বিয়ের ৩০ বছর পর একসঙ্গে এসএসসি পাস করলেন দম্পতি
Published: 10th, July 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলায় সাংবাদিক দম্পতি মো. কাইসার হামিদ (৫১) ও মোছা. রোকেয়া আক্তার (৪৪) পরিচিত মুখ। এ দম্পতির পাঁচ সন্তান, সবাই পড়াশোনা করছেন। দুজনের বাবা পেশায় শিক্ষক ছিলেন। পরিবারের অন্য সদস্যরাও শিক্ষিত। এসএসসি পাস না করায় তাঁদের মনে দুঃখ ছিল। অদম্য ইচ্ছা আর মানসিক শক্তির জোরে এবার তাঁরা সেই দুঃখ ঘুচিয়েছেন।
কাইসার হামিদ ও রোকেয়া আক্তার এবার নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বিন্নাবাইদ দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষা দেন। দুজনই জিপিএ ৪ দশমিক ১১ পেয়ে পাস করেন। বিয়ের ৩০ বছর পর একসঙ্গে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করায় এ দম্পতিকে অনেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
কাইসার হামিদ দৈনিক নয়াদিগন্ত এবং রোকেয়া আক্তার দৈনিক বুলেটিন পত্রিকার কুলিয়ারচর প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।
কাইসার হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, সক্রিয় সাংবাদিকতার বয়স ৩০ পেরিয়েছে। সমাজ থেকে অনেক ভালো কিছু পেয়েছেন। কেবল কষ্ট ছিল পড়াশোনা নিয়ে। স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই একই কষ্ট। বাইরে গেলে পড়াশোনার প্রসঙ্গ এলে চুপ থাকতেন। অনেকে ইচ্ছা করে খোঁচা দিতেন। এসএসসি পাস না করে সাংবাদিকতা করছেন কীভাবে, অনেকে প্রশ্ন তুলতেন। পরে যেভাবে হোক এসএসসি পাসের পরিকল্পনা করেন। সেই অনুযায়ী ভর্তি হয়ে দুজনে ভালো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দেন।
কাইসার হামিদের বাড়ি কুলিয়ারচরের গোবরিয়া গ্রামে। রোকেয়া জেলার কটিয়াদী উপজেলার দক্ষিণ লোহাজুরী গ্রামের মেয়ে। বিয়ে করেন আজ থেকে ৩০ বছর আগে ১৯৯৪ সালের ১৬ মার্চ। এ দম্পতির পাঁচ সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান নাসরিন সুলতানা ইতিমধ্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। দ্বিতীয় সন্তান জেসমিন সুলতানা স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্রী এবং তৃতীয় সন্তান মাইমুনা পড়ছেন নার্সিং বিষয়ে। ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন নবম এবং আবদুল্লাহ ফাহিম সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
পরীক্ষায় পাস করতে পেরে আনন্দিত রোকেয়া আক্তারের ভাষ্য, ‘অল্প বয়সে বিয়ে হয়। পরে সন্তান। এ কারণে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। এই কষ্ট দুই যুগের অধিক সময় ধরে বয়ে বেড়াতে হয়েছে। আমরা দুজনই কষ্ট দূর করার উপায় খুঁজতাম। এটা বুঝতে পারি, কষ্ট দূর করতে হলে পরীক্ষা দিয়ে পাস করার বিকল্প নেই। সে কারণেই সাহস করে পরীক্ষা দিলাম এবং ফল পেলাম।’
বিলম্বে হলেও মা–বাবা এসএসসি পাস করায় খুশি সন্তানেরাও। দ্বিতীয় সন্তান জেসমিন সুলতানা বলেন, মা–বাবা দুজনই এসএসসি পাস করার বিষয়টি তাঁদের ভাইবোনদের অনেক আনন্দ দিচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
একসঙ্গে কণ্ঠ মেলালেন মা-মেয়ে
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যানসি বাংলা গানের ভুবনে দীর্ঘদিন ধরে আপন দক্ষতায় শ্রোতা মন জয় করে আসছেন। একের পর এক হিট গান উপহার দিয়ে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য স্বীকৃতি। তারই পথ ধরে সংগীতে সম্ভাবনার জানান দিয়েছেন তার কন্যা রোদেলা। এরইমধ্যে তার কণ্ঠে একাধিক গান শ্রোতামহলে প্রশংসিত হয়েছে।
এইবার মা-মেয়ে একসঙ্গে গান গেয়ে হাজির হচ্ছেন নতুন চমক নিয়ে। ‘কেন’ শিরোনামের এই গানটি প্রথমবারের মতো একসঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন তারা। গানটির কথা লিখেছেন ফয়সাল রাব্বিকীন, সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন প্রত্যয় খান। গানটি স্যাড-রোমান্টিক ধাঁচের এবং এর ভিডিওচিত্রেও অংশ নিয়েছেন ন্যানসি ও রোদেলা—দুজনেই।
আগামী ১০ জুলাই গানটি প্রকাশ পাবে রোদেলার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে। গান প্রসঙ্গে ন্যানসি বলেন, “প্রথমে গানটি আমি একাই গাওয়ার কথা ভাবছিলাম। পরে মনে হলো, রোদেলাকে যুক্ত করলে আরও ভালো হবে। তার কণ্ঠে কিছু অংশ গাইয়ে দেখলাম, ভালোই লাগলো। প্রথমবার আমার সঙ্গে মেয়ের গান— গর্বের এবং আবেগের বিষয়।”
রোদেলার নিজের অনুভব প্রকাশ করে বলেন, “মায়ের সঙ্গে গান গাওয়া এক ধরনের দুঃসাহস! তার গায়কী, কণ্ঠের ইউনিকনেস সবারই জানা। কিন্তু তার সাহস ও অনুপ্রেরণাতেই গানটি গেয়েছি।”
ঢাকা/রাহাত//