৩ দফা দাবিতে ঢাবির প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করলেন ডাকসু নেতারা
Published: 26th, October 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) তহবিলের পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রকাশ ও বরাদ্দকৃত অর্থ হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেন ডাকসু ও হল সংসদ নেতারা। একপর্যায়ে তাঁরা ভবনের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কক্ষে গিয়ে স্লোগান দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা ও প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদের আশ্বাসে তাঁরা ফিরে যান।
আজ রোববার বেলা দুইটার দিকে ডাকসু নেতারা রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এ বি জুবায়ের, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ, পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহসহ বিভিন্ন হল সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো, ২০১৯ সালের পর থেকে ডাকসু ও হল সংসদ ফি বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ ডাকসুর কাছে হস্তান্তর এবং অতীতের সব তহবিলের পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রকাশ করে স্বচ্ছ বাজেট প্রণয়ন, ক্যাম্পাস থেকে ভবঘুরে, টোকাই ও মাদক চক্র নির্মূলের মাধ্যমে নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানবিরোধী মিছিলে অংশ নেওয়া ডেপুটি রেজিস্ট্রার রুহুল আমিনসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক–কর্মকর্তাদের অপসারণ ও বিচারের আওতায় আনা।
ডাকসুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার দেড় মাস পার হয়ে গেলেও এখনো বাজেট হস্তান্তর করা হয়নি। এর ফলে আমাদেরকেই শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। গতকাল শনিবার আমরা ক্যাম্পাস থেকে হকারদের সরালে বাম সংগঠনগুলো বহিরাগত এনে মিছিল করেছে। অথচ প্রশাসন তখনো নির্লিপ্ত থেকেছে।’
মুসাদ্দেক আলী আরও বলেন, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট কোষাধ্যক্ষ অফিসের কর্মকর্তা রুহুল আমিন খুনি হাসিনার পক্ষে মিছিল করেছিলেন। এখনো তিনি স্বাভাবিকভাবে অফিস করছেন। এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য চরম লজ্জার।
ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এ বি জুবায়ের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ক্যাম্পাসকে টোকাই ও মাদক চক্রমুক্ত করে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাবির সাবেক উপাচার্য মাকসুদ কামালসহ প্রক্টরিয়াল বডি ও প্রশাসনে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের বিচার হবে
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামালসহ বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টরিয়াল বডি ও প্রশাসনে যাঁরা ছিলেন, সবার বিচার এই স্বাধীন বাংলাদেশে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ভিপি আবু সাদিক কায়েম।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তাদের আহ্বানে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে জবানবন্দি দিতে আসেন সাদিক কায়েমসহ ডাকসুর সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ এবং পরিবহন সম্পাদক আসিফ আবদুল্লাহ। চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তদন্ত সংস্থার কাছে তাঁরা সকাল থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত জবানবন্দি দেন। এরপর তাঁরা তিনজনই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা জানান, দুপুরের পরও জবানবন্দি দেবেন তাঁরা।
দুপুরে আবু সাদিক কায়েম সাংবাদিকদের বলেন, ঢাবির সাবেক ভিসি মাকসুদ কামালের ব্যাপারে তাঁদের কাছে অনেক তথ্য ইতিমধ্যে এসেছে। মাকসুদ কামালকে বিভিন্নভাবে শেল্টার (আশ্রয়) দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্নজন করছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যে সংগঠনগুলো আছে, তাঁদের একটা পক্ষ বিভিন্নভাবে সেভ এক্সিট (নিরাপদ প্রস্থান) দেওয়ার চেষ্টা করছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের নিয়ে এসে এখানকার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন আবু সাদিক কায়েম। তিনি বলেন, সেই মাকসুদ কামালের বিচার এই স্বাধীন বাংলাদেশে হবে। মাকসুদ কামালের সঙ্গে ওই সময়ে যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিতে ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে যাঁরা ছিলেন, সবার বিচার এই স্বাধীন বাংলাদেশে হবে। তাঁরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্তের দাগ লাগিয়েছেন, ভাইবোনদের মেরে রক্তাক্ত করেছেন। তাঁরা যখন হাসপাতালে যাচ্ছিলেন সেই হাসপাতালে ইসরায়েলিরা যেভাবে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা করে ঠিক একই কায়দায়, তার চেয়ে বর্বর কায়দায় তাঁদের ভাইবোনদের ওপর হামলা করা হয়েছে। সব এভিডেন্স (প্রমাণ) তাঁদের হাতে আছে। তাঁরা সেগুলো তদন্ত সংস্থাকে দিয়েছেন।
সাদিক কায়েম বলেন, জুলাইয়ে গণহত্যা, শিশু হত্যা ও শিক্ষার্থীদের ওপর যে নির্যাতন-নিপীড়ন করা হয়েছে, এই ঘটনায় শেখ হাসিনার সঙ্গে যাঁরা সহযোগী ছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দিতে এসেছেন।