দোহার ও নবাবগঞ্জ নিয়ে গঠিত ঢাকা-১ আসনটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। অর্থাৎ দুই উপজেলায় দুটি আসন বিন্যাস করার দাবি উঠেছে।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত শুনানিতে অংশ নিয়ে এমন দাবি করেন তারা।

শুনানি শেষে দোহা ও নবাবগঞ্জ সংসদীয় আসন পুনরুদ্ধার কমিটির আহ্বায়ক মো.

হুমায়ুন কবীর শুনানি শেষে সাংবাদিকদের বলেন, “বিগত সরকারের স্বৈরাচারী ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার অন্যতম হাতিয়ার ছিল ঢাকার আসন ১৩টি থেকে বাড়িয়ে ২০টি করা। ওই সরকারের সব কর্মকাণ্ড ছিল ঢাকাকেন্দ্রিক। বিগত সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক আন্দোলন সংগ্রামে স্বৈরাচার সরকার শুধু ঢাকাকে নিয়ন্ত্রণ করে পুরো দেশ পরিচালনা করতো। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা আবারো কোনো স্বৈরাচারী সরকার চাই কিনা। আগামী দিনে স্বৈরাচার নাকি জনবান্ধব সরকার আসবে তা অনেকাংশেই নির্ভর করছে আপনাদের (কমিশনের) ওপর।”

কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা যদি আগামীতে স্বৈরাচার সরকার না চান, তাহলে ২০০৮ সালে কমবেশি ১৫০ আসন কাটা-ছেঁড়া করা নির্বাচনী সীমানার পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। ঢাকা সিটিতে সোয়াশো কাউন্সিলর, ৮০ জনের মত নারী কাউন্সিলর এবং দুজন মেয়র থাকার পরও এতগুলো আসন কেন প্রয়োজন, তা আমাদের বুঝে আসে না। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম জুলাই অভ্যুত্থানের পর সব রাজনৈতিক দল মিলে সবার আগে এ দাবিটি তুলবে। ঢাকা সিটি থেকে আসন কেটে আগের মতো মফস্বল এলাকায় আসন বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে আপনাদের অনুরোধ করবেন।”

তিনি বলেন, “২০০৮ সালের আগে বিগত সব নির্বাচনে দোহার উপজেলা নিয়ে ঢাকা-১ ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নিয়ে ঢাকা-২ আসন গঠিত ছিল। এ দুই আসনের সিংহভাগ মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী হওয়ার অপরাধে ২০০৮ সালে দুইটি আসনকে একটিতে রূপান্তর করা হয়েছে।  আপনারা জানেন দোহার এবং নবাবগঞ্জ প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। পরিবারের অন্তত একজন সদস্য প্রবাসে থাকেন না, এমন পরিবার পাওয়া দুষ্কর। তাই এই দুই উপজেলার মানুষ পারিবারিকভাবে অভিভাবক শূন্য। বিগত ১৭ বছর আমরা রাজনৈতিকভাবেও অভিভাবক শূন্য রয়েছি। অভিভাবক শূন্য হওয়ার সুযোগে আমাদের এলাকা এখন মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। এছাড়া মারামারি হানাহানি লেগেই থাকে, দেখার কেউ নেই। আপনারা জানেন কিছুদিন আগে হারুন মাস্টার নামে একজন স্কুল শিক্ষক ভোরে যখন হাঁটতে বেরিয়েছেন, কীভাবে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।”

তিনি বলেন, “আমাদের এলাকায় উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। আমাদের এলাকা থেকে ঢাকায় আসতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লেগে যায়। আর বাবুবাজার ব্রিজে যদি যানজট হয়, তাহলে ঘণ্টা পাঁচেকের আগে ঢাকা সিটিতে প্রবেশ করার উপায় নেই। দোহারের এক পাশ দিয়ে পুরোটাই পদ্মা নদী।তাই শিল্প কারখানা গড়ে ওঠার উপযুক্ত স্থান হওয়া সত্ত্বেও তা হয়নি। কারণ আমাদের এলাকায় এখনো গ্যাসের লাইন যায়নি, আর শিল্প কারখানা না থাকায় একটু বাতাস এলে, বৃষ্টিতে, গরমকালে বিদ্যুতের দেখা পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়।”

দোহা ও নবাবগঞ্জ সংসদীয় আসন পুনরুদ্ধার কমিটির এ আহ্বায়ক বলেন, “আটটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে দোহার এবং ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে নবাবগঞ্জ আলাদা আলাদা স্বতন্ত্র প্রশাসনিক এলাকা। দুই উপজেলা মিলে আয়তন ৪০০ বর্গ কিলোমিটারে উপরে। তাই একজন সংসদ সদস্যের এত বড় এলাকা দেখভাল করা দুষ্কর। তাই দুটি উপজেলায় পূর্বের ন্যায় দুটি আসন বিন্যাস করা প্রয়োজন।” 

ঢাকা/এএএম/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদন

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে নতুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

আরো পড়ুন:

নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা

১৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের আগে একটা মানবাধিকার কমিশন ছিল, কিন্তু সেটি কার্যত দন্তহীন একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। নিয়োগ পদ্ধতিতে ত্রুটি, এখতিয়ারে ঘাটতি এবং নেতৃত্বের দুর্বলতায় প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। এবার সেটিকে সত্যিকারের এখতিয়ারসম্পন্ন, ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।”

তিনি জানান, নতুন অধ্যাদেশে মানবাধিকার কমিশনের কাঠামো, এখতিয়ার ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। কমিশন একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সার্বক্ষণিক সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা নিশ্চিত করতে আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করা হবে এবং প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বাছাই কমিটি সুপারিশ করবে।

আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমরা নিয়োগ পদ্ধতিটা এমনভাবে করেছি যাতে অভিজ্ঞ, যোগ্য ও মানবাধিকার রক্ষায় সক্রিয় মানুষরা কমিশনে জায়গা পান।”

তিনি আরো বলেন, “আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ কর্তৃক অনুসমর্থিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি এবং প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত মানবাধিকারগুলোকেও এই কমিশনের এখতিয়ারে আনা হয়েছে। এর ফলে কমিশন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী কাজ করতে পারবে।”

অধ্যাদেশে কমিশনের এখতিয়ার বহুলাংশে বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাতেও কমিশন তদন্ত করতে পারবে। আইন উপদেষ্টা বলেন, “আগের কমিশনের এখতিয়ারে গুরুতর সীমাবদ্ধতা ছিল, বিশেষ করে শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ক্ষেত্রে। এবার সেই সীমাবদ্ধতা দূর করা হয়েছে।”

এছাড়া, গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা আইনসহ মানবাধিকার সংরক্ষণমূলক যেকোনো আইনের বাস্তবায়নের দায়িত্ব মানবাধিকার কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। আলাদা করে ‘গুম কমিশন’ গঠনের প্রয়োজন হবে না বলে তিনি জানান।

অধ্যাদেশে কমিশনের আদেশ প্রতিপালনকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা বলেন, “এখন থেকে কমিশনের সুপারিশ বা নির্দেশ উপেক্ষা করা যাবে না। এর বাধ্যবাধকতা আইনি কাঠামোয় যুক্ত করা হয়েছে।”

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন। খবর বাসসের।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
  • আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স
  • নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের ৩১ বিভাগকে প্রস্তুতির নির্দেশ ইসির
  • কর্মদিবসের শেষ দিনে প্রধান শিক্ষকের মৃত্যু
  • প্রশিক্ষকদের দায়িত্বে উদাসীনতাসহ যেসব অসংগতি উঠে এল প্রাথমিক তদন্তে
  • চবি ছাত্রদলের ৪২০ জনের কমিটিতে নারী মাত্র ১১
  • চলন্ত গাড়ির নিচে পড়েও অক্ষত অবস্থায় ফিরল ৩ বছরের শিশুটি
  • মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদন