বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘দেশের স্থিতিশীল পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে অথবা জটিল করে তোলা হচ্ছে। এখনো সময় আছে, আমাদের সতর্ক হওয়া দরকার। পরাজিত পলাতক অপশক্তি কিন্তু সুযোগের অপেক্ষায় ওঁৎ পেতে রয়েছে।’’

রবিবার (৩১ আগস্ট) বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘বিএনপি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভাচুয়্যালি যুক্ত হয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌথবাহিনীর অভিযান

ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে পবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আলোচনা সভায় দেশের বর্তমান পরিস্থিতি তু্লে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘‘বিবেকের আদালতে আজ আমাদের আত্মজিজ্ঞাসা করা দরকার, নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না— এই ধরনের উচ্চারণ ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির ঐক্যকে দুর্বল করবে নাকি পলাতক ফ্যাসিবাদী অপশক্তির পুনরুত্থানের প্রাসঙ্গিকতা তৈরি করবে।’’  

রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘‘পলাতক স্বৈরাচারের মতো বিএনপির বিজয় ঠেকানোর অপরাজনীতির পরিবর্তে আসুন আগে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার গঠন করি। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর আরো সকল যৌক্তিক দাবিগুলোর সমাধানের পথ খুঁজি।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘রাষ্ট্র রাজনীতিতে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শর্ত শিথিল করে নির্বাচনের পথে হাঁটাই এখন সময়ের দাবি। জনগণের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করে নির্বাচনকেন্দ্রিক গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যমে যদি আমরা রাষ্ট্র এবং সমাজে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারি তাহলে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক দাবিগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়নের পথ সহজ হয়ে যাবে।’’

তারেক রহমান বলেন, ‘‘যতক্ষণ পর্যন্ত একটি অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরাসরি ভোটে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়। প্রায় এক বছর আগে আমি বলেছিলাম, আগামী নির্বাচনকে ঘিরে অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে। জনগণ লক্ষ্য করতে শুরু করেছেন, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ বিনষ্ট করার ক্ষেত্রে সেই অশুভ শক্তির অপতৎপরতা সাম্প্রতিক সময় ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।’’ 

বিএনপি দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানোর কারণ ব্যাখ্যা করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘কারণ বিএনপি মনে করে আগে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রয়োজন। জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত নির্বাচিত সরকার জনপ্রত্যাশা পূরণে যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে পরবর্তী নির্বাচনে জনগণ ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের সুযোগ পাবে। যা গণতান্ত্রিক বিশ্বে প্র্যাকটিস করা হয়ে থাকে।’’ 

অন্তর্বর্তী সরকার যত বেশিদিন ক্ষমতায় থাকবে, তাদের দুর্বলতাও তত বেশি দৃশ্যমান হতে থাকবে বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা যত বেশি প্রতীয়মান হবে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানবিরোধী অপশক্তি ৫ আগস্ট নিয়ে তত বেশি বিভ্রান্তি সৃষ্টির সুযোগ পাবে।’’ উদাহরণ হিসেবে তিনি গণপরিষদ সভাপতি নুরুল হক নূরের ওপর হামলাসহ সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার কথা বলেন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘‘মব ভায়োলেন্স আমরা কেউ প্রশ্রয় দেব না। নারীর সম্মান, মর্যাদা এবং অধিকারের প্রতি শহীদ জিয়া, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতিটি সৈনিক সংবেদনশীল এবং শ্রদ্ধাশীল থাকবেন।’’ 

ঢাকা/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণত ন ত র ক পর স থ ত র জন ত ক জনগণ র সরক র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’

আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।

জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।

জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।

জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।

এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।

জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।

জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • রোহিঙ্গা সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • জামায়াত কীভাবে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলে: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
  • ফরিদপুরে সীমানা নিয়ে ডিসির চিঠি, এলাকাবাসীর ৫ দাবি
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ