ফরিদপুরে পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ভয়ভীতি সৃষ্টি করছে : নায়াব ইউসুফ
Published: 21st, October 2025 GMT
ফরিদপুরে পুলিশ বিএনপির নেতা–কর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ভয়ভীতি সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক নায়াব ইউসুফ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
নায়াব ইউসুফ ফরিদপুর-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। ওই আসনে সর্বশেষ সংসদ সদস্য ছিলেন হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ।
সদর উপজেলার পরমানন্দপুর বাজারে গত রোববার বিকেলে এ কে আজাদের গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। যুবদলের কর্মীরা নায়াব ইউসুফের ছবিসংবলিত লিফলেট বিতরণের একপর্যায়ে ওই হামলা চালান বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার পর ফরিদপুর জেলা যুবদলের সভাপতি রাজীব হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে প্রথমে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নায়াব ইউসুফ। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। লিখিত বক্তব্যের শুরুতে নায়াব ইউসুফ বলেন, ‘গত দুদিন যাবৎ আমাদের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভয়ভীতি সৃষ্টি করছে। ফরিদপুরের পুলিশ প্রশাসন এসব আওয়ামী দোষরকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।’
পরমানন্দপুরের ঘটনার প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে নায়াব ইউসুফ বলেন, ‘১৯ অক্টোবর পরমানন্দপুর বাজারে পূর্ব ঘোষিত ৩১ দফার প্রচারপত্র বিতরণের সময় সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এ কে আজাদের সফরসঙ্গী হিসেবে উপস্থিত হন। নিষিদ্ধঘোষিত যুবলীগ, ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে আপত্তিকর ভাষা ও স্লোগান দিয়ে আমাদের নেতা–কর্মীদের ওপর চড়াও হওয়ায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপস্থিত জনতা তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, একপর্যায়ে উৎসুক জনগণ তাদের ঘটনাস্থলে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করে। তখন সেখানে থাকা বিএনপি নেতা–কর্মী ও প্রশাসনের সাহায্যে এ কে আজাদসহ তাঁর সফরসঙ্গীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় একজন যে আমাদের দলের কেউ নয়, আখ বা স্থানীয় গেন্ডারি দিয়ে গাড়িতে হালকা আঘাত করে। আমাদের নেতা–কর্মীরা তাকে নিবৃত্ত করে গাড়িটিকে সেই স্থান ত্যাগ করার সুযোগ করে দেয়।’
আরও পড়ুনফরিদপুরে এ কে আজাদের গণসংযোগে যুবদলের হামলা, দুটি গাড়ি ভাঙচুর১৯ অক্টোবর ২০২৫এর আগে এ কে আজাদের বাড়িতে বিএনপি চড়াও হওয়ার ঘটনাকে নায়াব ইউসুফ ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, এ জাতীয় ঘটনা আগামীতে যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারে নজর দেওয়া হবে। রোববারের ঘটনা সম্পর্কে নায়াব ইউসুফ যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার সঙ্গে ভিডিও ফুটেজ মিলছে না—এ বিষয়ে জানতে চাইলে নায়াবের পাশে থাকা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া বলেন, ওই ভিডিওতে ঘটনার অংশিক এসেছে।
পরে সংবাদ সম্মেলনের এসব অভিযোগের বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয় এ কে আজাদের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনের নামে তিনি (নায়াব ইউসুফ) মিথ্যাচার করেছেন। পরমানন্দপুরে যে ঘটনা ঘটেছে, তা সব মিডিয়ায় এসেছে, পুলিশের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে। ওই দিন আমার সঙ্গে দলীয় কোনো লোকজন ছিলেন না। মিডিয়া স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবেই ভূমিকা পালন করেছে। পুলিশ যা দেখেছে সেভাবেই ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
আরও পড়ুনআওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করছি—উনি এটা প্রমাণ করুক: এ কে আজাদ২০ অক্টোবর ২০২৫এ কে আজাদ অভিযোগ করেন, ‘তিনি (নায়াব ইউসুফ) এখনো তাঁর নেতা–কর্মী দিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে বেড়াচ্ছেন। সোমবার সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের ১০ হাজার গ্রামে প্রাতরাশের দাওয়াত থাকলেও বিএনপি নেতা–কর্মীদের বিরোধিতার কারণে আমি সেখানে যেতে পারিনি। আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠান করতে গিয়ে আমি বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। আমার কর্মী, সমর্থক ও অনুসারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন য় ব ইউস ফ কর ম দ র ব য বদল র ব এনপ র আজ দ র আম দ র য গ কর র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় মাসদাইর কবরস্থান মসজিদে মাসুদুজ্জামানের দোয়া
বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় মাসুদুজ্জামানের আয়োজনে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) মাসদাইর কবরস্থান মসজিদে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় জুম্মার নামাজ আদায় ও দোয়ায় অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী, বিশিষ্ট সমাজসেবী মাসুদুজ্জামান।
জুম্মার নামাজ শেষে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা, দেশের কল্যাণ, জাতির শান্তি–সমৃদ্ধি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের অগ্রযাত্রার জন্য বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। মসজিদে উপস্থিত স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লি, সাধারণ মানুষ, মসজিদ কমিটির সদস্য এবং বিএনপি–সমর্থিত নেতৃবৃন্দও এতে অংশ নেন।
দোয়া শেষে মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ গুরুতর অসুস্থ। তাঁর দ্রুত আরোগ্য, সুস্থতা এবং দীর্ঘায়ু কামনায় আমরা জনগণের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করছি। বেগম খালেদা জিয়া শুধু একজন জাতীয় নেতা নন; তিনি বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং স্বাধীনতার প্রতীক।
আল্লাহর কাছে আমরা আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করি—তিনি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে আবারও দেশের জনগণের কল্যাণে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হন। জনগণের এই ভালোবাসা ও দোয়া নিশ্চয়ই আল্লাহ কবুল করবেন।”
মাসুদুজ্জামান মাসুদের সঙ্গে দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সবুর খান সেন্টু, আনোয়ার হোসেন আনু, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি সদস্য; হাজী ফারুক হোসেন, সাবেক কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, কৃষকদলের সভাপতি এনামুল খন্দকার স্বপন।
এছাড়াও নারায়ণগঞ্জের বিএনপির মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ কৃষকদল, যুবদল, মহিলাদল এবং সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে দোয়া মাহফিলকে আরও মর্যাদাপূর্ণ এবং প্রাণবন্ত করে তুলেছেন।
স্থানীয়দের মতে, এই আয়োজন কোনো রাজনৈতিক আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি একজন অসুস্থ জাতীয় নেত্রীর প্রতি জনগণের গভীর শ্রদ্ধা, অন্তরঙ্গ ভালোবাসা এবং মানবিক দায়বদ্ধতার প্রকাশ। তারা জানান, দেশের প্রতিটি মানুষ, দলমত নির্বিশেষে, বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনায় একতাবদ্ধভাবে প্রার্থনা করছে।
বিশেষ করে মাসুদুজ্জামান-এর মতো নেতাদের সরাসরি অংশগ্রহণ এই অনুষ্ঠানটিকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ ও হৃদয়স্পর্শী করে তুলেছে। জুম্মার নামাজ ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়ার পরে মাসুদুজ্জামান মাসুদ মাসদাইর কবরস্থানে গিয়ে তাঁর প্রয়াত বাবা-মায়ের রূহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করেন।