সিদ্ধিরগঞ্জে বেপরোয়া সন্ত্রাসী আসিফ ও তার বাহিনী
Published: 26th, August 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জের চিহ্নিত সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ আসিফ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নাসিমা (৩৮) নামে এক ভুক্তভোগী অসহায় নারী। সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে তিনি এ অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই নারী দীর্ঘদিন ধরে আদমজী সংলগ্ন রিমি গার্মেন্টসের গেটের উত্তর পাশে কাঁচামালের দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্ভর করে আসছিলেন। কিন্তু চিহ্নিত সন্ত্রাসী আসিফ (৩০) ও তার সহযোগী ৭-৮ জন নিয়মিত দোকানে এসে গালিগালাজ, ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল।
সর্বশেষ গত রবিবার তারা দোকানে এসে জানায় এই জায়গা না ছাড়লে এখানেই কবর দেওয়া হবে। এ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার দাবি, আসিফ একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ী। তার অত্যাচারে গোটা এলাকা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আদমজী চাষারা সড়কে রিমি গার্মেন্টসের মূল ফটকের পাশে সরকারি জায়গা দখল করে ফুটপাতের দোকান গড়ে তোলা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব দোকান থেকে নিয়মিত চাঁদা তোলে আসিফ। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের দোকান জোরপূর্বক সরিয়ে দিয়ে অন্যকে ভাড়া দেয়। রাতে এখানে বহিরাগতদের আড্ডা বসে, চলে মাদক সেবন ও ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা।
টিএনটির এক কর্মকর্তা জানান, আসিফ সরকারি জায়গা দখল করে দোকান ভাড়া দেয় এবং নিজস্ব বাহিনী দিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করছে। প্রায় সময় তার নেতৃত্বে ছিনতাই হয়। তবে আসিফ দাবি করে সরকারি জায়গা পরিত্যক্ত থাকায় দোকান বসানো হয়েছে, সরকারের প্রয়োজন হলে সরে যাবে।
অথচ বাস্তবে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত সেখানে বহিরাগতদের সমাগম ঘটে এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রিমি গার্মেন্টসের একাধিক নিরাপত্তাকর্মী জানান, আসিফ ও তার সহযোগীরা প্রায়ই রাতে সেখানে জড়ো হয়। এরপর মোটরসাইকেলযোগে বের হয়ে পথচারীদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা, মোবাইলসহ মূল্যবান জিনিস ছিনতাই করে। প্রায়ই দেখা যায় সেখানে মাদক সেবনের দৃশ্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসিফের সহযোগী সৌরভের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দুটি মামলা রয়েছে, যার একটি ছিনতাই মামলা। এলাকাবাসীর দাবি, আসিফ ও আশিকের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এই চক্রের কারণে গ্যাসলাইন ও আশপাশের মানুষজন ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অলিউল্লাহ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পাইনি, তবে সম্প্রতি কিছু দুষ্কৃতিকারীর ছিনতাই কার্যক্রম আমাদের নজরে এসেছে। এবারে অভিযোগ পাওয়া গেল, তাই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: হ মক হত য স দ ধ রগঞ জ সন ত র স ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ র সহয গ আস ফ ও ছ নত ই সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
অ্যাপে পরিচয়-প্রেম, বিয়ে করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এলেন চীনের যুবক
ভাষা, সংস্কৃতি ও হাজার মাইলের দূরত্বকে হার মানিয়েছে ভালোবাসা। ভালোবাসার টানে এক তরুণীকে বিয়ে করতে বাংলাদেশে এসেছেন চীনের এক যুবক। গত শুক্রবার রাতে চীন থেকে ঢাকায় পৌঁছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এক তরুণীর বাসায় আসেন তিনি। আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে তাঁরা বিয়ে সম্পন্ন করবেন।
চীনের যুবকের নাম ওয়াং তাও (৩৬)। চীনের হোয়ানান প্রদেশের ওয়াং ইচাং চাওয়ের ছেলে তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের তাহের মিয়ার মেয়ে সুরমা আক্তারের (২২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে তাঁর। সুরমা একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং ঢাকার লালবাগে থাকেন। আজ রোববার তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন বলে তরুণীর পরিবার জানিয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছান চীনের যুবক ওয়াং তাও। বিমানবন্দর থেকে চীনের যুবককে আতিথেয়তা দিয়ে নিজ বাড়ি নাসিরনগরের কুন্ডার কোনাপাড়ায় নিয়ে আসেন তরুণী সুরমাসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।
স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও তরুণীর পরিবারের দাবি, দেড় থেকে দুই মাস আগে ডেটিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে সুরমার পরিচয় হয়। তাঁরা নিয়মিত চ্যাটে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। বিষয়টি চীনের যুবক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তরুণী নিজ নিজ পরিবারকে জানান। উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁরা একে অপরকে বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। পরে চীনের যুবক বাংলাদেশ ও চীনের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে দুপুরের পর থেকে চীনের যুবককে দেখার জন্য সুরমার বাড়িতে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন।
সুরমা স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, ‘ওয়ার্ল্ড টক’ অ্যাপের মাধ্যমে চীনের যুবক ওয়াং তাওয়ের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। বন্ধুত্ব থেকে সম্পর্ক প্রেমে গড়ায়। ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে তাঁরা একে অপরের সঙ্গে চ্যাট করতেন। একপর্যায়ে তাঁরা পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের সিদ্ধান্তে পৌঁছান।
সুরমার মা নুরেনা বলেন, ‘আমার মেয়ের ভালোবাসা পেতে চীন থেকে যুবক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে চলে এসেছে। ওই যুবক কোনো ধর্মই বিশ্বাস করে না। মেয়েকে বিয়ে করতে প্রয়োজনে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। আগামীকাল (আজ) রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে মুসলিম রীতি মেনে সুরমাকে বিয়ে করবে চীনের যুবক। এতে দুই পরিবারের সম্মতি আছে। আমরা এই বিয়েতে আনন্দিত। মেয়ের খুশিই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
নাসিরনগর থানার কুন্ডা বিট উপপরিদর্শক (এসআই) জাহান-ই-আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে কুন্ডা গ্রামে যাই। পাসপোর্ট দেখে নিশ্চিত হলাম যে যুবক চীনের নাগরিক। ওই তরুণী ঢাকার লালবাগে থাকেন। ‘ওয়ার্ল্ড টক’ নামের একটি অ্যাপসের মাধ্যমে তাঁদের পরিচয়। একপর্যায়ে তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। চীনের যুবক ইংরেজি বোঝেন না। তাই কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁরা একে অপরের সঙ্গে ট্রান্সলেটরের মাধ্যমে কথা বলতেন। তরুণী ও তাঁর পরিবার জানিয়েছে, রোববার হলফনামার মাধ্যমে চীনের যুবক মুসলিম হবেন। তারপর তাঁরা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।’ তরুণীর বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, চীনের যুবক এক থেকে দেড় মাস থাকবেন। যাওয়ার সময় হয় ওই তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন বা পরে নিয়ে যাবেন।