বন্দরে পাওনা টাকা না দেওয়ার জের ধরে সুন্দরবন কুরিয়া সার্ভিসের এজেন্ট ব্যবসায়ীকে অমানবিক নির্যাতনের পর  প্রতিষ্ঠানের তালা খুলে ৪টি স্মার্ট ফোনের পার্সেল ও ১৫টি গিফট পার্সেলসহ দোকানে ক্যাশ বাক্সে থাকা নগদ ৭০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে পাওনাদার বন্ধু নাদিমসহ তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে। 

এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী দেনাদার সুন্দরবন কুরিয়া সার্ভিসের এজেন্ট ব্যবসায়ী তপন চক্রবর্তী বাদী হয়ে ঘটনার ওই দিন রাতে পাওনাদার বন্ধু নাদিমসহ অজ্ঞাত নামা ৪/৫ জনকে আসামী করে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।

এর আগে গত মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে ৩টায় বন্দর থানার ২৪ নং ওয়ার্ডের  কাইতাখালী নদীরপাড়ে খোলা নির্জন মাঠে অমানবিক নির্যাতনের পর  বন্দর সিরাজ দৌল্লা ক্লাব সংলগ্ন উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানের তালা খুলে বিভিন্ন মালামাল লুটপাটের ঘটনাটি ঘটে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,  বন্দর জামাইপাড়া এলাকার দুলাল চক্রবর্তী ছেলে তপন চক্রবর্তী দীর্ঘ দিন ধরে  বন্দর থানার সিরাজউদ্দৌলা ক্লাব মার্কেটে দোকান নিয়ে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের এজেন্ট নিয়ে ব্যবসায় করে আসছে। এ সুবাদে বন্দর থানার কাইতাখালি এলাকার আবুল কালাম মিয়ার ছেলে তারেই বন্ধু নাদিম হোসেনের নিকট হইতে ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেই।

উল্লেখিত টাকা হইতে ৩০ হাজার টাকা ছাড় দিয়ে পাওনাদার বন্ধু নাদিম দেনাদার বন্ধু তপন চক্রবর্তী পিতাকে  জিম্মাদারী হিসেবে একটি কর্জ নামা দলিল সম্পাদন করেন যেখানে উল্লেখ থাকে যে, আগামী ৩০/০৯/২০২৫ তারিখের মধ্যে তিন ধাপে ১নং বিবাদীকে উক্ত টাকা পরিশোধ করা হবে।

এর ধারাবাহিকতা গত মঙ্গলবার পৌনে ৩টায় সময় পাওনাদার বন্ধু নাদিম দেনাদার বন্ধু তপন চক্রবর্তী বাড়িতে এসে তাকে তপন চক্রবর্তীকে  বন্দর থানাধীন নবীগঞ্জ কাইতাখালী নদীরপাড়ে একটি খোলা নির্জন মাঠে নিয়ে যায়।  

সেখানে ১নং বিবাদী নাদিমের বন্ধু হাসিব ও শিপন সহ তাদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন দেশীয় ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক দেনাদার তপন চক্রবর্তী  জন্য অপেক্ষা করছিলো। পরে উল্লেখিত ৩ জন দেনাদার তপন চক্রবর্তীকে হত্যার উদ্দেশ্য লাঠিসোটা দিয়ে   বেদম ভাবে পিটিয় শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্ত জমাট নীলাফুলা জখম করে। 

মারপিটের এক পর্যায়ে পাওনাদার নাদিম দেনাদার তপন চক্রবর্তীকে উল্লেখিত স্থানে আটক রেখে প্যান্টের পকেটে থাকা উক্ত দোকানের চাবি এবং দুইটি স্মার্ট ফোন ও একটি বাটন ফোন নিয়ে নেয়।

পরবর্তীতে পাওনাদার নাদিম দেনাদার তপন চক্রবর্তীকে তার সহযোগিদের কাছে আটক রাখে সে নিজে বন্দর সিরাজউদ্দৌলা ক্লাব মার্কেটে সুন্দরবন কুড়িয়া সার্ভিস এজেন্টের তালা খুলে দোকানে থাকা ৪টি স্মার্ট ফোন এর পার্সেল এবং ১৫টি গিফট পার্সেলসহ দোকানে ক্যাশ বক্সে থাকা নগদ ৭০,০০০/- (সত্তর হাজার) টাকা লুট করে বাড়িতে রেখে পুনরায় উক্ত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

পরে পাওনাদার ও তার ২ সহযোগী বিকেল ৫টায় মাদকসেবন করার জন্য মাঠের পাশে থাকা ঝোপের আড়ালে গেলে ওই সময় দেনাদার তপন চক্রবর্তী কৌশলে সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে প্রান রক্ষা পায়।  
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স ন দরবন ক র য় ন দ র বন ধ উল ল খ ত ব যবস য় সহয গ

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’

পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে। 

যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে। 

রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”

তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।

শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’

ঢাকা/শহিদুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • সুন্দরবনের বড় গেছো প্যাঁচা