দুর্নীতি করলে উপদেষ্টাদেরও বিচার হবে: অলি আহমদ
Published: 26th, October 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের বেশ কয়েকজন উপদেষ্টার সমালোচনা করে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেন, ‘এখন অনেক উপদেষ্টা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। এটা বিএনপি থেকে বলেছে, তাদের কাছে খতিয়ান আছে।’
সম্প্রতি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উপদেষ্টা পরিষদের কোনো কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছে। তবে সরকারের কোন কোন উপদেষ্টার বিষয়ে আপত্তি আছে, তা কোনো রাজনৈতিক দলই প্রকাশ্যে বলেনি। তবে এতে অস্বস্তিতে পড়েছেন উপদেষ্টাদের কেউ কেউ।
এবার অলি আহমদ বলেন, উপদেষ্টারা যদি মনে করেন তাঁরা বিচারের ঊর্ধ্বে, তা ভুল। তাঁদেরও বিচার হবে। অন্তর্বর্তী সরকার এনজিওদের নিয়ে গঠিত উল্লেখ করে অলি আহমদ বলেন, যাদের সরকার পরিচালনা করার ন্যূনতম কোনো যোগ্যতা নেই।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন অলি আহমদ। আজ রোববার বেলা তিনটায় রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে দলটি।
দেশের রাজনীতিবিদের দুর্নীতি এবং দূরদর্শিতার অভাবে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে উল্লেখ করে অলি আহমদ বলেন, ‘হাসিনা “র”-এর সাহায্যে, ভারত সরকারের সাহায্যে সরকার গঠন করে। একজন রাজনীতিবিদকে বুঝতে হবে আগামী মাসে কী হবে, ছয় মাস পর কী হবে, দুই বছর পর কী হবে? যদি না বুঝতে পারে, তার দ্বারা রাজনীতি হবে না। তার দ্বারা হবে চাঁদাবাজি।’
শেখ হাসিনার সমালোচনা করে অলি আহমদ বলেন, ‘জনগণের ওপর আস্থা ছিল না.
বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নেওয়া রাজনীতিবিদদের বের করে দিতে সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনুরোধ জানান অলি আহমদ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে যড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে অলি আহমদ বলেন, ‘চট্টগ্রাম নিয়ে অনেকে ষড়যন্ত্র করছে। সেনাপ্রধানকে আমি বলব, কারও কথা শুনবেন না। এটা বাংলাদেশের অংশ। যেখানে প্রয়োজন ক্যাম্প করেন। সন্তু লারমার কথায় চলবে না। যেখানে প্রয়োজন ক্যাম্প করবেন, এটাই হলো আপনার দায়িত্ব। প্রতিটা জায়গা, এটা আমাদের টেরিটরি, আমাদেরকে অবশ্যই ডিফেন্ড করতে হবে।’
বাংলাদেশকে অশান্ত করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে টাকা আসছে বলেও দাবি করেন অলি আহমদ। সরকারের অদক্ষতার কারণে একটা গোষ্ঠী কিছুদিন পরপর রাস্তা আটকে আন্দোলন করে উল্লেখ করে অলি আহমদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ীরা, আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতারা, তাঁরা টাকা লুণ্ঠন করেছেন। বিভিন্ন দেশে আছেন। তাঁরা প্রত্যেকে টাকা হাসিনার কাছে পাঠাচ্ছেন। এটা আমার কাছে তথ্য আছে। আমি এটা আন্দাজের ওপর বলছি না।’
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ‘৭১–এ বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা অস্ত্র হাতে লড়াই করে এই দেশকে স্বাধীন করেছেন। বাংলাদেশ একবারই স্বাধীন হয়েছে। জুলাই ও আগস্টকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে আমাদেরকে বিভ্রান্ত করতে চেষ্টা করবেন না।’
সরকার অনতিবিলম্বে জাতিকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে আহ্বান জানিয়ে অলি আহমদ বলেন, মানুষ ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে চান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এলডিপির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজি, ফারজানা রশীদ ব্রাউনিয়া প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র উপদ ষ ট আম দ র র জন ত দ বল ন এলড প
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে পাওনা টাকা নিয়ে তরুণকে অপহরণের পর হত্যা, আরও একজন গ্রেপ্তার
সিলেটের কানাইঘাটে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে সাইফুল ইসলামকে (২০) অপহরণের পর খুনের ঘটনায় প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার ঝাউচর মেঘনাঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গত ৩০ নভেম্বর বিকেলে সাইফুল ইসলামকে অপহরণের পর কানাইঘাটের লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের রাতাছড়া গ্রামে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ছলু মিয়া ২ ডিসেম্বর কানাইঘাট থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা দু-একজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। গ্রেপ্তার তরুণের নাম শাকিল আহমদ (২২)। তাঁর বাড়িও রাতাছড়া গ্রামে। ওই ঘটনায় এর আগে শাকিলের বাবাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, নিহত সাইফুল ও শাকিলের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি দুজনের মধ্যে দুই লাখ টাকা দেনা-পাওনা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। ঘটনার দিন শাকিল সাইফুলের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে নিয়ে দনা বাজারে যান। সন্ধ্যায় সাইফুলের ভাই সুফিয়ান আহমদ দনা বাজার থেকে বাবাকে ফোন দিয়ে জানান, শাকিল মোটরসাইকেলে করে সাইফুলকে তাঁদের বাড়ির দিকে নিয়ে গেছে। পরে বাড়িতে সাইফুলকে বেঁধে মারধর করা হয় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকে আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে বাড়ির পূর্ব পাশের জঙ্গলে হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা।
আরও পড়ুনসিলেটে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে অপহরণ, পরে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ০১ ডিসেম্বর ২০২৫পরে সাইফুলকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর অভিযুক্ত শাকিলের বাবা এবং আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এবার প্রধান অভিযুক্ত শাকিলকে গ্রেপ্তার করা হলো।
র্যাব-৯-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) কে এম শহিদুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া শাকিলকে সিলেটের কানাইঘাট থানায় হস্তান্তরের পর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।