রাওয়াল-মান্দানার ব্যাটে সেমিফাইনালে ভারত, নিউ জিল্যান্ডের বিদায়
Published: 24th, October 2025 GMT
তিন ম্যাচ টানা হারার পর যেন আগুনে ঝাঁপ দিল ভারত। নবি মুম্বাইয়ে বৃহস্পতিবার রাতে দারুণ স্টাইলেই নিউ জিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়ে নারী বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করল তারা। এখন শনিবারের দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচই ঠিক করবে শেষ চারে ভারতের প্রতিপক্ষ কে হবে।
টস হারলেও ভারত এদিন হার মেনে নিতে আসেনি। অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর ব্যাটিংয়ে নামিয়েছিলেন দলকে। আর ব্যাট হাতে আগুন ঝরালেন স্মৃতি মান্দানা ও প্রতিকা রাওয়াল। দুজনেই করলেন সেঞ্চুরি। সঙ্গে অপরাজিত ৭৬ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন জেমিমা রদ্রিগেজ। এই ম্যাচে তিনি দলে ফিরেছিলেন অলরাউন্ডার অমানজোত কৌরের জায়গায়।
ফলাফল, ভারতের বোর্ডে ঝলমল করছে ৪৯ ওভারে ৩৪০/৩। যা তাদের নারী বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংগ্রহ। তবে বৃষ্টির কারণে ডিএলএস পদ্ধতিতে নিউ জিল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৪ ওভারে ৩২৫ রান। নারীদের একদিনের ক্রিকেট ইতিহাসে এটিই হতো সর্বোচ্চ রান তাড়া। কিন্তু নিউ জিল্যান্ডের মন্থর ব্যাটিংয়ে শেষ ১৫ ওভারে দরকার ছিল অসম্ভব ১৬৮ রান। যা আর সম্ভব হয়নি।
ব্রুক হ্যালিডে একাই লড়লেন এদিন। খেললেন ৮১ বলে ৮৪ রানের ইনিংস। তবে দলের বাকিদের সঙ্গ না পাওয়ায় সেই চেষ্টা বৃথাই গেল। ইনিংসের শুরুতেই রেনুকা সিংয়ের দুই ইন-ডাকার ডেলিভারিতে সাজঘরে ফেরেন জর্জিয়া প্লিমার ও অধিনায়ক সোফি ডিভাইন। এরপর ভারতীয় স্পিনাররা বেঁধে রাখেন নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটারদের।
ইসাবেলা গেজের সঙ্গে হ্যালিডে ষষ্ঠ উইকেটে ৭২ রানের জুটি গড়লেও শেষ পর্যন্ত দল থামে ২৭১/৮-এ। ভারতের বোলারদের মধ্যে রেনুকা, ক্রান্তি গৌড় ও রাওয়াল সবাই ছিলেন শৃঙ্খলিত। প্রথম ছয় ওভারে কোনো বাউন্ডারি পর্যন্ত দেননি তারা। রাওয়াল নিজে বল হাতে তুলে নেন তার প্রথম বিশ্বকাপ উইকেটও। ম্যাডি গ্রিনকে ফেরান তিনি।
কিন্তু আসল জাদুটা রাওয়ালের ব্যাটেই দেখা গেল এদিন। ইনিংসের প্রথম ছয় ওভারে মাত্র ১৮ রান তুলেছিল ভারত। এরপর ধীরে ধীরে গতি বাড়িয়ে মান্দানা ও রাওয়াল গড়েন শতরানের পার্টনারশিপ। যা নারী একদিনের ক্রিকেটে ভারতের কোনো জুটির যৌথ সর্বোচ্চ রেকর্ড। মান্দানা ৪৯ বলে, আর রাওয়াল ৭৫ বলে তুলে নেন ফিফটি।
স্পিনার ইডেন কারসনের বিপক্ষে প্রথমবার সুইপ করে বাউন্ডারি হাঁকান মন্দানা। এরপর পরের ওভারেই লং-অফের ওপর দিয়ে ছক্কা মারেন। রাওয়াল তখন স্কয়ার অঞ্চলে ছিলেন দুর্দান্ত। লিয়া তাহুহুকে দুটি চার মেরে জানান দিলেন আজ তিনি অন্য মেজাজে।
৭৭ রানে একবার ভাগ্যও সহায় হলো মান্দানার। এলবিডব্লিউ সিদ্ধান্ত রিভিউ না নিলে সাজঘরে ফিরতে হতো। কিন্তু ‘আল্ট্রাএজ’ দেখাল ব্যাটে হালকা ছোঁয়া ছিল। এরপর ৮৮ বলে পূর্ণ করেন নিজের ১৪তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। যা মেগ ল্যানিংয়ের সর্বোচ্চ রেকর্ডের ঠিক নিচে। কিছুক্ষণ পর ক্র্যাম্পে কাবু হয়ে পড়া মান্দানা শেষ পর্যন্ত সুজি বেটসের বলে ১০৪ রানে ধরা পড়েন হান্নাহ রোর হাতে। তাতে শেষ হয় ২১২ রানের দারুণ ওপেনিং জুটি।
রাওয়াল ১২২ বলে তুলে নেন নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। তার পর জেমিমা রদ্রিগেজ যখন ব্যাটে নামেন, তখন যেন ইনিংসে নতুন ছন্দ আসে। নিখুঁত টাইমিং, চমৎকার প্লেসমেন্টে সাজানো তার ৫৫ বলে ৭৬ রানের ইনিংসে ছিল ১১টি চার। তিনি কখনও সুইপ করেছেন, কখনও রিভার্স সুইপ। আবার ফুল লেংথ ডেলিভারিতে কভার ড্রাইভে বল উড়িয়েছেন বাউন্ডারিতে।
৪৮ ওভারে বৃষ্টি নামলে ম্যাচ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে। পরে খেলা ৪৯ ওভারে নির্ধারিত হয়। আর নিউ জিল্যান্ডের লক্ষ্য নামানো হয় ৪৪ ওভারে।
সব মিলিয়ে ভারতের জন্য দিনটি ছিল একেবারে নিখুঁত; ব্যাটে, বলে, কৌশলে। বিশেষ করে রদ্রিগেজকে দলে ফিরিয়ে তিন নম্বরে পাঠানোর সিদ্ধান্তটি যে সঠিক ছিল, সেটি প্রমাণিত হলো বেশ জোরালোভাবে। এখন দল তাকিয়ে সেমিফাইনালের দিকে, যেখানে তারা চায় এই ফর্মই ধরে রাখতে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে পথচারীকে ট্রাকের ধাক্কা, সড়ক অবরোধ
গাজীপুর মহানগরীর হারিকেন এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনার জের ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এতে ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টা থেকে ওই মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
আরো পড়ুন:
ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে লাগবে ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ
জেলায় জেলায় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, মহানগরীর হারিকেন এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পারাপারের সময় এক পথচারীকে একটি ট্রাক ধাক্কা দেয়। এতে তার দুটি পা থেতলে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা মহাসড়কে অবস্থান করে এবং ওই মহাসড়কের সকল গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে মহাসড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
বিক্ষুদ্ধ জনতা বলেন, ‘‘এই মহাসড়ক পারাপারের জায়গা নেই। যার কারণে প্রতিনিয়তই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এটির প্রতিকার করতে হবে। ফুটওভার ব্রিজ দিতে হবে। প্রতিদিন দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে অথচ কারো ভ্রুক্ষেপ নেই। এ জন্য আমরা মহাসড়ক অবরোধ করেছি, এটার সমাধান করতে হবে।’’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘সড়ক দুর্ঘটনার জের ধরে মহাসড়ক অবরোধ করেছে। যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। তাদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা চলমান রয়েছে।’’
ঢাকা/রেজাউল/বকুল