পাবনার চাটমোহরে সামাদ সওদা মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সুপার আব্দুল ওয়াহহাবকে স্থায়ী বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদের সামনে মাদ্রাসার অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

আরো পড়ুন:

রাবি ছাত্রীদের নিয়ে ছাত্রদল নেতার কটূক্তির প্রতিবাদে ইবিতে মানববন

জবি সংলগ্ন অবৈধ বাসস্ট্যান্ড অপসারণে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

পরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শতাধিক অভিভাবক অংশগ্রহণ করেন।

এর আগে, গত ২০১৭ সালে নৈতিকস্থলন ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হন মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মাদ্রাাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আব্দুল ওয়াহহাব। গত ১৯ আগস্ট বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ছালেহ আহমাদ তার দপ্তরের বামাশিবো/প্রশা/পাবনা-১২৬/৮৮ নং স্মারকপত্রে তাকে স্বপদে বহালের নির্দেশ দেন। এরপরেই ফুঁসে ওঠেন ওই মাদ্রাসার অভিভাবক, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে স্থানীয়রা। 

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, অভিভাবক সাইদুল ইসলাম, কুতুব উদ্দিন, রবিউল করিম গোলাম, আব্দুল মোতালিব, হাসানুজ্জামান সবুজ, ছাত্র প্রতিনিধি ভি ই ক্যাস্ট্রো সাগর, শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস, সাদিয়া খাতুন, সিনথিয়া খাতুন প্রমুখ।

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ২০১০ সালের ৪ অক্টোবর যোগদানের পর থেকে মো.

আব্দুল ওয়াহহাব নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন, নিয়োগ বাণিজ্যে লিপ্ত ছিলেন এবং প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

এ ধরনের দুর্নীতি, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ ও নারী কেলেঙ্কারীর সঙ্গে জড়িত থাকা ব্যক্তিকে পুনর্বহাল করা হলে মাদ্রাসার নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করেন বক্তারা। তাই আব্দুল ওয়াহহাবকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুবি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আবদুল ওয়াহহাব স্যার আমাদের মাদ্রাসার এক ম্যাডামের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের পর বিয়ে করেন। পরে ওই ম্যাডামের জীবন নষ্ট করে দেন। এছাড়া তিনি প্রতিষ্ঠানে অনেক অনিয়ম করেছেন। এই মাদ্রাসায় আব্দুল ওয়াহহাব স্যার যোগদান করলে আমরা এই প্রতিষ্ঠানে আর পড়ব না। আমাদের অভিভাবকরাও পড়াবে না।

অভিভাবকরা বলেন, নারী কেলেংকারির সঙ্গে জড়িত এমন সুপার আবারো যোগদান করলে আমরা আমাদের সন্তানকে পড়াব না। তার চারিত্রিক অবক্ষয়ের কারণে আব্দুল ওয়াহহাবকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু তিনি প্রভাব খাটিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করে আবারো মাদ্রাসায় যোগদানের পাঁয়তারা শুরু করেছেন। আমরা আব্দুল ওয়াহহাবকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।

জানতে চাইলে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, “স্মারকলিপি পেয়েছি, কিন্তু বিস্তারিত জানা নেই। পুরো বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সুপার আব্দুল ওয়াহহাব বলেন, “আমি এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে চাচ্ছি না। ওরা যা পারে করুক, মানববন্ধন করুক, স্মারকলিপি দিক, যা ভালো মনে করে করুক, যত পারে লেখুক। আমি আর এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাচ্ছি না।”

ঢাকা/শাহীন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বরখ স ত বরখ স ত কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে ‍শিবচর থানায় মামলাটি করেন।

এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।

মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় চান না সাত কলেজের শিক্ষকেরা
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের
  • বন কর্মকর্তার ১৭ বিয়ে: আদালতে মামলা, তদন্তে পিবিআই
  • শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে ৫টি পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাঁর মাকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন