লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের (টিটিসি) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহীন আক্তারকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছেন শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (৩ আগস্ট) সকালে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষে জোরপুর্বক পদত্যাগপত্রে অধ্যক্ষের স্বাক্ষর নেন তারা। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হাতীবান্ধা উপজেলায় টিটিসি প্রতিষ্ঠা করে সরকার। পাঁচটি ট্রেডে লেখাপড়া করছে শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান শাহীন আক্তার। তার দায়িত্বের পর থেকে নানা দুর্নীতি আর অনিয়মে ভরে উঠেছে এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। 

আরো পড়ুন:

ঢাবিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নিয়ে রচনা লিখে পুরস্কার পেলেন ৬ শিক্ষার্থী

জবি রেজিস্ট্রারের অসদাচরণের প্রতিবাদে মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীদের নিম্নমানের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে সরকারি অর্থ আত্নসাৎ করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহীন আক্তার। এতেই শেষ নয়, তার মনপুত অফিস সহায়ক আমিনুলকে দিয়েছেন হিসাব শাখার দায়িত্ব। সেই অফিস সহকারী বসবাস করেন শিক্ষকদের কোয়াটারে।

এসব অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে শিক্ষার্থীরা গত সপ্তাহে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুর্বে বিতরণ করা নিম্নমানের শিক্ষা উপকরণ ইউএনও'র নির্দেশে ফেরত নিয়ে ভালমানের উপকর বিতরণ করা হয়। 

এর আগে, ড্রাইভিং কোর্সে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় স্বজনপ্রীতি ও ঘুষের অভিযোগ উঠলে সেই নিয়োগ পরীক্ষাও বাতিল করতে বাধ্য হন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহীন আক্তার। বারবার অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ না হওয়ায় ফুঁসে উঠেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। 

ররিবার প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানের মুলফটকে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে মহাসড়ক অবরোধ করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহীনের পদত্যাগ দাবি করে। একপর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহীন আক্তারের রুমে গিয়ে পদত্যাগের দাবি জানান। শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহীন আক্তার। 

পদত্যাগপত্রে তিনি লেখেন, “আমি শাহীন আক্তার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে অব্যহতি দিচ্ছি।”

একইসঙ্গে অভিযুক্ত অফিস সহায়ক আমিনুল হিসাব শাখার অতিরিক্ত দায়িত্ব থেকেও অব্যহতি নিয়ে লিখিত দেন শিক্ষার্থীদের।

মুলত প্রতিষ্ঠানটির দুইজনের হাতে জিম্মী ছিল বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। সেই জিম্মীদশা থেকে মুক্তি পেয়ে বিজয় আনন্দও করেছে তারা।

পদত্যাগ প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ শাহীন আক্তার বলেন, “শিক্ষার্থীদের বসতে বলেছিলাম। বসে সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা বসবে না। তারা অফিসের অনেক গোপন জিনিসের তথ্য চেয়েছিল, দেইনি বলে শিক্ষার্থীরা ক্ষেপে গিয়ে আন্দোলন করেছে। তাদের চাপের মুখে আমি দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নিয়েছি।”

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম মিঞা বলেন, “বিগত দিনে নিয়োগে অনিয়ম করেছিল। পরে তা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। নিম্নমানের উপকরণ বিতরণের অভিযোগ পেয়ে অধ্যক্ষকে বললে তিনি সেগুলো ফেরত নিয়ে ভালোমানের উপকরণ বিতরণ করেন। এসব তার দুর্নীতির মধ্যে পড়ে।”

তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে অব্যহতি নিয়েছেন বলে শুনেছি। সব বিষয় নিয়ে মন্ত্রনালয়কে জানানো হবে।”

ঢাকা/নিয়াজ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদত য গ ব তরণ কর পদত য গ

এছাড়াও পড়ুন:

শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে ‍শিবচর থানায় মামলাটি করেন।

এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।

মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
  • প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় চান না সাত কলেজের শিক্ষকেরা
  • সাতরাস্তা মোড়ে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার কারিগরি শিক্ষার্থীদের, তবে অবস্থান চলবে
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের
  • বন কর্মকর্তার ১৭ বিয়ে: আদালতে মামলা, তদন্তে পিবিআই
  • শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে ৫টি পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
  • নির্বাচনী উপকরণ সংগ্রহ শুরু করেছে ইসি
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাঁর মাকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন