ঢাকার এই ৮ জায়গার বায়ুর মান আজ বেশ খারাপ, সুরক্ষায় যা করবেন
Published: 26th, October 2025 GMT
আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসের সকালে বিশ্বের ১২৭টি নগরীর মধ্যে ঢাকার অবস্থান চতুর্থ। আজ সকাল সোয়া আটটার দিকে আইকিউএয়ারের ঢাকার গড় বায়ুমান ১৬৩। এই মান অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে আজ নগরীর দু-একটি স্থান আছে যেখানে বায়ুর মান খুব অস্বাস্থ্যকর। মোট আটটি স্থানে বায়ু অনেক বেশি দূষিত।
বায়ুদূষণের এ পরিস্থিতি তুলে ধরেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। প্রতিষ্ঠানটি বায়ুদূষণের অবস্থা নিয়মিত তুলে ধরে। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সেই সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে।
বায়ুদূষণে আজ শীর্ষে আছে পাকিস্তানের লাহোর, স্কোর ৩৬৭।
নগরীর ৮ এলাকায় দূষণ বেশিনগরীর আট এলাকায় দূষণ পরিস্থিতি বেশ খারাপ। এসব এলাকার মধ্যে শীর্ষে আছে মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং, স্কোর ২০১। এই মানকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। বাকি ছয় এলাকা হলো দক্ষিণ পল্লবী (১৯২), কল্যাণপুর (১৮৩), পুরান ঢাকার বেচারাম দেউড়ি (১৭৭), গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (১৬৩), শান্তা ফোরাম (১৬২), বে’জ এজ ওয়াটার (১৬০) ও গোরান (১৫৭)।
নগরবাসীর জন্য পরামর্শআজ ঢাকা ও অন্য শহরগুলোর যে বায়ুমান, এর পরিপ্রেক্ষিতে নগরবাসীর জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছে আইকিউএয়ার। এর মধ্যে আছে ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরে যেতে হবে, জানালা বন্ধ রাখতে হবে, ঘরের বাইরে ব্যায়াম যতটুকু সম্ভব এড়িয়ে যেতে হবে। আর যেসব এলাকায় বায়ুর মান অস্বাস্থ্যকর, সেসব এলাকায় অবশ্যই বাড়ির বাইরে গেলে মাস্ক পরতে হবে।
বায়ুদূষণে যত ক্ষতিবাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশিত আয়ুর জন্য সবচেয়ে বড় বাহ্যিক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বায়ুদূষণ। বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশের মানুষের আয়ু গড়ে সাড়ে পাঁচ বছর কমছে। এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্সে (একিউএলআই) ২০২৫ সালের হালনাগাদ বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট (ইপিআইসি)। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ।
বায়ুদূষণের কারণে ১৯৮০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বে প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি মানুষের অকালমৃত্যু হয়েছে। সিঙ্গাপুরের নানিয়াং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনটিইউ) এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে।
বিশ্বব্যাংক গত বছরের মার্চে ‘দ্য বাংলাদেশ কান্ট্রি এনভায়রনমেন্ট অ্যানালিসিস (সিইএ)’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশে ২০১৯ সালে বায়ুদূষণসহ চার ধরনের পরিবেশদূষণে ২ লাখ ৭২ হাজারের বেশি মানুষের অকালমৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বায়ুদূষণের কারণে। এ ছাড়া দূষণের কারণে ওই বছর দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৭ দশমিক ৬ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের উদ্বোধন আগামীকাল
আগামীকাল বৃহস্পতিবার উদ্বোধন হতে যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের। এদিন বেলা আড়াইটায় দেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় উদ্বোধন করবেন।
আজ বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আপাতত দুটি কক্ষ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক ভবন–৪ (সুপ্রিম কোর্ট জামে মসজিদসংলগ্ন) দ্বিতীয় তলার দুটি কক্ষে আপাতত সচিবালয়ের কার্যক্রম চলবে।
এদিকে আজ সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রধান বিচারপতি আট সদস্যবিশিষ্ট একটি ‘পরিকল্পনা ও উন্নয়ন’ কমিটি গঠন করেছেন। এর আগে গত ৩০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ (সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫) জারি করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠিত হলে অধস্তন আদালত ও প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত সব প্রশাসনিক ও সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে এই সচিবালয়।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বিচারকাজে নিয়োজিত বিচারকদের পদায়ন, পদোন্নতি, বদলি, শৃঙ্খলা ও ছুটিবিষয়ক সব সিদ্ধান্ত ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় এই সচিবালয়ের হাতে থাকবে। সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ প্রধান বিচারপতির ওপর ন্যস্ত থাকবে এবং সচিবালয়ের সচিব প্রশাসনিক প্রধান হবেন।
‘পরিকল্পনা ও উন্নয়ন’ কমিটি ও সদস্য যাঁরা
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশের ৮ (১) ধারা অনুযায়ী অধস্তন আদালত, প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল, সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রি ও সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানসংক্রান্ত উন্নয়ন বা কারিগরি প্রকল্প চূড়ান্ত নিরীক্ষা ও সুপারিশ করার উদ্দশ্যে প্রধান বিচারপতি আট সদস্যবিশিষ্ট একটি ‘পরিকল্পনা ও উন্নয়ন’ কমিটি গঠন করেন। আপিল বিভাগের বিচারপতি রেজাউল হককে সভাপতি করে আজ এই কমিটি গঠন করা হয়।
আট সদস্যের কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা বিভাগের সচিব।
এর আগে অধ্যাদেশ জারির পর ১ ডিসেম্বর এক স্মারকে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানায়, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের কার্যক্রম অবিলম্বে শুরু করার লক্ষ্যে অধ্যাদেশের ৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশের প্রধান বিচারপতির অভিপ্রায়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকীকে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের সচিব হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা হলো।
‘পদ সৃজন’ কমিটি ও সভা
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রি, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়, প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল ও অধস্তন আদালতের সাংগঠনিক কাঠামো পরিবর্তনসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদ সৃষ্টি, বিলোপ বা বিন্যাসে ‘পদ সৃজন’ কমিটি গঠন করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশের ১৭ ধারা অনুসারে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামকে সভাপতি করে ১ ডিসেম্বর ওই কমিটি গঠন করা হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ‘পদ সৃজন’ কমিটির প্রথম সভা ৭ ডিসেম্বর বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন সভায় পদ সৃজন কমিটির আট সদস্যের মধ্যে সাত সদস্য (অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বাদে) উপস্থিত ছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের ৭ ডিসেম্বর দেওয়া ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী পদে নিয়োগের জন্য ৪৮৯টি পদ সৃজনের সিদ্ধান্ত সভায় উপস্থিত সব সদস্যের সর্বসম্মত মতামতের ভিত্তিতে গৃহীত হয়েছে। ৪৮৯টি পদের মধ্যে কর্মকর্তা পদে ১০৭টি এবং সহায়ক কর্মচারী পদে ৩৮২টি পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১০৭টি কর্মকর্তা পদের মধ্যে জুডিশিয়াল সার্ভিসের প্রশাসনিক পদ ১০৫টি, মুখ্য হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা পদ ১টি এবং সিস্টেম অ্যানালিস্টের পদ ১টিতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আট সদস্যের কমিটির অপর সদস্যরা হলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহ, বিচারপতি মো. বজলুর রহমান, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সিনিয়র সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল।