গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মকস বিলে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো একজন নিখোঁজ রয়েছেন।

যাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে- ঢাকার সাভার উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের হালিম মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম ও গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সুরিচালা গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে শিমুল হোসেন। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন- একই এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান।

কালিয়াকৈর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ইফতেখার হোসেন রায়হান চৌধুরী বলেন, ‘‘শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে নৌকাডুবে তিন বন্ধু নিখোঁজ হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। তবে গতকাল কাউকে পাওয়া যায়নি।’’

আরো পড়ুন:

এখনো নিখোঁজ দুই যুবক, বিলের ধারে স্বজনদের আহাজারি 

আত্রাই নদীতে নৌকা ডুবি, যুবক নিখোঁজ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘শনিবার সকাল ৮টার দিকে রফিকুল ও বিকেলে ৫টার দিকে শিমুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় এখনো একজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাকে উদ্ধারে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে পাঁচ বন্ধু একটি নৌকায় মকস বিলে ঘুরতে যান। এ সময় তীব্র বাতাসে ঢেউয়ের তোড়ে নৌকাটি ডুবে যায়। পরে নৌকায় থাকা সাকিব ও আরাফাত সাঁতরে তীরে উঠলেও নিখোঁজ হয় তিন জন।

খবর পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাদের উদ্ধারে চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন, পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। নিখোঁজ এবং উদ্ধার হওয়া পাঁচজনই চলতি বছর এসএসসি পাস করেছেন।

ঢাকা/রেজাউল/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে ১২৩ ‘চাঁদাবাজের’ তালিকা নিয়ে তোলপাড়

রাজশাহী মহানগর বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের পরিচয়ধারী ১২৩ জন ‘চাঁদাবাজের’ নাম সংবলিত একটি তালিকা রাজশাহীর রাজনৈতিক অঙ্গনে গত কয়েক দিন থেকে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এতে বিএনপি, ছাত্রদল ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, ক্যাডার, সমর্থক থেকে শুরু করে ৪৪ জনের নাম পরিচয় আছে। একইভাবে পতিত আওয়ামী লীগের ২৫ জন ও জামায়াতের ৬ জনের নাম আছে। বাকিগুলোর নাম ঠিকানা দেওয়া আছে কিন্তু কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তাদের সুবিধাবাদী বলা হয়েছে।

এই তালিকার ১৮ জনের নাম সম্প্রতি একজন আবাসন ব্যবসায়ীর দায়ের করা চাঁদাবাজির মামলায় আছে। সেই মামলায় ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাদের প্রধান আসামি করা হয়েছে। এই মামলার প্রতিবাদে তাঁরা সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

এই তালিকা পুলিশের নাকি সরকারের অন্য কোনো সংস্থার তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে এক নেতা দাবি করেছেন, এই তালিকা পুলিশ করেছে। তিনি তালিকায় পুলিশের স্বাক্ষর দেখেছেন। তবে মানুষের হাতে হাতে যে তালিকা ঘুরছে তাতে পুলিশের কোনো স্বাক্ষর নেই।

তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. গাজিউর রহমান আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ছাড়াও সরকারের অন্যান্য সংস্থা তালিকা করে থাকে। তালিকাটি তিনি দেখেননি। না দেখে বলতে পারবেন না। সরকারি কোনো সংস্থার তালিকা এভাবে ছড়িয়ে পড়ার কথা নয়। তবে তিনি মনে করেন, তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা যদি সত্যিই চাঁদাবাজ হয়ে থাকে তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে আপনাদেরও উচিত পুলিশকে এদের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা। এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্যই তো জনগণ রাস্তায় নেমেছিল। সেটা হওয়া দরকার। বিএনপির ওপর মহলও তো চাঁদাবাজদের সমর্থন করছে না।’

তালিকায় ছাত্রদলের এক নেতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের অনুসারীদের মামলার ভয়ভীতি ও বিভিন্ন কোচিং সেন্টার থেকে চাঁদাবাজি করেছেন তিনি। মহানগর বিএনপির একজন যুগ্ম আহ্বায়ক সম্পর্কে বলা হয়েছে, ৫ আগস্টের পর থেকে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছেন। মহানগর বিএনপির এক সদস্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, নগরের বোয়ালিয়া থানাধীন ফুটপাত থেকে চাঁদাবাজি করেন তিনি। নগরের ভুবনমোহন পার্কে সাইকেলের গ্যারেজ আছে। জামায়াতের একজনকে ‘ক্যাডার’ উল্লেখ করে তাঁর সম্পর্কে বলা হয়েছে, ভূমি দখল ও কেনাবেচা, বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যক্তিদের হুমকি-ধমকি ও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা দিয়ে চাঁদা আদায় করেন তিনি। জামায়াতের আরও যাদের নাম দেওয়া হয়েছে, তাঁদের সবার নামে প্রায় একই ধরনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাঁদের একজনের বিরুদ্ধে মাদক কারবারির অভিযোগ আনা হয়েছে।

আগে আওয়ামী লীগ বর্তমানে বিএনপি করেন এমন একজনকে দেশীয় অস্ত্রধারী ক্যাডার, গভীর রাতে রাস্তায় চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন নির্মাণাধীন ভবন থেকে চাঁদাবাজি করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এই তালিকা দেখে হতবাক হয়েছেন। কোন সংস্থা বা কে করেছেন, জানা নেই, তবে সারা জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে মনে হচ্ছে, এই তালিকা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। হতে পারে দু-একজন জড়িত, কিন্তু ঢালাওভাবে নাম দেওয়া-এটা হতে পারে না। কিছু কিছু লোককে তাঁরা চাঁদাবাজ হিসেবে চেনেন, তালিকায় তাঁদের নাম নেই। তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজদের শনাক্ত করা তো খুবই সোজা। দেখতে হবে কারা ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের নামে ঢালাও মামলা করেছে। হয়তো পাঁচজন বা দশজন লোক ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারা নাম দিয়েছে ৪০০ জনের। যারা এই সব মামলার বাদী তারাই তো চাঁদাবাজ। তবে যারা অপরাধ করেছে তাদের নামে মামলা করা অপরাধ নয়।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এখন সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় প্রশাসনের লোকজন কাকে ফিডব্যাক দিচ্ছে এটা বোধগম্য হচ্ছে না। তারা চাচ্ছে দেশে আবার স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হোক। এটা তাদের চক্রান্তের একটা অংশ হতে পারে। এরা তিন-চারটা করে পদোন্নতি নিয়েছে। আগে আওয়ামী লীগ সাজতে গিয়েছিল, এখন ভালো মানুষ সাজতে যাচ্ছে। মুখোশধারী এরা।’ তিনি বলেন, রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে এই তালিকার বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন। পুলিশ কমিশনার তাকে কোথাকার কী কল রেকর্ড-এই সব দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি পুলিশ কমিশনারকে বলেছেন, ‘আপনি তদন্ত করেন আবার।’

জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি এমাজ উদ্দিন মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, যাদের নাম তালিকায় আছে, তাঁদের সংগঠন থেকে সম্পূর্ণ বয়কট করা হয়েছে। নেতাদেরও বলে দেওয়া হয়েছে কারও কাছে যেন তারা ঘেঁষতে না পারেন। এরপরেও সুযোগ পেলেই কারও পাশে দাঁড়িয়ে হয়তো ছবি তুলে প্রচার করে তাঁরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কাভার্ড ভ্যানের পেছনে ধাক্কা দিয়ে দুমড়েমুচড়ে গেল যাত্রীবাহী বাস
  • নিউ ইয়র্কে নিহত বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা সম্পর্কে যা জানা গেলো
  • পাঁচ দ্বীপে বাড়ি কিনলেই পাবেন পাসপোর্ট, দেড় শতাধিক দেশে ভিসামুক্ত প্রবেশ সুবিধা
  • মানুষকে জড়িয়ে ধরল হস্তীশাবক
  • ‘একজন শিল্পীকে ভীষণভাবে অসম্মানিত করা হচ্ছে’
  • ‘শফিউল বারী বাবু ছিলেন আন্দোলনের প্রেরণা’ 
  • লাইলীকে বিশ্ব দরবারে নিয়ে যেতে চান আনোয়ার
  • কার্টুন কি সাংবাদিকতা?
  • বলিউডে ঝড় তোলা আহানের নায়িকা বললেন, লজ্জা পাচ্ছি
  • রাজশাহীতে ১২৩ ‘চাঁদাবাজের’ তালিকা নিয়ে তোলপাড়