পুলিশের ৪ ডিআইজিকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার
Published: 28th, July 2025 GMT
পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পদমর্যাদার চার কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। আজ সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এতে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষর করেছেন।
যেসব কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে, তাঁরা হলেন ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত ডিআইজি আতিকা ইসলাম, রেলওয়ে পুলিশ ঢাকায় সংযুক্ত ডিআইজি মো.
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে তাঁদের সরকারি চাকরি থেকে অবসরে পাঠানো হলো। বিধি অনুযায়ী তাঁরা অবসরসুবিধা প্রাপ্ত হবেন। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স য ক ত ড আইজ
এছাড়াও পড়ুন:
টেন্ডুলকারের সাম্রাজ্যে রুটের রান ছুট
নরসিংহ দেওনারাইকে মনে আছে? ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার। ক্যারিয়ারে এমন কিছু করেননি যে তাকে মনে রাখতে হবে। কিন্তু আবার মনে রাখাও যেতে পারে! পুরোটাই আপেক্ষিক।
২২ গজে ২২ বছর কাটিয়ে শচীন টেন্ডুলকার নিজের শেষ টেস্ট খেলছেন ওয়াংখেড়েতে। ৭৪ রানে ব্যাটিং করছিলেন। স্পিনার দেওনারাইয়ের একটু জোরের ওপরের বল ফাইন লেগে খেলতে চেয়েছিলেন। বল ব্যাটের কানায় লেগে যায় স্লিপে। স্যামি ক্যাচ নিয়ে বাকি কাজটুকু সারেন। টেন্ডুলকারের ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংস থেমে যায় ওখানেই। টেন্ডুলকারের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচের উইকেট নিয়ে দেওনারাইন ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লিখে রাখলেন। ওইটুকুই তার প্রাপ্তি।
নামের পাশে ১৫,৯২১ টেস্ট রান। রান চূঁড়ায় তিনি আগেই ছিলেন। সেটাকে শৃঙ্গে নিয়ে গিয়ে থামলেন। ২০১৩ সালের ঘটনা। তখন থেকেই আলোচনায় টেন্ডুলকারের ১৫,৯২১ রানের রেকর্ড কেউ কী ভাঙতে পারবেন? কিংবা কেউ কী কাছাকাছি যেতে পারবেন?
আলোচনায় ছিলেন খুব কজন খেলোয়াড়ই। কাছাকাছি যারা গিয়েছিলেন তারা আগেই অবসর নেন। জ্যাক ক্যালিস, রিকি পন্টিং, রাহুল দ্রাবিড়রা। কুমার সাঙ্গাকারা আরো দুই বছর খেললেও ঠিক কাছাকাছি যেতে পারেননি। স্যার অ্যালিস্টার কুকও ২০১৮ পর্যন্ত খেললেও মন গলাতে পারেননি।
‘‘ফ্যাভ ফোর’’ যাদেরকে বলা হয়, স্টিভেন স্মিথ, জো রুট, বিরাট কোহলি এবং কেন উইলিয়ামসনকে নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু রুট বাদে স্মিথ, উইলিয়ামসন ও এবং বিরাট নিজেদেরকে ওই দৌড়ে আর রাখতে পারেননি। স্মিথ দশ হাজার রান ছুঁয়েছেন কিছুদিন আগে। উইলিয়ামসন ও বিরাট পারেননি।
টিকে থাকেন কেবল রুট। ইংলিশ এই ক্রিকেটারই এখন টেন্ডুলকারের রেকর্ডের জন্য বড় হুমকি।
গতকাল ম্যানচেস্টারে ভারতের বিপক্ষে ১৫০ রানের ইনিংস খেলে টেস্ট ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন। এক ইনিংস দিয়েই রাহুল দ্রাবিড় (১৩,২৮৮), জ্যাক ক্যালিস (১৩,২৮৯) ও রিকি পন্টিংকে (১৩,৩৭৮) ছাড়িয়ে গেছেন। তার টেস্ট রান এখন ১৩,৪০৯। সামনে কেবল ব্যাটিং ঈশ্বর শচীন টেন্ডুলকারের ১৫,৯২১।
দুজনের ব্যবধান ২৫১২ রান। ১৫৭ টেস্ট খেলা রুটের সামনে দারুণ সুযোগ ২০০ টেস্ট খেলা টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। তিনি পারবেন কী না সেটাই বিরাট প্রশ্নের।
২০১২ সালে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু করেন রুট। এরপর বিরামহীন ক্রিকেট খেলেই যাচ্ছেন। টেন্ডুলকারের অবসরের সময় রুট কেবল খেলেছেন ১১ ম্যাচ। রান ছিল কেবল ৭৬৩। এরপর ২২ গজে নিজের দু্যতি ছড়িয়েই যাচ্ছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান। তখন ব্যাটিং গড় ছিল ৪০.১৫। এখন ৫১.১৭।
যে গতিতে রুট ছুটছেন, যেভাবে তার রান ক্ষুধা বাড়ছে…তাতে কত টেস্ট লাগবে টেন্ডুলকারের রেকর্ড ভাঙতে? কত সময়ই বা পাবেন? সেটা নিয়ে হচ্ছে আলোচনা। ধারাভাষ্যকার মাইক আথারটন যেমন বললেন, ‘‘রুট এই মুহূর্তে ৮৫ গড়ে রান করছে। শচীনকে টপকে যেতে তার ৩০ টেস্ট ম্যাচ লাগতে পারে। আপনি কখনই জানেন না যে, কোন অদ্ভুত চোট আপনার জন্য অপেক্ষা করছে কী না। খেলাধুলা এতটাই নিষ্ঠুর হতে পারে। তবে রুটের যেই সুবাতাস বইছে তা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে প্রায় আড়াই বছরের মধ্যে টেন্ডুলকারের মতো হয়ে ওঠা উচিত।"
রিকি পন্টিংও বিশ্বাস করেন রুটের সুযোগ আছে টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়ে যাওয়ার, ‘‘রুটের ক্যারিয়ার যেভাবে চলে গেছে, তাতে টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়ে যাওয়ার কোনও কারণ নেই।’’
৩৪ বছর ২৮০ দিনে রুটকে নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে তা হয়নি আর কাউকে নিয়ে। ইংলিশ এই ক্রিকেটারের সামনে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বাধিক রানের রেকর্ড নিজের করে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ২২ গজে ২০২৮ পর্যন্ত খেলতে পারলে রুট মোট ৩৪ টেস্ট পাবেন। পারবেন তো রুট। তার থেকেও বড় প্রশ্ন, ওতো সময় পর্যন্ত খেলবেন তো রুট?
পন্টিংয়ের চেয়ে ১১ টেস্ট কম খেলে তাকে ছাড়িয়ে গেছেন রুট। তার ক্যারিয়ারের সূচক পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে, সময় যত গড়িয়েছে রুট হয়ে উঠেছেন তত পরিণত। শুরুর ৯৭ টেস্টে সেঞ্চুরির হিসেবে পিছিয়ে ছিলেন। ৪৯ ফিফটি পেলেও সেঞ্চুরি ছিল কেবল ১৭টি। হাফ সেঞ্চুরিগুলোকে সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারছিলেন না। এরপর ৬০ টেস্টে, ২০২১ সালের পর তার উন্নতি হয়। এ সময়ে ২১ টেস্ট শতক পেয়েছেন।
শেষ ৫ বছরে বেশ ধারাবাহিক এই ইংলিশ ক্রিকেটার। ২০২০ সালে ৩ ম্যাচে ৯৪ রান। ২০২১ সালে ১৫ টেস্টে ১৭০৮ রান। ২০২২ সালে সমান টেস্টে ১০৯৮ রান। ২০২৩ সালে ৮ টেস্টে ৭৮৭ রান। ২০২৪ সালে ১৭ টেস্টে ১৫৫৬ রান এবং এই বছর ৫ টেস্টে ৪৩৭ রান করেছেন এখন পর্যন্ত।
তার এই ধারাবাহিকতা, তার হার না মানা মনোবল, টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা তাকে সবার উপরে নিয়ে যাবে বলে বিশ্বাস করেন বিশেষজ্ঞরা। সামনে তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। পারবেন তো রুট?
ঢাকা/ইয়াসিন