নড়াইলে মুন্নি হত্যারহস্য উন্মোচন, প্রেমিক গ্রেপ্তার
Published: 5th, September 2025 GMT
নড়াইলের নড়াগাতিতে মুন্নি খানম হত্যারহস্য উন্মোচন করে তার প্রেমিক সোহেল সরদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) যশোর।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সোহেল সরদারকে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে নড়াগাতি থানার ডুমুরিয়া পশ্চিমপাড়ার সামাদ সরদারে ছেলে। ওইদিন নিহত মুন্নির মা বাদী হয়ে নড়াগাতি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন যশোরের পক্ষ থেকে এ সব তথ্য জানানো হয়।
পিবিআই যশোর জানায়, নড়াগাতির শিমুল মিয়ার মেয়ে মুন্নির সঙ্গে খুলনা জেলার তেরখাদা থানার হৃদয় ফকিরের বিয়ে হয়। গত ২৯ আগস্ট মুন্নি বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসে। ওই দিনই সে শ্বশুরবাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর আর তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর পরিবারের লোকজন থানায় জিডি করে। পরে ২ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ নলামারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে পরিত্যাক্ত পুকুর থেকে মুন্নির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এরপর পুলিশ হত্যারহস্য উন্মোচনে তদন্তে নামে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পিবিআই যশোর জেলা পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন শুক্রবার (৫সেপ্টেম্বর) সকালে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল জানিয়েছে মুন্নির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মুন্নি বাড়িতে এলে ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রেমের টানে তারা নলামারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে দেখা করে। এ সময় তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হলে সোহেল মুন্নিকে হত্যা করে ডোবায় কচুরিপানার মধ্যে ফেলে দেয়।
ঢাকা/শরিফুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প ট ম বর
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।