লবণচরা থানায় সাধারণ ডায়রি করি।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ