ফতুল্লায় গ্যাসের পাইপলাইন ফেটে অগ্নিকাণ্ড, ৮ ঘণ্টা পর সরবরাহ স্বাভাবিক
Published: 22nd, October 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকায় আট ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে পাইপলাইনের লিকেজ মেরামতের কাজ শেষ করে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। এরপর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।
এর আগে গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পঞ্চবটি বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় উড়ালসড়ক নির্মাণকাজের সময় তিতাস গ্যাসের মূল পাইপলাইন ফেটে আগুন ধরে যায়। এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি খনন করার সময় ওই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। দুর্ঘটনা এড়াতে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
দীর্ঘ সময় গ্যাস না থাকায় পঞ্চবটি, ফতুল্লা, গোদনাইল ও বিসিক শিল্পনগরীসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে আবাসিক ও শিল্প গ্রাহকেরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিকেল থেকে উৎপাদন বন্ধ রাখে। আবাসিক গ্রাহকদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের উপমহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনার পর দ্রুত মেরামতকাজ শুরু করা হয়। রাত ১১টার দিকে গ্যাসের সরবরাহ চালু হয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, উড়ালসড়ক নির্মাণকাজে অসর্তকভাবে কাজ করায় বারবার একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। তারা তিতাস ও উড়ালসড়ক নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর দাবি জানান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র সরবর হ
এছাড়াও পড়ুন:
চীনের আধিপত্য মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়ার বিরল খনিজ চুক্তি
বিরল খনিজ শিল্পে চীনের আধিপত্য মোকাবিলা করার উপায় খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র। আর তাই বিরল খনিজ ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের সরবরাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘হত্যার’ অভিযোগ কলম্বিয়ার
অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করলেন ট্রাম্প
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, এই চুক্তির আওতায় ‘প্রস্তুত’ প্রকল্পগুলোতে ক্যানবেরা ও ওয়াশিংটন ৮.৫ বিলিয়ন ডলার (১৩ বিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলার) বিনিয়োগ করবে। এই বিনিয়োগ অস্ট্রেলিয়ার খনি ও প্রক্রিয়াজাতকরণ সক্ষমতা বাড়াবে।
চুক্তির প্রাথমিক কাঠামো অনুযায়ী, আগামী ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় প্রকল্পগুলোতে দুই দেশ ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে।
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে, তবে অ্যালবানিজ বলেছেন, এই নতুন চুক্তি ‘দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে’।
এই চুক্তির পাশাপাশি সোমবার (২০ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অস্ট্রেলিয়ার যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বহু বিলিয়ন ডলারের অকাস সাবমেরিন চুক্তি নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, ‘এটি পুরোদমে এগিয়ে চলেছে’।
এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন বলেছিল, চুক্তিটি ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না তা যাচাই করা হবে, এবং তখন ধারণা করা হচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া হয়তো যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাবমেরিন কিনতে পারবে না।
তবে এবার ট্রাম্প জানিয়েছেন যে, অস্ট্রেলিয়া সাবমেরিন পেতে যাচ্ছে।
বর্তমানে বিশ্বের ৭০ শতাংশ বিরল খনিজ আহরণ এবং ৯০ শতাংশ প্রক্রিয়াজাতকরণ একাই নিয়ন্ত্রণ করে চীন। এই খনিজগুলো প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম থেকে শুরু করে কম্পিউটার চিপ ও গাড়ি, সব ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচিত। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কোম্পানি এই খনিজ হাতে পেতে চীনা সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল, যা তাদের ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।
বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি ও দুই দেশের বাণিজ্যিক টানাপোড়েনের জেরে চীন সম্প্রতি বিরল খনিজ সরবরাহ সীমিত করার পদক্ষেপ নেওয়ার পর এ ঝুঁকি আরো বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র-অস্ট্রেলিয়া বিরল খনিজ সরবরাহ চুক্তি ঘোষণার পর আজ মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার এ শিল্পের কোম্পানিগুলোর শেয়ার বেড়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ বলেন, এই চুক্তির লক্ষ্য অস্ট্রেলিয়ায় খনিজ প্রক্রিয়াজাতকারণ প্রকল্পগুলোতে মার্কিন বিনিয়োগ সহ তিন ধরনের প্রকল্পে বিনিয়োগ দ্রুততর করা।
উভয় দেশ এই খাতের কোম্পানি ও প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগের জন্য বাজারমূল্য নির্ধারণ, অনুমতি এবং সরকারি পর্যালোচনার নিয়মাবলীর মতো বিষয়গুলোতে একসঙ্গে কাজ করতেও সম্মত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র আলাদাভাবে বলেছে যে, তারা পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় বার্ষিক ১০০ টন উন্নত গ্যালিয়াম শোধনাগার নির্মাণে বিনিয়োগ করবে এবং রপ্তানি-আমদানি ব্যাংকের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ প্রকল্পগুলোকে এগিয়ে নিতে প্রায় ২.২ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই মার্কিন বিরল খনিজ সংস্থা এমপি ম্যাটেরিয়ালস এবং কানাডার ট্রিলজি মেটালস এবং লিথিয়াম আমেরিকার মতো সংস্থাগুলোতে একাধিক বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে, যাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকল্প রয়েছে।
সহায়তার বিনিময়ে দেশটির সরকার সংস্থাগুলোতে মালিকানা অংশীদারিত্ব পেয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের অন্যতম বড় খনিজ উৎপাদনকারী দেশ হলেও যুক্তরাষ্ট্রের মতো তারাও সেই খনিজ প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য চীনের ওপর নির্ভরশীল, কারণ প্রক্রিয়াজাতকরণের মধ্য দিয়েই এসব কাঁচামালকে ব্যবহারযোগ্য রূপ দেওয়া সম্ভব হয়।
ঢাকা/ফিরোজ