‘খাদ্য-সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও প্রথাগত উৎপাদন ব্যবস্থা রক্ষা করা জরুরি’
Published: 21st, November 2025 GMT
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “দেশের খাদ্য-সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও প্রথাগত উৎপাদন ব্যবস্থাকে রক্ষা করা জরুরি।”
বৈচিত্র্যকে জাতীয় শক্তি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যত বৈচিত্র্য থাকে, দেশ তত সুন্দর হয়।”
আরো পড়ুন:
পরিবেশ রক্ষায় পাটকেন্দ্রিক শিল্প–সংস্কৃতির প্রসার জরুরি: রিজওয়ানা
ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু
পলিথিন শপিং ব্যাগ বিষয়ে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এটি অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।”
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর মীরপুর পার্বত্য বৌদ্ধসংঘ কমপ্লেক্সে আয়োজিত ‘আদিবাসী খাদ্য ও শস্য মেলা ২০২৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “জনবল সীমিত থাকলেও পরিবেশ মন্ত্রণালয় অবৈধ ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে ধারাবাহিকভাবে সমন্বিত অভিযান পরিচালনা করছে, বিশেষ করে বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলাগুলোতে। এসব অভিযানে বাধা, সড়ক অবরোধ ও হামলার ঘটনাও ঘটেছে।”
“রাষ্ট্র এখন পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে বাধা দিচ্ছে—এটাই আশার দিক,” তিনি মন্তব্য করেন।
পাহাড় কাটা, ঝাউবাগান ধ্বংস ও প্রাকৃতিক বন উজাড়কে ঝুঁকি বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, “এগুলো কোনোভাবেই ঐতিহ্য রক্ষার উপায় হতে পারে না।”
কৃষকদের স্বার্থে বিভাগীয় পর্যায়ে বিপণন কেন্দ্র স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি জোর দিয়ে উল্লেখ করেন। পরিবেশ, সংস্কৃতিবিষয়ক ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তিনি যথাযথ সুপারিশ করবেন বলেও জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস; পার্বত্য বৌদ্ধ সংঘের আহ্বায়ক মেজর (অব.
উদ্বোধন শেষে পরিবেশ উপদেষ্টা মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন এবং অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এদিন অনুভূত ভূমিকম্প বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে। পাহাড় ও জলাশয় রক্ষা করতে হবে।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
নাটাই বাংলাদেশের হাতে
ঢাকা টেস্টের সকালের প্রতিটি সেশন কিছুটা না কিছু ঘটে যাচ্ছে। প্রথম দুদিন ছিল রোমাঞ্চকর। শুক্রবারের তৃতীয় দিনেরটা একেবারেই অপ্রতিভ।
মুশফিকুর রহিমের শততম টেস্ট উপলক্ষে প্রথম দিন ছিল সাজসাজ রব। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ইতিহাসের পাতায় মুশফিকুর। দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই তার সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষা। ৯৯ রানে নট আউট থেকে দিন শুরু করে আট বল খেলেই পৌঁছে যান শততম টেস্টে সেঞ্চুরির মাইলফলকে।
আরো পড়ুন:
ভূমিকম্পে বন্ধ থাকল মিরপুরের খেলা
৩৬৭ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করল বাংলাদেশ
শুক্রবার তৃতীয় দিনের সকালটা ব্যাট-বলে বাংলাদেশ ও আয়াল্যান্ডের লড়াইটা ভালোই হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ ভূমিকম্পে সব কিছু গেল থমকে। খেলোয়াড়রা খেলা থামিয়ে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নেন। ড্রেসিংরুমে থাকা খেলোয়াড়রা চলে আসেন ডাগআউটে। গ্যালারি, প্রেসবক্স, হসপিটালিটি বক্স সব জায়গাতে ছোটাছুটি। এমন অপ্রস্তুত মুহূর্ত মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম সহ পুরো স্টেডিয়ামকেই নাড়িয়ে দেশকে।
পরিস্থিতি অনুকূলে আসার পর পৌনে চার মিনিট বিরতি দিয়ে আবার শুরু হয় দুই দলে লড়াই। তৃতীয় দিনের লড়াই শেষে ম্যাচের নাটাইটা বাংলাদেশের কাছে। আয়ারল্যান্ডকে ২৬৫ রানে অলআউট করার পর বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ১ উইকেটে ১৫৬ রান তুলে দিন শেষ করেছে। ২১১ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা বাংলাদেশের পুঁজিতে মোট রান ৩৬৭।
সাদমান ইসলাম ৬৯ ও মুমিনুল হক ১৯ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। ৩৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলের রান টেনে নিচ্ছেন তারা। এর আগে উদ্বোধনী জুটিতে ১১৯ রান করেছিলেন জয় ও সাদমান। ফিফটির পর জয় হাল ছেড়ে দেন। ৯১ বলে ৬০ রান করে ফেরেন সাজঘরে। দুই ওপেনারের জুটি ভালোই জমে উঠেছে। সিলেটে একমাত্র ইনিংসে ১৬৮ রানের জুটি গড়েছিলেন। ঢাকায় প্রথম ইনিংসে ৪১। এবার ১১৯।
বাংলাদেশ দিনের শেষে ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেও দিনের শুরুতে আইরিশরা দারুণ ব্যাটিং করেছিল। ৫ উইকেটে ৯৮ রানে দিন শুরু করে টাকার ও ডোহেনি প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। বাংলাদেশের দুই পেসার খালেদ ও ইবাদতকে দারুণভাবে সামলানোর পর তাইজুল, মিরাজ, মুরাদকে দেখেশুনে খেলে রান তুলে নেন। ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ ৮১ রানের জুটি গড়েন তারা।
অভিজ্ঞ তাইজুল এই জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন। আইরিশ শিবিরে জোড়া আঘাত করেন তিনি। দারুণ এক ডেলিভারিতে ডোহেনিকে বোল্ড করেন। এক বল পর আরেকটি দুর্দান্ত ডেলিভারিতে অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকেও বোল্ড করলেন বাঁহাতি স্পিনার। ৭৭ বলে চারটি চারে ৪৬ রান করে ফেরেন অভিষিক্ত ডোহেনি। ম্যাকব্রাইন খুলতে পারেননি রানের খাতা।
প্রথম সেশনে তাইজুলের জোড়া সাফল্যে বাংলাদেশ লড়াইয়ে ফিরলেও দ্বিতীয় সেশনে আবার প্রতিরোধ পায় অতিথিরা। মনে হচ্ছিল ফলোঅন এড়িয়ে যাবে। লর্কান টাকার ও জর্ডান নিল সেভাবেই ব্যাট চালাচ্ছিলেন। অষ্টম উইকেটে সবাইকে চমকে দিয়ে ১৪৫ বলে ৭৪ রানের জুটি গড়েন। বাংলাদেশ এ জুটি ভাঙে দ্বিতীয় নতুন বলে। ইবাদত হোসেনের শর্ট বলে ব্যাট সরাতে পারেননি নিল। ৮৩ বলে ৯ চারে ৪৯ রান করেন নিল।
এরপর খালেদ ও তাইজুলের দুই উইকেটে আয়ারল্যান্ড গুটিয়ে যায় সহজেই। খালেদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন অভিষিক্ত গ্যাভিন হোয়ে। তাইজুল আউট করেন হামফ্রিজকে। এই উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেটের তালিকায় এখন সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে তাইজুল ইসলাম। দুই বাঁহাতি স্পিনারের উইকেট ২৪৬টি। ১৭১ বলে ৭ চারে ৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন লর্কান টাকার।
আয়ারল্যান্ডকে ফলোঅনে না ফেলে ২১১ রানের লিড নিয়ে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে মাঠে নামে। ভালো ব্যাটিংয়ে লিড প্রায় চারশ ছুঁই ছুঁই। কতদূর যাবে এই লিড সেটা জানতে অপেক্ষা করতে হবে কাল পর্যন্ত। আগামীকাল সকালেও নতুন কোনো ঘটনা ঘটে কিনা সেটাও দেখার।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল