ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) তহবিলের পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রকাশ ও বরাদ্দকৃত অর্থ হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করেন ডাকসু ও হল সংসদ নেতারা। একপর্যায়ে তাঁরা ভবনের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কক্ষে গিয়ে স্লোগান দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা ও প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদের আশ্বাসে তাঁরা ফিরে যান।

আজ রোববার বেলা দুইটার দিকে ডাকসু নেতারা রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এ বি জুবায়ের, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ, পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহসহ বিভিন্ন হল সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো, ২০১৯ সালের পর থেকে ডাকসু ও হল সংসদ ফি বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ ডাকসুর কাছে হস্তান্তর এবং অতীতের সব তহবিলের পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রকাশ করে স্বচ্ছ বাজেট প্রণয়ন, ক্যাম্পাস থেকে ভবঘুরে, টোকাই ও মাদক চক্র নির্মূলের মাধ্যমে নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানবিরোধী মিছিলে অংশ নেওয়া ডেপুটি রেজিস্ট্রার রুহুল আমিনসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক–কর্মকর্তাদের অপসারণ ও বিচারের আওতায় আনা।

ডাকসুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার দেড় মাস পার হয়ে গেলেও এখনো বাজেট হস্তান্তর করা হয়নি। এর ফলে আমাদেরকেই শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। গতকাল শনিবার আমরা ক্যাম্পাস থেকে হকারদের সরালে বাম সংগঠনগুলো বহিরাগত এনে মিছিল করেছে। অথচ প্রশাসন তখনো নির্লিপ্ত থেকেছে।’

মুসাদ্দেক আলী আরও বলেন, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট কোষাধ্যক্ষ অফিসের কর্মকর্তা রুহুল আমিন খুনি হাসিনার পক্ষে মিছিল করেছিলেন। এখনো তিনি স্বাভাবিকভাবে অফিস করছেন। এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য চরম লজ্জার।

ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এ বি জুবায়ের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ক্যাম্পাসকে টোকাই ও মাদক চক্রমুক্ত করে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সম্পর্কোন্নয়নের ইঙ্গিত দিয়ে আবারও ভারত-চীন সরাসরি ফ্লাইট চালু

পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর রোববার থেকে ভারত ও চীনের মধ্যে আবারও সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। এটি দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে একটি প্রতীকী পদক্ষেপ। দুই দেশের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এ পদক্ষেপ জরুরি।

 ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ সংস্থা ইন্ডিগো স্থানীয় সময় রাত ১০টায় কলকাতা থেকে গুয়াংঝুতে প্রথম দৈনিক ফ্লাইটটি পরিচালনা করে। ভারত ও হংকংয়ের মধ্যে নিয়মিত ফ্লাইট চলছে। আর রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে সাংহাই ও গুয়াংঝুর অতিরিক্ত ফ্লাইট নভেম্বর থেকে চালু হবে।

আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে বিশ্বের দুই জনবহুল দেশ ভারত ও চীন একে অপরের কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী। ২০২০ সালে দুই দেশের সেনাসদস্যদের মধ্যে প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘাতকে কেন্দ্র করে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক উষ্ণ হতে শুরু করে।

ভারত সরকার বলেছে, নতুন করে ফ্লাইট চলাচল শুরু হওয়ার বিষয়টি দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ভারত মস্কোর তেল কিনে রাশিয়াকে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালাতে সাহায্য করছে। এ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। আর এমন প্রেক্ষাপটে দিল্লি-বেইজিং সম্পর্ক উষ্ণ হতে শুরু করে।

আরও পড়ুনভারত-চীন কাছাকাছি এলে যুক্তরাষ্ট্র কি এশিয়ায় ধাক্কা খাবে২৪ আগস্ট ২০২৫

চীনের সঙ্গের ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর শহর কলকাতার সম্পর্কটা কয়েক শতাব্দী পুরোনো। অর্থাৎ ব্রিটিশ শাসনের সময় থেকেই দুই পক্ষের সম্পর্ক আছে। ওই সময় চীনা ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য করতে কলকাতায় যেতেন।

কলকাতার চায়না টাউন এলাকার সামাজিক সংগঠনের নেতা চেন খোই কুই বলেন, ‘আমাদের মতো যেসব মানুষের চীনে আত্মীয়স্বজন আছে, তাদের জন্য এটা দারুণ খবর। আকাশপথের এ যোগাযোগ দুই দেশের বাণিজ্য, পর্যটন ও ব্যবসায়িক ভ্রমণকে আরও এগিয়ে নেবে।’

আরও পড়ুনভারত কি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে হাঁটছে১০ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ