অ্যাডিলেডে রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজ জিতল অস্ট্রেলিয়া
Published: 23rd, October 2025 GMT
অ্যাডিলেডের গরম আলোয় বৃহস্পতিবার নতুন নায়কদের হাত ধরে জয় তুলে নিল অস্ট্রেলিয়া। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ভারতকে দুই উইকেটে হারিয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে মিচেল মার্শের দল।
অভিজ্ঞদের ব্যর্থতার দিনে তরুণ ব্যাটার কুপার কনোলি, ম্যাট শর্ট ও মিচেল ওয়েন খেলেছেন ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস। যা শেষ পর্যন্ত এনে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার রোমাঞ্চকর জয়।
আরো পড়ুন:
সবচেয়ে বড় জয়ে সিরিজ জয়ের আনন্দ
টেস্ট অধিনায়কের শর্ট লিস্টে চারজন!
এর আগে ব্যাট করতে নেমে ভারত তোলে ৯ উইকেটে ২৬৪ রান। রোহিত শর্মা ৯৭ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অ্যাডাম জাম্পা ১০ ওভারে ৬০ রানে নেন চার উইকেট। আর জেভিয়ার বার্টলেট ৩৯ রানে নেন তিনটি।
জবাবে অস্ট্রেলিয়া লক্ষ্য তাড়া করে ফেলে ৪৬.
৩৬তম ওভারে ১৮৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দল যখন বিপদে ছিল, তখনই তরুণ কনোলি ও ওয়েন গড়ে তোলেন ৫৯ রানের জুটি। দুজনেই খেলেন সাহসী ক্রিকেট। কনোলি মারেন পাঁচটি চার ও একটি ছক্কা। ওয়েন হাঁকান তিনটি ছক্কা ও দুটি চার।
মাত্র ৪২ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কনোলি। এর আগে ইনিংসের শুরুতে অস্ট্রেলিয়া দ্রুত হারায় ওপেনার মিচেল মার্শ (২৪ বলে ১১) ও ট্রাভিস হেডকে (৪০ বলে ২৮)। এরপর ব্যথাগ্রস্ত হাতে ব্যাট করতে নামা ম্যাট শর্ট ও ম্যাট রেনশো মিলে গড়েন ৫৪ রানের জুটি।
তবে সেট জুটি ভাঙে রেনশো ৩০ রানে বোল্ড হয়ে গেলে। দলের রান তখন ২২ ওভারে ৩ উইকেটে ১০৯। অল্প কিছুক্ষণ পরই অ্যালেক্স ক্যারি (৯) ফেরেন। আর শর্টও নিজের ক্যারিয়ার-সেরা ৭৪ রান করে আউট হন। এরপরই কনোলি-ওয়েনের ব্যাটে ম্যাচ ঘুরে যায়।
ওয়েন আউট হন যখন অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য দরকার ছিল মাত্র ১৭ রান। সেখান থেকে কনোলি ঠাণ্ডা মাথায় দলকে পৌঁছে দেন গন্তব্যে।
এর আগে ভারতের ইনিংসে এক বিরল মুহূর্তের সাক্ষী হয় অ্যাডিলেড। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পরপর দুটি ওয়ানডে ম্যাচে শূন্য রানে আউট হন বিরাট কোহলি। ২০০৮ সালে অভিষেকের পর এমনটা ঘটেনি কখনো। প্রথম ম্যাচে পার্থে শূন্য রানে ফিরেছিলেন। এবারও বার্টলেটের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন খালি হাতে।
বার্টলেট আজ খেলছিলেন মাত্র পঞ্চম ওয়ানডে। তিনি নিজের দ্বিতীয় ওভারেই তুলে নেন ভারতীয় অধিনায়ক শুভমান গিলের (৯) উইকেট। এর চার বল পরেই ফেরান কোহলিকে।
তখন ভারতের স্কোর ২ উইকেটে ১৭ মাত্র। সেখান থেকে রোহিত শর্মা (৭৩) ও শ্রেয়াস আইয়ার (৬১) জুটি বেঁধে দলকে টেনে তোলেন, যোগ করেন ১১৮ রান।
তবে শেষ পর্যন্ত তা যথেষ্ট হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার তরুণরা শান্ত মাথায় ম্যাচ শেষ করে এনে দেন সিরিজ জয়। তিন ম্যাচের লড়াই শেষ হয়ে গেল এক ম্যাচ বাকি থাকতেই। শেষ ওয়ানডে হবে শনিবার সিডনিতে। এরপর দুই দল মুখোমুখি হবে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে। যা শুরু আগামী বুধবার থেকে।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম টাই, প্রথম সুপার ওভার, এরপর বাংলাদেশের হার
কালো মাটির উইকেট, সাপের মতো বাঁক খাওয়ানো বল, ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুধু স্পিনারদের দিয়েই পুরো ৫০ ওভার করানোর রেকর্ডের পর শেষ ওভারের রোমাঞ্চ—ম্যাচটাকে মনে রাখার জন্য এটুকুই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু কে জানত, বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ওয়ানডের শেষটাতে লেখা ছিল আরও এক পরত নাটকীয়তা! সব ভুলিয়ে দিন শেষে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হবে তাতেই।
৫০ ওভার শেষে ম্যাচ টাই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম সুপার ওভারের মুখোমুখি বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়ল হারের দীর্ঘশ্বাস নিয়ে। সুপার ওভারে অধিনায়ক শাই হোপের ৩ বলে ৭ রানের সৌজন্যে ১ উইকেটে ১০ রান করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ সৌম্য সরকারের উইকেট হারিয়ে করে ৯ রান। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, দুটি নো, একটি ওয়াইড ও একটি লেগ বাই থেকে অতিরিক্ত ৪ রান এবং ৩টি বাড়তি বল পেয়েও বাংলাদেশ ১০ রানের লক্ষ্য পেরোতে পারেনি। সুপার ওভারে নাজমুল হোসেনকে তিনে নামানোটাও অবশ্য কম বিস্ময়ের ছিল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের নাটকীয় জয়ে সিরিজে এখন ১-১ সমতা। আগামীকালের শেষ ম্যাচটি হয়ে দাঁড়িয়েছে অলিখিত ফাইনাল।
দিন শেষে ফলাফলটাই আসল। তার ওপর সেটির নিষ্পত্তি যদি হয় এমন রোমাঞ্চকরভাবে, জয়-পরাজয় দুটোর অনুভূতিতেই ভর করে আবেগ। পরশু গভীর রাতে ঢাকায় পৌঁছে কাল দুপুরেই ম্যাচ খেলতে নামা আকিল হোসেনকে তাই ম্যাচ শেষে সতীর্থ প্রায় সবাই আলিঙ্গনে জড়ালেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে বাংলাদেশকে জয়বঞ্চিত করা সুপার ওভারটা যে করেছিলেন তিনিই! বাংলাদেশের ডাগআউট তখন শোকস্তব্ধ। এমন ম্যাচও যে এভাবে হারা যায়, সেটা যেন বিশ্বাস হচ্ছিল না ক্রিকেটারদেরই।
১নিজেদের ৩৯ বছর ও ৮১৪ ম্যাচের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতহাসে প্রথম টাই করল বাংলাদেশ।ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের অন্যতম নায়ক আকিল হোসেন