মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তার সরকারের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান মে মাসে যুদ্ধবিরতিতে রাজী হয়েছিল। ট্রাম্পের এই দাবির ব্যাপারে এতোদিন মুখে একরকম কুলুপ এঁটে বসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে মঙ্গলবার তিনি পার্লামেন্টে ট্রাম্পের সেই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, কোনো বিশ্বনেতাই ভারতকে অপারেশন সিন্দুর বন্ধ করতে বলেনি।

কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ইসলামাবাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে ৭ মে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও হামলা চালায় ভারতের ভূমিতে। শেষ পর্যন্ত ১০ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, তার সরকারের মধ্যস্থতায় দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজী হয়েছে। বিভিন্ন সময় ট্রাম্প তার বক্তৃতায় ভারত-পাকিস্তানের এই যুদ্ধবিরতির জন্য নিজেকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা ট্রাম্পের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমবারের মতো লোকসভায় দাবি করেছেন, কোনো বিশ্বনেতাই ভারতকে অপারেশন সিঁদুর বন্ধ করতে বলেনি।
 
বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রকাশ্যে ‘মিথ্যাবাদী’ বলার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে। 

রাহুল বলেন, “তাকে (প্রধানমন্ত্রী মোদি) লোকসভায় বলতে হবে যে ট্রাম্প একজন মিথ্যাবাদী এবং তাকে অস্বীকার করতে হবে যে, আমরা কোনো বিমান হারাইনি,। এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক সময় এবং আমরা এমন একজন প্রধানমন্ত্রীকে সহ্য করতে পারি না যিনি সেনাবাহিনী ব্যবহার করতে জানেন না। আমরা এমন একজন প্রধানমন্ত্রীকে সহ্য করতে পারি না যার এখান থেকে বলার সাহস নেই যে ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন মিথ্যাবাদী।”

পরে মোদি লোকসভায় বলেন,“আমরা প্রথম দিন থেকেই বলেছিলাম যে আমাদের পদক্ষেপ উত্তেজনাপূর্ণ নয়। বিশ্বের কোনো নেতা আমাদের অপারেশন সিন্দুর বন্ধ করতে বলেননি। ৯ মে রাতে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স আমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি এক ঘন্টা চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু আমি বাহিনীর সাথে বৈঠকে ব্যস্ত ছিলাম। যখন আমি তাকে ফোন করি, তখন তিনি আমাকে বলেন যে পাকিস্তান একটি বড় আক্রমণের পরিকল্পনা করছে। আমার উত্তর ছিল, যদি এটি পাকিস্তানের উদ্দেশ্য হয়, তবে তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে।”

তিনি বলেন, “যদি পাকিস্তান আক্রমণ করে, আমরা বড় আক্রমণ দিয়ে জবাব দেব। আমি বলেছিলাম হাম গোলি কা জওয়াব গোলে সে দেঙ্গে (আমরা একটি বুলেটের জবাব কামানের গোলা দিয়ে দেব)। ১০ মে, আমরা পাকিস্তানের সামরিক শক্তি ধ্বংস করে দিয়েছি। এটি ছিল আমাদের প্রতিক্রিয়া এবং আমাদের সংকল্প। এমনকি পাকিস্তানও এখন বুঝতে পারে যে ভারতের প্রতিটি জবাব আগের চেয়েও বড়। তারা জানে যে ভবিষ্যতে যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে ভারত যেকোনো পর্যায়ে যেতে পারে। গণতন্ত্রের এই মন্দিরে আমি আবারও বলতে চাই: অপারেশন সিন্দুর এখনো চলছে।”
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। এতে একজন শিক্ষকসহ হোটেলের দুই কর্মচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষের লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির নাম শিপন মিয়া (৩০)। তিনি বড়িকান্দি ইউনিয়নের নুরজাহানপুর গ্রামের মোন্নাফ মিয়া ওরফে মনেক মিয়ার ছেলে। নবীনগর থানা সূত্রে জানা গেছে, ওই দুজনের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ২০টি মামলা আছে।

গুলিবিদ্ধ আহত ব্যক্তিরা হলেন বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা এমরান হোসেন (৩৮) এবং হোটেলের দুই কর্মচারী—উপজেলার আলমনগর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন মিয়া (২০) ও চরলাপাং গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে নুর আলম (১৮)। এমরান উপজেলার শ্যামগ্রামের মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক। তাঁর ভাই ঢাকায় কর্মরত পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিল্লাল হোসেন।

বড়িকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মনেক ডাকাত এলাকাটা শেষ করে ফেলেছেন। তাঁর কারণেই এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়েছে। মনেক ডাকাতদের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। গুলিতে মনেক ডাকাতের ছেলে নিহত হয়েছেন।

স্থানীয় লোকজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় মোন্নাফ মিয়া ও তাঁর ছেলে শিপনের দীর্ঘদিন ধরে একক প্রভাব ছিল। তাঁদের সঙ্গে একই এলাকার থোল্লাকান্দি গ্রামের মিস্টার মিয়ার ছেলে আরাফাত মিয়ার বিরোধ চলছিল। শনিবার রাত আনুমানিক নয়টার দিকে বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে শিপন মিয়া আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে আরাফাতের নেতৃত্বে সশস্ত্র একটি দল হোটেলে ঢুকে গুলি চালায়। এতে শিপনসহ হোটেলের দুই কর্মচারী ইয়াসিন ও নুর আলম গুলিবিদ্ধ হন। গুলির শব্দে বাজারজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলার পর আরাফাত ও তাঁর সহযোগীরা দ্রুত পালিয়ে যান।

শিপনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর নুরজাহানপুরে পৌঁছালে মোন্নাফ মিয়ার নেতৃত্বে একদল লোক গণি শাহ মাজারের অদূরে তালতলায় এমরান হোসেনের কার্যালয়ে হামলা চালান। সেখানে এমরান গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাঁরা থোল্লাকান্দি গ্রামে হামলা চালিয়ে একাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। রাতে ঘটনাস্থলে অভিযান চালালেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। কারণ, উভয় পক্ষের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গুলিবিদ্ধ কাউকেই শনিবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়নি। তাঁদের হয়তো অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, শিপনের ওপর হামলাকারী আরাফাত থোল্লাকান্দি গ্রামের এমরান হোসেনের আত্মীয়। এ কারণেই এমরানের কার্যালয়ে গিয়ে হামলা এবং তাঁকে গুলি করা হয়েছে।

নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিহত শিপন ডাকাত দলের সদস্য ছিলেন। শিপন ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ২০টি মামলা আছে। ওই ঘটনায় একজন শিক্ষকসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে সবাই পলাতক। তাই কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • কে হবে নারী বিশ্বকাপের নতুন চ্যাম্পিয়ন
  • ভারত নাকি দক্ষিণ আফ্রিকা, কে হবে নতুন নারী বিশ্বকাপ চ‌্যাম্পিয়ন
  • বিশ্বকাপ ফাইনালের প্রতি টিকিটের দাম দেড় লাখ টাকার বেশি
  • গোল্ডেন বুট হাতে এমবাপ্পে বললেন, রিয়ালে আরও বহু বছর থাকতে চাই
  • সব মাধ্যমে কাজ করতে চান জৌপারী