‘শান্তিগঞ্জ মডেল’ ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হলে প্রাথমিক শিক্ষায় যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটবে: প্রাথমিক উপদেষ্টা
Published: 26th, November 2025 GMT
সুনামগঞ্জের ‘শান্তিগঞ্জ মডেল’ সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছড়িয়ে দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, সারা দেশে এই উদ্যোগ ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হলে প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আজ বুধবার ঢাকায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনীমূলক মূল্যায়ন পদ্ধতি বিষয়ে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এ কথা বলেন।
সেমিনারে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সুকান্ত সাহার উদ্ভাবিত ‘শান্তিগঞ্জ মডেল’ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব তৈরি করা এবং শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করার বিষয়ে সৃজনশীল এই মডেলটি ‘শান্তিগঞ্জ মডেল’ নামে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এর মাধ্যমে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়। শিক্ষার্থীদের ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষকদেরও পরোক্ষভাবে মূল্যায়ন করা হয়। এই বিশেষ মানোন্নয়ন পরীক্ষা ও র্যাঙ্কিং ব্যবস্থা সুনামগঞ্জে একটি প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করেছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়মিত উপস্থিতি, পরীক্ষায় ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, বিষয়ভিত্তিক দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠাসহ ঝরে পড়ার হার রোধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বলে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, এ বিষয়ে ৪ নভেম্বর ‘শিক্ষকেরা বাড়তি যত্ন নেন, উপস্থিতি বেড়েছে শিক্ষার্থীদের’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
আজকের সেমিনারে ‘শান্তিগঞ্জ মডেল’–এর প্রশংসা করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, সুনামগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে গৃহীত এই পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। পরীক্ষার ভিত্তিতে স্কুল ও বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের র্যাঙ্কিং ব্যবস্থা সত্যিই এক ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপের ওপর জোর দিতে হবে। শিক্ষার মান নিয়ে যে উদ্বেগ দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান, তা কাটাতে বাস্তবসম্মত ও নির্মোহ মূল্যায়ন ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আবু তাহের মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ উপদ ষ ট উপস থ ত পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরিতে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন চাইলেন বাদ পড়া এসআই ও সার্জেন্ট প্রার্থীরা
২০০৭ সালে ‘দলীয় বিবেচনায়’নি য়োগ বাতিল হওয়া ৭৫৭ জন উপপরিদর্শক (এসআই) ও সার্জেন্ট প্রার্থীরা চাকরিতে যোগদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টার চূড়ান্ত অনুমোদন চেয়েছেন।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিয়োগ বাতিল হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের একজন মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি আরও বলেন, ‘২০০৬ সালে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত ৫৩৬ জন এসআই ও ২২১ জন সার্জেন্টকে কোনো প্রজ্ঞাপন ছাড়াই কেবল একটি সাদা কাগজে নোটের মাধ্যমে তাঁদের নিয়োগ বাতিল করা হয়। তৎকালীন আইজিপি নূর মোহাম্মদ ও ডিআইজি বেনজীর আহমেদের স্বাক্ষরে দলীয় ট্যাগের অভিযোগ তুলে পুরো নিয়োগপ্রক্রিয়া বাতিল ঘোষণা করা হয়।’
জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেন, দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে তাঁরা ফ্যাসিস্ট সরকারের শাসনামলে নানা দমন-পীড়নের শিকার হয়েছেন। ওই সময় আইনের দ্বারস্থ হয়েও তাঁরা সুবিচার পাননি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ৫ আগস্ট ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের অংশ হিসেবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশে এই নিয়োগপ্রক্রিয়া পুনর্বহালের বিষয়ে ৩৩০ জনের তালিকাসহ আবেদন করা হয়। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন ও আইন এবং পুলিশ সদর দপ্তরের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গত ৭ মে বাতিল আদেশটি অকার্যকর ঘোষণা করে নিয়োগ পুনর্বহালের সুপারিশ করে। এরপর ওই কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে আরেকটি কমিটি বিষয়টি যাচাই করে শর্ত পূরণ সাপেক্ষে নিয়োগ দেওয়ার পক্ষে মত দেয় গত ২৩ এপ্রিল। এসব সুপারিশ ও মতামতের ভিত্তিতে প্রার্থীদের বয়স, জ্যেষ্ঠতা ও প্রশিক্ষণকাল প্রমার্জনার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। কিন্তু এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীরা বলেন, এত বছর ধরে বৈষম্যের শিকার হয়ে অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কেউ রাইড শেয়ারিং সার্ভিস পাঠাও চালাচ্ছেন, আবার অনেকে মা–বাবার চিকিৎসা খরচ বহন করতে পারছেন না। কিছু প্রার্থী বেসরকারি চাকরি থেকেও ছিটকে পড়েছেন।
৭৫৭ জন নিয়োগবঞ্চিত এসআই ও সার্জেন্টকে বয়স ও জ্যেষ্ঠতা প্রমার্জন করে দ্রুত চাকরিতে যোগদানের অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ জানান নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীরা। ইতিমধ্যে ৩৩০ জন প্রার্থীর ফাইল প্রস্তুত করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাখিল করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
আরও পড়ুনপুলিশের চাকরি চান ২০০৭ সালে ‘দলীয় বিবেচনায়’ বাদ পড়া ৭৫৭ এসআই ও সার্জেন্ট প্রার্থী২৩ আগস্ট ২০২৪