জুডিশিয়াল সার্ভিসে পদ সৃষ্টিতে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতির সভাপতিত্বে পদ সৃজন কমিটি গঠিত হবে, এমন বিধান রেখে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস গঠন বিধিমালা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন ও বিচার বিভাগ থেকে সোমবার রাতে ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস গঠন বিধিমালা, ২০২৫’ শিরোনামে এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

বিধিমালার ৫ বিধিতে সার্ভিসের পদ সৃজন বিষয়ে বলা হয়েছে। ৫(১) উপবিধি অনুসারে, বিচারিক পদ সৃজনের ক্ষেত্রে আপিল বিভাগের কর্মে জ্যেষ্ঠ বিচারপতির সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন, হাইকোর্ট বিভাগের দুজন বিচারপতি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ এবং আইন ও বিচার বিভাগের সচিব/সিনিয়র সচিবদের সমন্বয়ে বিচারিক পদ সৃজন কমিটি গঠিত হবে। ওই পদ সৃজনের ক্ষেত্রে কমিটির সুপারিশ চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

৫(২) উপবিধিতে বলা হয়েছে, সার্ভিসের পদ সৃজনের ক্ষেত্রে বিচারিক পদ সৃজনের ক্ষেত্রে বিচারিক পদ সৃজন কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে আইন ও বিচার বিভাগ রাষ্ট্রপতির কাছে সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করবে এবং অনুমোদিত সারসংক্ষেপ অনুযায়ী চূড়ান্ত আদেশ জারি করবে।

এর আগে ২০০৭ সালের ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (সার্ভিস গঠন, সার্ভিস পদে নিয়োগ এবং সাময়িক বরখাস্তকরণ, বরখাস্তকরণ ও অপসারণ) বিধিমালা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।

‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস গঠন বিধিমালা, ২০২৫’ শিরোনামে সোমবার রাতে জারি করা প্রজ্ঞাপনের ৩ বিধিতে সার্ভিস গঠন বিষয়ে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (সার্ভিস গঠন, সার্ভিস পদে নিয়োগ এবং সাময়িক বরখাস্তকরণ, বরখাস্তকরণ ও অপসারণ) বিধিমালা, ২০০৭–এর অধীন গঠিত বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস এই বিধিমালার অধীন গঠিত হয়েছে বলে বিবেচিত হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিচারিক পদ সৃজনের ক্ষেত্রে কমিটি গঠন বিধিমালাটির অন্যতম উল্লেখযোগ্য একটি দিক। অধস্তন আদালতের বিচারিক পদ সৃজনের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক যে জটিলতা ছিল, তা এই বিধিমালার মাধ্যমে দূর হবে বলে মনে করি। জুডিশিয়াল সার্ভিস গঠন বিধিমালা ২০২৫ বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক উৎকর্ষে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ড শ য় ল স র ভ স গঠন ব ধ ম ল রপত র

এছাড়াও পড়ুন:

শিশুদের জন্য কোরআন সাক্ষরতা প্রকল্প

কাতার চ্যারিটি (কিউসি) বাংলাদেশে তাদের অগ্রগামী কোরআন সাক্ষরতা প্রকল্প চালু করেছে, যা পড়তে অসুবিধার সম্মুখীন শিশুদের কোরআন তিলাওয়াত, হিফজ এবং এর অর্থ বোঝার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করছে। এ প্রকল্প কিউসির বৃহত্তর আল-ফুরকান কোরআনিক সাক্ষরতা প্রোগ্রামের অংশ, যা কেবল কোরআন শিক্ষার ওপরই কেন্দ্রীভূত নয়; বরং এর সুবিধাভোগীদের নৈতিক, মানসিক ও সামাজিক উন্নয়নের ওপরও জোর দেয়।

কোরআন সাক্ষরতা প্রকল্পটি বাংলাদেশের সেই শিশুদের লক্ষ করে যারা পড়তে অসুবিধার সম্মুখীন হয়। এটি তাদের কোরআন তিলাওয়াত ও হিফজ এবং কোরআনের অর্থ বোঝার মাধ্যমে তাদের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক বিকাশেও সহায়তা করে।

ড. মোহাম্মদ আমিন হাফেজ ওমর, কিউসির বাংলাদেশ শাখার কান্ট্রি ডিরেক্টর। তিনি বলেছেন, ‘এ উদ্যোগ কেবল একটি সাক্ষরতা প্রচারণা নয়, এটি একটি রূপান্তরকারী যাত্রা। পবিত্র কোরআন শিক্ষা দেওয়া শুধু শব্দ ও নিয়ম শেখানো নয়, এটি এমন ব্যক্তি গড়ে তোলা, যারা মূল্যবোধ, আত্মসম্মান ও উদ্দেশ্যে সমৃদ্ধ। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের ঐশী বাণীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে এবং জীবনে নতুন পরিচয়, মর্যাদা ও দিকনির্দেশনার দ্বার উন্মোচন করতে সাহায্য করি।’

আরও পড়ুনযে দানে ত্যাগের অনুভূতি হয়, সেটিই প্রকৃত দান১১ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রকল্পটি কিউসির দুটি ফ্ল্যাগশিপ সামাজিক কল্যাণ কেন্দ্র—মারকাজ মুহাম্মদ বিন আজাজ আল-কুবাইসি সেন্টার এবং শাখা সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে, যেখানে ৬০০ জনের বেশি স্পনসর করা শিশু অংশগ্রহণ করেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি ছিল প্রাণবন্ত এবং অংশগ্রহণমূলক, যেখানে কোরআন তিলাওয়াত, নাট্য প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

কোরআন শিক্ষক মনজুরুল হক শিক্ষণপদ্ধতি সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক আরবি ভাষা দিয়ে শুরু করি। শিক্ষার্থীদের অক্ষর ও শব্দ চিনতে সাহায্য করি। তারপর ধীরে ধীরে কোরআনের আয়াত ও তাদের অর্থের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিই। আমাদের লক্ষ্য কেবল কোরআন পড়ে যাওয়া নয়; বরং গভীরভাবে বোঝা এবং কোরআনের সঙ্গে আধ্যাত্মিক সংযোগ ঘটানো।’ এ পদ্ধতি শিশুদের জন্য শিক্ষাকে আকর্ষণীয় ও অর্থপূর্ণ করে তোলে।

কাতার চ্যারিটি বাংলাদেশে ১৯৮৮ সাল থেকে তাদের জনহিতকর কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে, যখন দেশটি প্রলয়ংকরী বন্যার সম্মুখীন হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে ঢাকায় তাদের কার্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে কিউসি বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জল সরবরাহ ও জীবিকা উন্নয়নের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ২০২৪ সালে কিউসি ২ হাজার ২৩৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যা ৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৬৭ জনকে উপকৃত করেছে (গালফ টাইমস, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫)। এ ছাড়া কিউসি বাংলাদেশে ৫ হাজার ৮২ শিক্ষার্থীকে ব্যাপক আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে, যা তাদের উজ্জ্বল ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

আরও পড়ুনযে দানে ত্যাগের অনুভূতি হয়, সেটিই প্রকৃত দান১১ ডিসেম্বর ২০২৪

কোরআন সাক্ষরতা প্রকল্পটি কিউসির শিক্ষা ও সামাজিক কল্যাণ প্রকল্পের একটি অংশ। এটি ২০২৩ সালে শুরু হওয়া ২০টি কোরআন মুখস্থকরণ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা দুই হাজার শিক্ষার্থীকে উপকৃত করবে। এ ছাড়া কিউসি গত পাঁচ বছরে ৫০টি স্কুল নির্মাণ করেছে, যা ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে উপকৃত করেছে এবং ৩ হাজার ৩১২ জন এতিম শিশুকে স্পনসর করছে।

কিউসি একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এনজিও, যা ১৯৯২ সাল থেকে ৫০টির বেশি দেশে ১৭৮ মিলিয়নের বেশি মানুষকে সহায়তা করেছে। এটি জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে অংশীদারত্বে কাজ করে (কাতার চ্যারিটি ওয়েবসাইট, ২০২৫)।

কাতার চ্যারিটির কোরআন সাক্ষরতা প্রকল্প শিশুদের মধ্যে মূল্যবোধ, আত্মসম্মান ও জীবনের উদ্দেশ্য জাগ্রত করে। প্রকল্পটির সাফল্য শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া ও কিউসির দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে স্পষ্ট। বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য এ উদ্যোগ একটি আশার আলো, যা শিক্ষা ও ইমানের মাধ্যমে তাদের জীবনকে রূপান্তরিত করছে।

সূত্র: কাতার ট্রিবিউন

আরও পড়ুনকোরআনের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে ‘কোরআন জার্নালিং’২২ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিনা মূল্যে হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাস শনাক্তকরণ কর্মসুচি
  • সিওডিলের স্টলে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের উপচে পড়া ভিড়
  • ‘পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্তিতে কাজ করছি’
  • ২৫ বছর পর রিয়ালে ব্যালন ডি’অরজয়ী কেউ রইলেন না
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (২৯ জুলাই ২০২৫)
  • সান্ডারল্যান্ডের কিউবা মিচেল এখন বাংলাদেশি ক্লাবে
  • প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত হচ্ছে
  • জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যুক্তরাষ্ট্রের যুক্ততার অভিযোগ মিথ, বললেন মার্কিন সাবেক কূটনীতিক
  • শিশুদের জন্য কোরআন সাক্ষরতা প্রকল্প