পল্লবীতে যুবদল নেতা হত্যার ঘটনায় আটক মোক্তারের মৃত্যুর বিষয়ে যা
Published: 21st, November 2025 GMT
রাজধানীর পল্লবীতে গুলি করে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়া হত্যার ঘটনায় আটক মো. মোক্তার হোসেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা গেছেন।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) মোক্তারের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে ডিএমপি। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেওয়ায় অটোচালককে পিটিয়ে হত্যা
ছেলে খুনের ঘটনায় মামলা করলেন বিচারক
পুলিশ জানিয়েছে, মোক্তার হোসেনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে তিনি অসুস্থ বোধ করলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে পুনরায় তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে মোক্তারকে খাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করা হলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পুলিশ সদস্যরা দ্রুত তাকে আবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকগণ তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানিয়েছেন, মোক্তারের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে। তার মৃত্যুর বিষয়ে তদন্ত করার জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মো.
গত সোমবার (১৭ নভেম্বর) পল্লবীর একটি দোকানে কয়েকজন অস্ত্রধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে গোলাম কিবরিয়া নিহত হন। এ ঘটনায় পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ ৭-৮ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে পল্লবী থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী। সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে নজরুল, মাসুম ও জামান নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হত্যায় জড়িত থাকার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেন এবং ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি মোক্তার হোসেনের হেফাজতে আছে বলে জানান। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী মোক্তারকে আটক করতে ডিবির একটি দল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পল্লবী এলাকায় একটি গ্যারেজে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে আটক করা হয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা তাকে কিল-ঘুষি মারেন। পরে মোক্তারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পল্লবীর একটি রিকশা গ্যারেজ থেকে আট রাউন্ড পিস্তলের গুলি উদ্ধার করে ডিবি।
ঢাকা/এমআর/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ম মল ড এমপ ঘটন য় তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ভূমিকম্পে নিহত ৬, আহত দেড় শতাধিক
ভূমিকম্পে তিন জেলায় (ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী) ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ২ জন শিশু। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। নিহতদের মধ্যে পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় ৩ জন, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক জন এবং নরসিংদীতে ২ জন রয়েছেন।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্পের সময় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
আরো পড়ুন:
ধামরাইয়ে হেলে যাওয়া সেই ভবনটি আরো কাৎ হয়ে পড়ল
ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭।
ঢাকায় মৃত্যু ৩
পুরান ঢাকায় সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্পে একটি ৮ তলা ভবনের ছাদের রেলিং ধসে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বংশাল থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) আশিস কুমার ঘোষ এ তথ্য জানিয়ে বলেন, “একটি ভবনের ছাদের রেলিং ধসে নিচে পড়ে। এতে তিন পথচারী গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তাৎক্ষণিক নিহতদের নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।”
স্থানীয়রা জানান, নিহতরা সড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হয়েছেন।
নরসিংদীতে নিহত ২
নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় মাটির দেওয়াল ধসে চাপা পড়ে কাজম আলী (৭৫) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। নরসিংদীর গাবতলিতে আরো এক জনের মৃত্যু হয়েছে। তাৎক্ষণিক তার নাম পরিচায় জানা যায়নি।
এছাড়া এই জেলায় ভূমিকম্পে আতঙ্কিত হয়ে হুড়োহুড়ি করে বিভিন্ন ভবন থেকে নামার সময় অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জে শিশুর মৃত্যু
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভূমিকম্পে দেওয়াল ধসে ফাতেমা (১) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় শিশুর মা কুলসুম বেগম ও প্রতিবেশী জেসমিন বেগম আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। নিহত ফাতেমা গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের ইসলামবাগ পাঁচ নম্বর ক্যানেল এলাকার আব্দুল হকের মেয়ে।
আহত দেড় শতাধিক
ভূমিকম্পে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দেড় শতাধিক ব্যক্তি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে অন্তত ২০ জন আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থী আরাফাত (২০) ও নুরুল হুদা (২০), হাজী মুহম্মদ মহসীন হলের তানজিল হোসেন (২৬), সাদিক শিকদার (২৬), তানভীর আহমেদ (২৫) ও ফারহান তানভীর রাজিব (২৪)।
এছাড়া ঢাকাসহ অন্যান্য এলাকা থেকে আহত হয়ে এসেছেন—তানভীর (২২), সুবিয়া (১৪), সোহেল (৩৫), হারুনুর রশিদ (৫৬), আবুল খায়ের (৬০), অজ্ঞাতপরিচয় রিকশাচালক (৪০), হারুনুর রশিদ (৫৫), রিপন (২৮), বিল্লাল (৬), ফারজানা তানভীর (২৩), প্রভা (১৮), গালিব (১৮), মধুসুদন (৩০), সজীব (২২), নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আবুল খায়ের (৩০) ও ইব্রাহীম (২৫)।
আরমানিটোলার ঘটনায় আরো ১০ জনেরও বেশি লোক মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
নরসিংদীতে আহত হয়েছেন শতাধিক। তারা নরসিংদী সদর হাসপাতালসহ জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেছেন। আহতদের মধ্যে কয়েক জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তায় এলাকায় ভূমিকম্পের সময় তাড়াহুড়া করে নামার সময় একটি কারখানার ৬ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে হাইজাদী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন গ্রামে একাধিক বাড়ির দেয়াল ভেঙে গেছে। এতে অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন।
ঢাকা/এসবি