নির্বাচন ঘিরে সক্রিয় হবে অনেক পরাশক্তি, নানা এজেন্সি: গোলাম পরওয়ার
Published: 26th, October 2025 GMT
জাতীয় নির্বাচনের আগে বিভিন্ন পরাশক্তি ও নানা এজেন্সি সক্রিয় হয়ে উঠবে বলে রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক করেছেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
আজ রোববার গণ অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গোলাম পরওয়ার এ সতর্কবার্তা দিয়ে সব দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিএনপিসহ ডজনখানেক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে গোলাম পরওয়ার বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে দেশের ভেতরে অনেক পরাশক্তি এবং নানা এজেন্সি (সংস্থা) সক্রিয় হবে। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ, একটি মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে অনেক বাধা আসবে। সে জন্য রাজনৈতিক মত-পথের ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও দেশ গঠনের মূল ইস্যুতে দলগুলো যেন ঐক্য ধরে রাখতে পারে।
আশঙ্কা থাকলেও তা না ঘটার আশা প্রকাশ করে গোলাম পরওয়ার বলেন, জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে প্রকৃত মতামতের প্রতিফলনের মধ্য দিয়ে যেন সরকার গঠিত হয়, সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো ভিন্নমত নেই। অনেক জাতীয় ইস্যুতে দলগুলোর মধ্যে যেহেতু ঐকমত্য আছে, দেশ গঠনে পরাশক্তি ও অভ্যন্তরীণ শক্তি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবে না বলে আশা করা যায়।
অন্তর্বর্তী সরকার আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে। সেই নির্বাচনের অভিযাত্রা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্যও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল।
এ অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দীন আহমদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান হামিদী, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ্ কায়সার, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য আকবর খান, এনডিপির চেয়ারম্যান আবু তাহের বক্তব্য দেন। এতে সভাপতিত্ব করেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, সঞ্চালনা করেন দলটির মুখপাত্র ফারুক হাসান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক দলগ ল সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
আরপিও অধ্যাদেশের খসড়ায় পরিবর্তন আনতে চিঠি দেবে বিএনপি: সালাহউদ্দিন
নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও (সংশোধন) অধ্যাদেশের যে খসড়া উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন হয়েছে, তা নিয়ে আপত্তি রয়েছে বিএনপির। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, এই খসড়ায় পরিবর্তন আনতে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে তারা চিঠি দেবে।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
কোনো দল জোটগতভাবে নির্বাচন করলেও নিজেদের প্রতীকে অংশ নিতে হবে। এমন বিধান যুক্ত করে নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া গতকাল বৃহস্পতিবার অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার সংক্রান্ত বিষয়গুলোর অনেকগুলোতে আমরা সবাই সম্মত হয়েছিলাম। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি ও আরপিও’র যে খসড়াটা উত্থাপন করা হয়েছে, এটাতে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে, তাতে বিএনপির কোনো সম্মতি ছিল না।
জোটবদ্ধ নির্বাচনে নিজস্ব দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে হলে ছোট রাজনৈতিক দলগুলো জোটবদ্ধ হতে উৎসাহিত হবে না বলে উল্লেখ করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘এটাতে তাদেরও (ছোট রাজনৈতিক দল) রাজনৈতিক দলগুলোরও সম্মতি নেই, আমাদেরও সম্মতি নেই। এটা নির্বাচন কমিশন থেকে একতরফাভাবে কেন উত্থাপন করা হলো জানি না। আরপিও'র অধ্যাদেশের খসড়ার ওপরে মতামত চেয়েছিলেন। আমরা মতামত জানিয়েছিলাম।’
বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক ফোরামের এই নেতা বলেন, ‘অধ্যাদেশের জন্য যেসব সংশোধনী এসেছে, তার অধিকাংশের সাথে আমরা একমত। কিন্তু প্রতীকের (নিজস্ব প্রতীকের বাইরে জোটের প্রতীক নিতে পারবে না) এ বিষয়ে আমরা সম্মত হইনি কখনো। আমার মনে হয় আমাদের একটা সুষ্ঠু রাজনীতির স্বার্থে, নির্বাচনের স্বার্থে এটা পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন। এ কথা আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে জানিয়েছি, আমরা হয়তো আনুষ্ঠানিক চিঠিও দেব নির্বাচন কমিশনে এবং আইন উপদেষ্টার কাছে।’
আরও পড়ুনইতিবাচক হিসেবে দেখছে জামায়াত–এনসিপি, বিএনপির আপত্তি১৬ ঘণ্টা আগেউল্লেখ্য, অনুমোদিত খসড়ায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকেও যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের মতো ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তিন বাহিনীকে নির্বাচনী দায়িত্ব দিতে আলাদা কোনো আদেশের প্রয়োজন হবে না।
এ ছাড়া পলাতক আসামিদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ না রাখা, প্রার্থীদের দেশে-বিদেশে থাকা সম্পদের বিবরণী দেওয়া বাধ্যতামূলক করা, কোনো আসনে একক প্রার্থী থাকলে ‘না’ ভোটের ব্যবস্থা রাখা, ভোট বন্ধে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বাড়ানো, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার সম্পর্কিত বিধান বিলুপ্ত, ৫০ হাজার টাকার বেশি চাঁদা বা অনুদান ব্যাংকে লেনদেনসহ আরও কিছু সংশোধনী রয়েছে অনুমোদিত খসড়ায়।
হলফনামায় বিদেশে সম্পদের উল্লেখ করা, সশস্ত্র বাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করা, আদালত ঘোষিত পলাতক আসামিকে নির্বাচনের অযোগ্য করা, ৫০ হাজার টাকার বেশি চাঁদা বা অনুদান ব্যাংকে লেনদেনে বিষয়ে বিএনপির আপত্তি নেই। এসবে দ্বিমত নেই জামায়াত ইসলামী ও এনসিপিরও।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এ লক্ষ্যে আগামী ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। এর আগে নির্বাচনসংক্রান্ত আইনে বড় রকমের পরিবর্তন আনছে সরকার।