খাগড়াছড়ি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. আল রাফিকে (১১) অপহরণের সাড়ে ছয় ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে।

রবিবার (৩১ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জেলার পানছড়ির মোল্লাপাড়া এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।

আরো পড়ুন:

কাকরাইলে দুটি রাজনৈতিক দলের সংঘর্ষে সৃষ্ট সহিংস পরিস্থিতি প্রসঙ্গে আইএসপিআরের বক্তব্য

ডাকসু নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রতিযোগিতা চলছে: আব্দুল কাদের

এর আগে, একইদিন সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে জেলা শহরের চেঙ্গী স্কোয়ার এলাকা থেকে শিশুটিকে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি করলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকাল ১১টার দিকে শিক্ষার্থী আল রাফিকে অপহরণ করা হয়। পরে মুক্তিপণের জন্য শিশুটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অপহরণকারীরা। বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানানো হয়। এর পরপরই খাগড়াছড়ি সদর জোন অপহৃতকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে।

বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পানছড়ি আর্মি ক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন মাহফুজুল ইসলামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল পানছড়ির মোল্লাপাড়া ব্রিজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহৃত শিশুকে উদ্ধার করে। এসময় তারা অপরণকারী খাগড়াছড়ি সদরের মোহাম্মদপুরের আব্দুর রহিমের ছেলে বাদশা মিয়াকে (২৮) আটক করে।

বাদশা মিয়ার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পানছড়ি বাজারে অভিযান চালিয়ে পানছড়ির ইটখোলা গ্রামের হানিফ হোসেনের ছেলে কামরুল হাসানকে (৩২) আটক করা হয়। 

এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী খাগড়াছড়ি সদরের মোহাম্মদপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আব্দুল মালেক মিয়া (মালু) এখনো পালাতক। 

খাগড়াছড়ি সদর জোনের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার দেলোয়ার হোসেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, পলাতক অপহরণকারীকে ধরতে সেনাবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। রাত ১০ টায় সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি সদর জোন থেকে আটককৃতদের খাগড়াছড়ি সদর থানায় সোপর্দ করা হয়।

খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা দুইজনকে থানায় হস্তান্তরের কথা স্বীকার করে জানান, আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ঢাকা/রূপায়ন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উদ ধ র আটক অপহরণ উদ ধ র প নছড়

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে ‘অপহরণ’, ফেনী থেকে মিলল কাস্টমস কর্মকর্তার লাশ

২০১৯ সালের ৭ মে চট্টগ্রাম থেকে ‘অপহৃত’ হয়েছিলেন কাস্টমস কর্মকর্তা আবদুল আহাদ (৪৬)। এরপর তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরিবারের দাবি, আবদুল আহাদের মুক্তির জন্য অপহরণকারীদের মুক্তিপণও দিয়েছিল তারা। তবে ফেরত পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত ছয় বছর পর গতকাল বুধবার আহাদের মরদেহ মিলেছে ফেনীতে।

পুলিশ জানায়, গতকাল দুপুরে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে আহাদের মরদেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের ধারণা ছিল, আহাদ দিনমজুরের কাজ করেন। তবে তাঁর পকেটে থাকা একটি বেসরকারি ব্যাংকের হিসাব নম্বর থেকে আসল পরিচয় পাওয়া যায়। এরপর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে পুলিশ পরিবারকে খবর দেয়।

নিহত ব্যক্তির পরিবার সূত্র জানায়, আবদুল আহাদ মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার ভূইগাঁও ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের মো. ইমানি মিয়ার ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও দুই কন্যাসন্তান রয়েছে। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি একটি কলেজের প্রভাষক ছিলেন। এরপর কাস্টমস কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। কাস্টমস কর্মকর্তা হিসেবে তিনি প্রথমে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শেষে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যোগ দেন। সেখান থেকে তিনি নিখোঁজ হন।

নিহত আহাদের ছোট বোন নাঈমা নাসরিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই চট্টগ্রামে একাই থাকতেন। সেখান থেকেই নিখোঁজ হন। ২০১৯ সালের ৭ মে ভোরে তাঁর ভাবিকে মুঠোফোনে জানানো হয় ভাইকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীদের তাঁর ভাবি মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকাও দেন। তবে তাঁর ভাইকে ফেরত পাওয়া যায়নি।

নাঈমা নাসরিন দাবি করেন, তাঁর ভাই আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন। তবে দলীয় কোনো পদে ছিলেন না। তাঁর ভাইকে কেন অপহরণ করা হয়েছে, কেন গুম করা হয়েছে তাঁরা জানেন না। এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তাঁরা।

লাশ ফেনীতে কীভাবে এল, জানে না পুলিশ

নিহত আবদুল আহাদের ফেনীর ছাগলনাইয়া কীভাবে এসেছে, তা আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি এত দিন আহাদ কোথায় ছিলেন, এর কোনো ব্যাখ্যাও তাঁরা দিতে পারেনি। পুলিশের দাবি, আহাদের শরীরে কোনো ধরনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণজনিত কোনো কারণে মৃত্যু হয়েছে বলে তাদের প্রাথমিক ধারণা।

নিহত আহাদের ভাগনে মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণের ঘটনার পর তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। তবে তাঁর মামার সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাঁরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার শাস্তি চান।

জানতে চাইলে ছাগলনাইয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহ আলম বলেন, নিহত কাস্টম কর্মকর্তার ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল বাশার বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে ছয় বছর আগে অপহরণের যে বিষয়টি জানানো হচ্ছে, সে বিষয়ে পুলিশ খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা তাঁরা নেবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাতক্ষীরায় ৮ দিনেও খোঁজ মেলেনি অপহৃত কিশোরীর
  • ছয় বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে ‘অপহরণ’, ফেনী থেকে মিলল কাস্টমস কর্মকর্তার লাশ