ছাত্রদলসহ কয়েকটি সংগঠন আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে: সাদিক কায়েম
Published: 9th, September 2025 GMT
নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’- এর সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মো. আবু সাদিক কায়েম।
তিনি বলেন, “ভোট কেন্দ্রের ১০০ গজের ভেতরে স্লিপ ও লিফলেট বিতরণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু ছাত্রদলসহ অনেক সংগঠনের প্রার্থী সেই নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে স্লিপ ও লিফলেট বিতরণ করছেন।”
আরো পড়ুন:
আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে, তবে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী: উমামা ফাতেমা
পূরণ করা ব্যালট দেওয়া সেই পোলিং অফিসারকে প্রত্যাহার
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভূতত্ব ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
সাদিকে বলেন, “শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ জোটের প্রার্থীদের ওপর আস্থা রাখছে। সেটা তারা ঘোষণা দিচ্ছে। একই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে সব প্রার্থীদের মধ্যে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আমরা বলতে চাই, ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে জুলাই বিজয় হতে যাচ্ছে। জুলাই শহীদের যে আঙ্খকা সেই আঙ্খকার একটি বিশ্বিবদ্যালয় পেতে যাচ্ছি। সে জায়গা থেকে সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করার জন্য বলছি।”
নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালন বিষয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনকে আরো বেশি দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গায় আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে দেখতে পাচ্ছি। ১০০ মিটারের মধ্যে কোনো রকম স্লিপ বিতরণ করা যাবে না কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি ছাত্রদলসহ আরও কিছু সংগঠন সেই নিয়ম মানছে না। তারা ১০০ মিটারের মধ্যে স্লিপ দিচ্ছে। ভেতরেও প্রবেশ করছে। এখানে দায়িত্বশীল আচরণ করার দরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে আরো কঠোর হওয়া দরকার।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করব আপনারা ভোট দিতে আসেন। আমরা চাই শতভাগ শিক্ষার্থীরা ভোট কেন্দ্রে আসুক। নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিক। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ জোটের ওপর আস্থা রাখবে। আমাদের বিজয় হবে ইনশাআল্লাহ।”
সবার জন্য লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “একটি ছাত্র সংগঠনকে যেতে বাড়তি সুবিধা দেওয়া না হয়। সবাই যাতে সমান অধিকার পায় তা নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে।”
ঢাকা/সৌরভ/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’