আকুর দায় শোধের পর রিজার্ভ কমে ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে
Published: 8th, July 2025 GMT
এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) প্রায় ২০২ কোটি ডলার পরিশোধের পর ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। আজ মঙ্গলবার গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতিতে রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার।
রেমিট্যান্সে উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণের কারণে জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ বেড়ে ৩১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। গত ২৮ মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। সর্বশেষ ২০২৩ সালের মার্চের শুরুতে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছিল। এরপর ওই মাসের ১৫ তারিখ সর্বোচ্চ ৩১ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার হয়। এছাড়া সব সময়ই ৩১ বিলিয়নের নিচে ছিলো।
গ্রস রিজার্ভ বৃদ্ধির পাশাপাশি আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভ হয় ২৬ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি মেনে হিসাব প্রকাশের পর থেকে যা ছিলো সর্বোচ্চ। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে গ্রস রিজার্ভের পাশাপাশি বিপিএম৬ অনুযায়ী রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
২০২৩ সালের জুনে আইএমএফের হিসাব পদ্ধতিতে রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। আর গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে। সেখান থেকে ধারাবাহিকভাবে কমে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে গত জুলাই শেষে নেমে যায় ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে এখন বাড়ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রিজার্ভ বৃদ্ধির মূল কারণ অর্থ পাচারে কঠোর নিয়ন্ত্রণ। হুন্ডি প্রবণতা কমে যাওয়ায় গত অর্থবছরের প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্স ৩০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের তুলনায়া যা প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি।
আবার আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন উৎস থেকে সরকার ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ কম সুদের ঋণ পেয়েছে। সব মিলিয়ে ডলার বাজার ১২২ থেকে ১২৩ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যা ভূমিকা রাখছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ রস র জ র ভ দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
কালচে হয়ে যাচ্ছে মোগল আমলের লালকেল্লা
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থাপনাগুলোর একটি লালকেল্লা। মোগল আমলে নির্মিত লালচে রঙের দুর্গটি নিমেষেই নজর কাড়ে মানুষের। তবে রূপ হারাচ্ছে দুর্গটি। এর দেয়ালে সৃষ্টি হচ্ছে ‘কালো রঙের আস্তরণ’। গবেষকেরা বলছেন, এই আস্তরণের জন্য দায়ী নয়াদিল্লির তীব্র বায়ুদূষণ।
লালকেল্লা নিয়ে এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গবেষণাটি করেছেন ভারত ও ইতালির গবেষকেরা। গত জুন মাসে বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী হেরিটেজ–এ গবেষণাটি প্রকাশ করা হয়। লালকেল্লার ওপর বায়ুদূষণের প্রভাব নিয়ে এটিই বড় পরিসরে করা প্রথম গবেষণা।
গবেষকেরা বলেছেন, বাতাসের বিভিন্ন দূষণকারী পদার্থ ও দুর্গটির দেয়ালের লাল বেলে পাথরের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া হচ্ছে। এতে দেয়ালের ওপর শূন্য দশমিক শূন্য ৫ থেকে শূন্য দশমিক ৫ মিলিমিটার পুরু কালো আস্তরণ পড়ছে। এখনই যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে দুর্গের দেয়ালে খোদাই করা কারুকাজের ক্ষতি হতে পারে।
বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে একটি নয়াদিল্লি। গবেষণার জন্য ২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শহরটির বায়ুর মান পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হয়। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাতাসে থাকা দূষণ সৃষ্টিকারী অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণা ‘পিএম–২.৫’ ও ‘পিএম–১০’ দেয়ালে এমন দাগ সৃষ্টি করার জন্য দায়ী।
১৭ শতকে লালকেল্লা নির্মাণ করেছিলেন মোগল সম্রাট শাহজাহান। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ভারতের স্বাধীনতার দিন এখান থেকেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। তখন থেকে ভারতের প্রতি স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে ভাষণ দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রীরা।
এর আগে মোগল আমলের আরেক নিদর্শন তাজমহলও দূষণের কবলে পড়ার খবর সামনে আসে। ২০১৮ সালের ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিলেন, বায়ু ও পানিদূষণের কারণে সাদা মার্বেল পাথরের স্থাপনাটি হলুদ ও সবুজাভ–বাদামি রং ধারণ করছে। ১৭ শতকের এই স্থাপনাটি সংরক্ষণ করতে সে সময় উত্তর প্রদেশ সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।