মৌলভীবাজারে জেঁকে বসেছে শীত। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত চায়ের রাজ্য হিসেবে পরিচিত জেলার শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
মৌলভীবাজার জেলা পাহাড়, হাওর এবং চা বাগান বেষ্টিত। ফলে ভোর থেকেই কুয়াশা ও শিশিরের সঙ্গে প্রচণ্ড ঠান্ডায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। সন্ধ্যায় শীত আরো তীব্র হয়ে উঠছে। চা শ্রমিক অধ্যুষিত মৌলভীবাজারের বিভিন্ন রেলস্টেশন ও ফুটপাতে শীতের পোশাকের চাহিদা বেড়েছে চোখে পড়ার মতো।
আরো পড়ুন:
দিনাজপুরের তাপমাত্রা ১৪.
পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা নেমেছে ১২ ডিগ্রিতে
এদিকে, গ্রামীন জনপদে নতুন ধান ঘরে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে নবান্নের আনন্দ বইছে। গোলায় ধানের সুঘ্রাণ আর পিঠা-পুলিতে গ্রামের প্রতিটি ঘরে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা নামলেই শহরের অলিগলিতে পিঠার দোকানগুলোতে ভিড় জমছে।
তীব্র শীতের মাঝেও জীবিকার টানে সকাল থেকেই কাজে বের হচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ। মৌলভীবাজার শহরের রিকশাচালক ছাতির মিয়া বলেন, “বেলা বাড়ার সঙ্গে রোদের দেখা মেলায় শীতের দাপট কিছুটা কমেছে। যে কারণে স্বস্তিতে কাজ করতে পারছি।”
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক দিলীপ বৈষ্ণব জানান, আজ ভোর ৬টা এবং সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকা/আজিজ/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মর্জিনা হত্যার রহস্য উদঘাটন, গ্রেপ্তার ৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় মর্জিনা বেগম হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। বুধবার (২৬ নভেম্বর) আখাউড়া সড়কবাজার এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
নিহত মর্জিনা বেগম (৪৫) পৌর এলাকার দেবগ্রাম গ্রামের ইসমাইল মিয়ার স্ত্রী। তিনি সড়কবাজারে পরিচ্ছন্নতার কাজ করতেন এবং সন্ধ্যায় পিঠা বিক্রি করতেন। তিনি তার দৃষ্টিহীন স্বামীর সঙ্গে নয়াবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
আরো পড়ুন:
ময়মনসিংহে পুলিশ বক্সের সামনে যুবদলকর্মীকে হত্যা
গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় যুবক নিহত
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগরের শহিদুল ইসলাম (৪৩), হবিগঞ্জের রানীগঞ্জের শফিক (৪০) এবং গয়েরপুরের রুমান মিয়া (২৪)। তারা আখাউড়া পৌর এলাকার মসজিদপাড়া লাল মিয়া হাজীর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
পিবিআই জানায়, গত ২৫ নভেম্বর মধ্যরাতে একটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন করে ‘মালের গাড়ি এসেছে’ মর্মে মর্জিনা বেগমকে ডেকে নেওয়া হয়। পরদিন সকাল থেকে তার খোঁজ না পেয়ে পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে। বিকেল ৫টার দিকে আখাউড়া পৌরসভা কার্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনের পাশে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
তদন্তে উঠে আসে, বাজার এলাকার দারোয়ান শহিদুল ইসলাম কৌশলে ফোন করে মর্জিনাকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যান। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ফোন করার ১৪ মিনিটের মধ্যেই মর্জিনা সেই পথে ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছেন। শহিদুল ইসলাম প্রথমে তাকে ধর্ষণ করেন। এরপর তার সহযোগী শফিক ও রুমান মিয়া ধর্ষণের চেষ্টা করলে ভুক্তভোগী বাধা দেন। পরে তিনজন মিলে তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। একপর্যায়ে একজন গলা চেপে ধরে এবং অন্য দুইজন হাত–পা চেপে শ্বাসরোধে মর্জিনার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
ঘটনার পর শহিদুল ইসলাম মোবাইল হারানোর নাটক করলেও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে তার অবস্থান শনাক্ত হয়। পরে ২৬ নভেম্বর আখাউড়া সড়কবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভোরে মসজিদপাড়া এলাকা থেকে শফিক ও রুমানকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
পিবিআই জানায়, গ্রেপ্তার তিনজনই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলমান।
পিবিআই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের সুপার শচীন চাকমা বলেন, “এটি একটি নৃশংস ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। প্রযুক্তি ও সিসিটিভি ফুটেজের সহায়তায় আমরা দ্রুত আসামিদের শনাক্ত করতে পেরেছি।”
ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ