কদম রসূল সেতুর নকশা সংশোধনের দাবিতে মানববন্ধন
Published: 3rd, September 2025 GMT
কদম রসূল সেতুর নকশা যথাযথ সমীক্ষা এবং সংশোধন পূর্বক পশ্চিম অংশের মুখ পরিবর্তন করার দাবিতে আবারও কালিরবাজার, দিগুবাবু বাজার ব্যবসায়ী, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এবং এলাকাবাসীসহ ১৩টি সংগঠন মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) কালিরবাজার ও ফল পট্টি সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জ কলেজ এবং হাইস্কুল এলাকায় কালিরবাজার, দিগু বাবুবাজার ব্যবসায়ী, এলাকাবাসীসহ সাধারণ মানুষের অংশ গ্রহনে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন এমন সরূ এবং ব্যস্ততম সড়কে সেতু হলে অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার মতো রাস্তা থাকবে না। এখনই বর্তমানে এ সড়কে গাড়ি চালিয়ে চলাফেরা দূরের কথা পায়ে হেটে বাঁচা নিয়ে স্কুল ছুটি হলে যাওয়া অসম্ভব।
আমরা বেশ কিছু দিন যাবত এ সেতু নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে আমাদের আশংকার কথা প্রকাশ করেছি। সিটিকরপোরেশন প্রশাসক বরাবর, জেলা প্রশাসক বরাবর এবং এলজিআরডি বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ দুর্ভোগ তুলে ধরেছি।
সর্বশেষ আমরা উক্ত এলাকার ১৩টি সংগঠনের পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাধ্যমে উপদেষ্টা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বরাবর আমাদের আশংকার কথা জানিয়েছি।
গত সপ্তাহে (মঙ্গলবার) নারায়ণগঞ্জ এনসিপির প্রতিনিধিরা সিটি করপোরেশনের সদ্য বিদায়ী প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করে নগরবাসীর জন্য কদম রসূল সেতুর পশ্চিম অংশের সংযোগ মুখ নিয়ে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হবে অবগত করেন এবং সমাধানের জন্য তাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।
সিটি করপোরেশন বাজেট ঘোষণা অনুষ্ঠান পরবর্তী "আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী" নগরবাসীর আপত্তি প্রসঙ্গ তুলে ধরে কদম রসূল সেতুর পশ্চিম অংশের সংযোগ মুখ সিরাজউদ্দৌলা সড়ক দিয়ে না দিয়ে সেতুর লেন্ডিং ৫নং ঘাট হয়ে টার্মিনালে নামানোর সুপারিশ করে।
তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, শহরের বৃহৎ দুইটা পাইকারী বাজার দিগুবাবু বাজার এবং কালিরবাজার সিরাজউদ্দৌলা সড়কের উপর অবস্থিত তার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল, নারায়ণগঞ্জ কলেজ, মসজিদ মন্দির, পোষ্ট অফিস সহ বহু প্রতিষ্ঠান অবস্থিত।
মানববন্ধনে বক্তারা সাংবাদিকদের সামনে পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনের সর্তক হুশিয়ার উচ্চারণ করেন।
উল্লেখ, দীর্ঘদিন যাবত কালিরবাজার ব্যবসায়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ - মন্দির, এলাকাবাসীরা কদম রসূল সেতু নির্মানে যথাযথ সমীক্ষার অভাব রয়েছে অভিযোগ করে আসছিলেন। বর্তমান সেতুর নকশা অনুসারে, কদম রসূল সেতুর পশ্চিম অংশের ল্যাংডিং সংযোগ সিরাজউদ্দৌলা সড়ক হয়ে নারায়ণগঞ্জ কলেজের সামনে নামানো হবে। অথচ নারায়ণগঞ্জ কলেজের একশত মিটার পরেই ফলপট্টি এলাকায় রেল ক্রসিং অবস্থিত। রেল ক্রসিং এর কারনে প্রায় সময় ছোট ছোট দূর্ঘটনা ঘটে।
যানযটের কারনে ২০২১ সালের ২১শে ডিসেম্বর এমন এক মর্মান্তিক এই রেল ক্রসিং এর উপর আনন্দ বাস দূর্ঘটনায় ২ নিহত সহ বিশজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী হাজী মো নাজির খানের সভাপতিত্বে ও সাবেক কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মো রবিন হোসেনের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন রফিউর রাব্বি,আহবায়ক নারায়ণগঞ্জ নাগরিক আন্দোলন, বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এ বি সিদ্দিক, সভাপতি নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটি। উপস্থিত বক্তব্য রাখেন কালিরবাজার ঔষধ মার্কেট ব্যবসায়ী আকবর হোসেন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডা.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ক ল রব জ র ব যবস য় উপস থ বর বর
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০
নারায়ণগঞ্জ শহরে যানজট নিরসনে সড়কে কাজ করা শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যাটারিচালিত রিকশা (ইজিবাইক) চালকরা হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে ইজিবাইক চালকদের সাথে সংঘাতে জড়ালে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় ইজিবাইকচালকরা প্রায় দুই ঘণ্টা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড অবরোধ করে রাখেন। তাদের অবরোধে পুরো শহরজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের চাষাঢ়া ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রবেশ গেটে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষার্থী ও ইজিবাইক চালকদের প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে বিষয়টি সমাধান হয়।
এদিকে আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৯ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলো- মোঃ আবু সাঈদ (১৯), মারুফ (১৯), আসিফ (৩০), মাহিম (২২), ফয়সাল আহমেদ (২৮), হুমায়ন কবির (২৬), এনামুল হক শান্ত (২৩), শাহীন খন্দকার (২২) ও নুহেল মুন্সী আপন (২২)। তবে আহত ইজিবাইক চালকদের নাম পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থীরা চাষাড়ায় ঢুকতে বাঁধা দেয় ইজিবাইক চালকদের। এ নিয়ে কথাকাটাকিাটি হয় উভয়ের মধ্যে এক পর্যায়ে ইজিবাইকরা চালকরা সংঘবদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ করতে গেলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ও সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অনেকেই আহত হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ইজিবাইক চলকরা সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়ে হাজার হাজার যাত্রী সাধারণ। পরে আইনশৃংখলাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এদিকে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, সংঘর্ষের সময় ইজিবাইক চালকদের অনেকেই তাদের গাড়ির সিটের নিচ থেকে লাঠি ও লোহার রড বের করে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়।
ধারণা করা হয়, আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল ইজিবাইক চালকরা যে শিক্ষার্থীদের উপর সুযোগ পেলেই হামলা করবে। কারণ গত এক দেড় মাস ধরেই চাষাড়ায় ইজিবাইক ঢুকতে বাধা দিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা। এতে ক্ষোভ জমতে থাকে ইজিবাইক চালকদের মধ্যে। আজকে তারা সুযোগটি কাজে লাগিয়েছে।
ওদিকে যানজট নিরসনে কাজ করা শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘আমরা এক মাস ধরে শহরের যানজট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি। চেম্বার অব কমার্স এবং বিকেএমই থেকে আমাদেরকে ট্রাফিক মনিটরিং সেলে দেওয়া হয়। আমাদের দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকেই বড় অটোরিকশাগুলো চাষাঢ়ায় প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।
কিন্তু তারা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চাষাঢ়ায় প্রবেশ করেন। পরে বাধা দিলে তারা আমাদের ওপর ক্ষেপে যান। এবং পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
তবে উজ্জল নামে এক অটোরিকশাচালক জানায়, ‘আমাদের চাষাঢ়া যাওয়া নিষেধ। আমরা নিষেধ উপেক্ষা করে চাষাঢ়া গেছি, এটা আমাদের অপরাধ। কিন্তু তারা আমাদের অটোরিকশার গ্লাস ভেঙে দিয়েছে। গ্লাস ভাঙার কারণ জানতে চাইলে তারা আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমাদের অনেককে তারা মারধর করেছে। কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি আছে।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ভালো একটি সমাধানে আসা সম্ভব হয়েছে। আলোচনা সভায় দুই পক্ষই ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জেলা প্রশাসনের সব সিদ্ধান্ত মানতে একমত হয়েছেন। এ ঘটনায় একটি কমিটি গঠন করা হবে।