অর্থকষ্টে গয়না বিক্রি করেছিলেন অপু বিশ্বাস
Published: 30th, August 2025 GMT
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। এক সময় সিনেমার শুটিংয়ে ব্যস্ত দিন কাটলেও, জীবনের পথে তাকে ছুঁয়ে গেছে দুঃসময়ের ছায়া। অর্থকষ্টে কেটেছে দিন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই অভিজ্ঞতার কথা অকপটে জানালেন তিনি।
সময়টা ২০১৭ সাল। সন্তান আব্রাম খান জয়ের জন্মের পর ভারত থেকে দেশে ফেরেন অপু। তিনি বলেন, “ছেলেকে নিয়ে দেশে ফেরার পর হাতে একেবারেই টাকা পয়সা ছিল না, ব্যাংকে তো দূরের কথা। তখন বুঝেছি যাদের অর্থের অভাব আছে, তারা প্রতিদিন কীভাবে হিসেব করে চলে। আমিও সেই থেকে মিতব্যয়ী হয়েছি।”
অর্থকষ্ট মেটাতে গয়না বিক্রি করতে হয়েছিল নায়িকাকে। সেই স্মৃতিচারণ করে অপু বিশ্বাস বলেন, “আমি অনেক বেশি সোনার গয়না পরি। খুব ভালো লাগে। তাই সিনেমা করার সময় দেশে-বিদেশে যেখানেই পছন্দ হতো কিনে ফেলতাম। শখে কেনা সেই গয়না পরে বাজে সময়ে ভরসা দিয়েছে। অনেকগুলো গয়না বিক্রি করে ভালো অঙ্কের টাকা পেয়েছিলাম। যা দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি। এরপর আবার কাজে ফিরে ধীরে ধীরে নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি।”
বর্তমানে অপু বিশ্বাস স্বাবলম্বী। শোবিজের পাশাপাশি এখন তিনি নিজস্ব ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
২০০৫ সালে আমজাদ হোসেনের পরিচালনায় ‘কাল সকাল’ সিনেমার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হয় তার। তবে প্রকৃত অর্থে তিনি আলোচনায় আসেন ২০০৬ সালে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনীত ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবির মাধ্যমে। ব্যবসাসফল এই সিনেমা ঢালিউডে নতুন এক জনপ্রিয় জুটির জন্ম দেয়— শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। এরপর একসঙ্গে আরও অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন দুজন।
ঢাকা/রাহাত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।