রিকশা চালককে থানায় নির্যাতনের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
Published: 21st, November 2025 GMT
চুরির অভিযোগে সিরাজগঞ্জে আনোয়ার হোসেন নামের এক রিকশাচালককে থানায় আটকে নির্যাতন ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে উঠেছে পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মাইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, “সলঙ্গা থানার এসআই মাইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ তদন্তের জন্য এসপি স্যার আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে ‘ঘোড়া জবাইয়ের’ চেষ্টা, আটক ১
চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে লাঞ্ছিত এসআই
অভিযুক্ত এসআই মাইনুল হোসেন সলঙ্গা থানার সেকেন্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ভুক্তভোগী আনোয়ার একই থানার দেওভোগ গ্রামের মৃত জিহাদ হোসেনের ছেলে।
অভিযোগ সূত্র জানায়, গত ১০ জুলাই রাতে এসআই মাইনুল হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ধুবিল কাটারমহল গ্রামের একটি বাড়িতে চুরির মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে আনোয়ারকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। রাতভর থানার হাজতে আটকে রাখা হয় তাকে। পরদিন সকালে তাকে থানার দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে নিয়ে মারধর করে চুরির ঘটনায় স্বীকারোক্তি নেওয়ার চেষ্টা করেন এসআই মাইনুল। স্বীকার না করায় হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানায় জুলাই আন্দোলনে হামলা ও অস্ত্র লুটের মামলায় গ্রেপ্তারের ভয় দেখানো হয়। তারপরেও কোনো তথ্য না পেয়ে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন মাইনুল।
পরবর্তীতে ১৬ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে রিকশাচালক আনোয়ারকে মুচলেকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। ছেড়ে দেওয়ার আগে, আটক করার ঘটনায় পুলিশ কোনো নির্যাতন করেনি এবং ঘুষ নেয়নি মর্মে আনোয়ারের কাছ থেকে ভিডিও রেকর্ড করে রাখেন এসআই মাইনুল।
ভুক্তভোগী আনোয়ার পুলিশের ভয়ে এতদিন বিষয়টি গোপন রাখলেও গত ১১ নভেম্বর তিনি এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ সুপার বিষয়টি সাত দিনের মধ্যে তদন্তপূর্বক প্রতিবদেন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী রিকশাচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, “মিথ্যা অভিযোগে এসআই মাইনুল আমাকে থানায় নিয়ে মারধর করার পর ১৬ হাজার টাকা নিয়ে মুচলেকায় ছেড়ে দেন। আমি গরিব মানুষ, ধারদেনা করে আমি এসআই মাইনুলকে ঘুষ দিয়েছি। ন্যায় বিচারের আশায় পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।”
অভিযোগ অস্বীকার করে সলঙ্গা থানার অভিযুক্ত এসআই মাইনুল হোসেন বলেন, “রিকশাচালক আনোয়ার হোসেনকে একটি চুরির মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ বা তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি।”
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
সিরাজদিখানে পুলিশের সামনে ছাত্রলীগ-যুবলীগের মিছিল, এসআই প্রত্যাহার
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় শেখ হাসিনার রায়ের প্রতিবাদে পুলিশের টহল দলের সামনে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের ইমামগঞ্জ বাজারে এ মিছিল করেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।
এ ঘটনায় পুলিশের এক উপপরিদর্শককে (এসআই) প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁর নাম কামরুজ্জামান সিকদার। তাঁকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে মুন্সিগঞ্জ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, সিরাজদিখান উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে আজ সকাল ৯টার দিকে ইমামগঞ্জ বাজারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে কার্যক্রম-নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অর্ধশত নেতা-কর্মী অংশ নেন। মিছিলে গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের প্রতিবাদে স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলটি ইমামগঞ্জ বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করার সময় সেখানে টহলরত পুলিশের একটি গাড়ি ছিল। তবে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ ঘটনা জানাজানি হলে টহলের দায়িত্বে থাকা সিরাজদিখান থানার উপপরিদর্শক কামরুজ্জামান সিকদারকে প্রত্যাহার করা হয়।
সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, মিছিলটি তাৎক্ষণিক হয়ে যায়। তখন ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পুলিশের একটি টহল গাড়ি যাচ্ছিল। পুলিশ কর্মকর্তা কিছু বুঝে ওঠার আগেই মিছিলের লোকজন পালিয়ে যান। এ ঘটনার পর এসআই কামরুজ্জামানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে নেওয়া হয়েছে। মিছিলে থাকা তিনজনকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।