বান্দরবানে ১৩ প্রাথমিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার অনুমোদন
Published: 23rd, October 2025 GMT
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার দুর্গম এলাকার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার অনুমোদন দিয়েছে জেলা পরিষদ। বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের আবেদনের ভিত্তিতে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, এসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি, অনিয়মিতভাবে দায়িত্ব পালন ও বিভিন্ন প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়। দীর্ঘদিনের তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। পরবর্তীতে সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে বান্দরবান জেলা পরিষদ মামলার অনুমোদন প্রদান করে।
আরো পড়ুন:
কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আয়াকে প্রধান শিক্ষকের হুমকি, থানায় অভিযোগ
চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতির পদত্যাগের দাবিতে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও
আলীকদম উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো.
অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন, রেংপু হেডম্যান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক, সহকারী শিক্ষক হারুন আর রশিদ, নার্গিস তামান্না, হাবেকুন্নার ও মোতাহার বেগম। রাইতুমনি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্বাছ উদ্দিন, রিয়াজুল জান্নাত, মো. জাবেদ।
এছাড়া মেনকেউ মেনক পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাজীব স্রো, সহকারী শিক্ষক তাসলিমা আক্তার, কোহিনুর আক্তার, বদিউর রহমান রুস্তম ও রোমেন দাশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই বলেন, “জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস তদন্তের মাধ্যমে এসব শিক্ষকের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি ও অনিয়মের প্রমাণ পায়। প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার মান রক্ষায় আমরা কোনো ধরনের অনিয়ম বরদাশত করব না। তাই বিভাগীয় মামলার আবেদন পাওয়ার পর জেলা পরিষদ তা অনুমোদন করেছে।”
তিনি আরো বলেন, “শিক্ষা ব্যবস্থাকে সুশৃঙ্খল ও জবাবদিহিমূলক রাখতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ চলছে। অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/চাই মং/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম মল ব ন দরব ন জ ল
এছাড়াও পড়ুন:
এনইআইআর চালুতে ‘আপস করবে না’ সরকার, কমতে পারে আমদানি শুল্ক
দেশে অবৈধ পথে ও চোরাই মোবাইল ফোন আনা বন্ধের লক্ষ্যে ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এ ক্ষেত্রে নতুন করে সময় বাড়ানো হচ্ছে না। তবে মুঠোফোন আমদানিতে শুল্ক কমানো এবং বর্তমানে ব্যবসায়ীদের মজুতে থাকা অবৈধ মোবাইলগুলো সহজ প্রক্রিয়ায় বৈধতা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
গত রোববার মোবাইল আমদানিতে অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে শুল্ক ও ভ্যাট কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। চিঠিতে বলা হয়েছে, যেহেতু ১৬ ডিসেম্বরে এনইআইআর সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সে জন্য এর আগেই শুল্ক ও ভ্যাট–কাঠামো যৌক্তিক করা প্রয়োজন। এমনভাবে শুল্ক ও ভ্যাট হার নির্ধারণ করা উচিত, যাতে উৎপাদন ও আমদানির মধ্যকার বৈষম্য কমে আসে এবং বিনিয়োগ সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।
এ বিষয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব রোববার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এনইআইআর চালু হবেই। এটা নিয়ে কোনো আপস হবে না।’ তিনি আরও বলেন, আমদানি শুল্ক কমিয়ে আনার জন্য এনবিআরের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। বৈধ আমদানির শুল্ক সহজ হবে।
আর অবৈধভাবে আনা যেসব ফোন এখন ব্যবসায়ীদের স্টকে আছে, সেগুলোর বৈধতা দেওয়ার জন্য আলোচনা চলছে। তবে সেটির জন্য ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ওই সব হ্যান্ডসেটের আইএমইআই (মুঠোফোন শনাক্তকরণ নম্বর) জমা দিতে হবে।
এনইআইআর কীএনইআইআর হলো এমন একটি কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ (তথ্যভান্ডার), যেখানে দেশে ব্যবহৃত প্রতিটি মোবাইল হ্যান্ডসেটের আইএমইআই (মুঠোফোন শনাক্তকরণ নম্বর) নিবন্ধিত থাকবে। নির্দিষ্ট এনআইডির সঙ্গে ডিভাইসটি যুক্ত থাকবে অর্থাৎ কোন ফোনটি কার নামে নিবন্ধিত, কোন সিম কোন ডিভাইসে চলছে, ডিভাইসটির মালিকানা বদল হলে কার কাছে গেছে—এসব তথ্য রাষ্ট্রীয় ডেটাবেজে থাকবে।
‘নকল ফোন আনা বন্ধ হবে’বিটিআরসি ও এনবিআরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রোববার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের সঙ্গে একটি ভার্চ্যুয়াল বৈঠক হয়। বৈঠকের একটি সূত্র জানিয়েছে, শুল্ক কমানোর বিষয়ে এনবিআর রাজি হয়েছে। তবে কতটা কমানো হবে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী প্রথম আলোকে বলেন, আমদানি করার জন্য আমদানিকারকদের একটি ‘এনলিস্টমেন্টের’ (তালিকা) প্রয়োজন হয় এবং যে কোম্পানি থেকে আমদানি করা হচ্ছে, সেই কোম্পানির কাছ থেকে নথি লাগে। ছোট ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তাঁরা সব সময় ওই কোম্পানির নথি দিতে পারেন না। এটা কতটা সহজ করা যায়, তা নিয়ে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করবে বিটিআরসি।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, পুরো প্রক্রিয়াটি করার একটি উদ্দেশ্য হলো ক্লোন, রিফার্নিশড ও চোরাই ফোন দেশে আনা বন্ধ করা। আমদানিকারকদের প্রমাণ করতে হবে, যে মুঠোফোন তাঁরা আমদানি করছেন, সেটি আসল। এ ক্ষেত্রে তাঁরা যদি ডিলারদের কাছ থেকে কিনে থাকেন, তাহলে ডিলারকে সনদ দিতে হবে যে ফোনটি আসল।
ব্যবসায়ীদের দাবিন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার চালুর উদ্যোগের বিরোধিতা করে মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের (এমবিসিবি) ব্যানারে গত রোববার সকাল থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনের সামনে অবস্থান নেন মুঠোফোন ব্যবসায়ীরা। মোট আটটি দাবিতে টানা ১১ ঘণ্টা তাঁরা এই কর্মসূচি পালন করেন।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যবসায়ীদের শুল্ক পরিশোধ, লাইসেন্স নেওয়া এবং বিটিআরসি ভেন্ডর তালিকায় যুক্ত হতে ছয় মাস সময় দেওয়া। হ্যান্ডসেট আমদানি করতে কোনো ব্র্যান্ডের লিখিত অনুমতি লাগবে না, শুধু সরকারি লাইসেন্স থাকলেই ব্যবসায়ী পণ্য আমদানি করতে পারবে এমন বিধান করা। এখন বিদেশ থেকে আসা রেডি ফোন (সিবিইউ) এবং দেশে যন্ত্রাংশ সংযোজন করা ফোনের (সিকেডি) মধ্যে শুল্কের ব্যবধান কমিয়ে আনা। এনইআইআর প্রকল্প পুরোপুরি সরকারি অর্থে বাস্তবায়ন করা। এনইআইআর চালুর পর মজুত থাকা ফোন বিক্রি করতে অন্তত ছয় মাস সময় দেওয়া এবং দোকানের বিক্রির রশিদকেই বৈধ রেজিস্ট্রেশন কাগজ হিসেবে গ্রহণ করা।