জকসু নির্বাচনের প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট স্থগিত
Published: 26th, November 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের ডোপ টেস্টের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। আজ বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ভূমিকম্প–পরবর্তী পরিস্থিতির কারণে নির্বাচনী তফসিলের ক্রম-১১ অনুযায়ী প্রার্থীদের ২৭ নভেম্বর ও ৩০ নভেম্বরের ডোপ টেস্টের কার্যক্রম স্থগিত করা হলো। ডোপ টেস্টের নতুন সময়সূচি পরে জানানো হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, ভূমিকম্পের কারণে বেশির ভাগ প্রার্থী বাড়িতে চলে গেছেন। এ জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়ার শঙ্কা নেই। তিনি আশা করছেন, যথাসময়েই জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৩ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের কথা রয়েছে। এরপর ৪ ডিসেম্বর, ৭ ডিসেম্বর ও ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। প্রত্যাহার করা প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ৯ ডিসেম্বর।
এরপর ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীরা তাঁদের নির্বাচনী প্রচারণা করবেন আর ২২ ডিসেম্বর ভোট হবে। তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনের দিনই ভোট গণনা ও ২২–২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ফল ঘোষণা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড স ম বর
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে পুকুর ভরাট বন্ধে অভিযান, পুনঃখননের উদ্যোগ
রাজশাহী নগরে ভরাট হয়ে যাওয়া একটি পুকুর পুনঃখনন শুরু করেছে প্রশাসন। নগরের মোল্লাপাড়া মৌজায় ৬৩ শতাংশ জায়গার পুকুরটি কয়েকদিন ধরে ভরাট চলছিল। ইতোমধ্যে পুকুরটির সিংহভাগ ভরাট করে ফেলা হয়। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেখানে অভিযানে যান। তার আগে পুকুর ভরাটের সঙ্গে জড়িতরা পালিয়ে যায়।
অভিযানে নিজেই গিয়েছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার আ. ন. ম. বজলুর রশীদ। তিনি জানিয়েছেন, সিটি করপোরেশন এলাকায় পুকুর ভরাট নিষিদ্ধ হলেও যারা এই কাজ করছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি পুনঃখননের খরচ পুকুর খেকোদের কাছ থেকে আদায় করা হবে বলেও জানান তিনি।
আরো পড়ুন:
ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযানে বাধা, এনসিপি নেতাকে আসামি করে মামলা
কুষ্টিয়ার চরাঞ্চলে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ৯
বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে ছিলেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক তাছমিনা খাতুন, সহকারী পরিচালক মো. কবির হোসেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহমদ আল মঈন, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) নগর পরিকল্পক মো. রাহেনুল ইসলাম রনী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মহিনুল হাসান, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজ, রাজশাহী নগরের বোয়ালিয়া থানার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন ও জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার এসএম রকিবুল হাসান।
পুকুরপাড়ে গিয়ে বিভাগীয় কমিশনার নির্দেশ দেন, পুকুরটি আগে যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। এরপর খননযন্ত্র দিয়ে ভরাট করা মাটি তুলে পুকুরটি পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু হয়। পুকুর পুনঃখনন না হওয়া পর্যন্ত সেখানে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা দায়িত্বে থাকবেন বলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এলাকার লোকজন জানান, খাইরুল ইসলাম খোকন ও মাহমুদুল হাসান নামের দুই ব্যক্তি পুকুরটির মালিক। সম্প্রতি পুকুরটি ভরাট শুরু করেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। স্থানীয়রা বিষয়টি গত শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বোয়ালিয়া থানার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেনকে জানান। এরপর তিনি গিয়ে সবাইকে সতর্ক করে আসেন। কিন্তু শনিবার (২২ নভেম্বর) থেকে পুরোদমে ভরাট কাজ চলতে থাকে। এ অবস্থায় স্থানীয়রা বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনারকে অবহিত করেন। অভিযোগ পেয়ে বিভাগীয় কমিশনার নিজে ওই পুকুর উদ্ধার করতে যান।
এ সময় বিভাগীয় কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি। সিটি করপোরেশন এলাকায় পুকুর ভরাট করা নিষিদ্ধ। তাই এ পুকুরটা পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ শুরু হয়েছে। এখানে যে ব্যয় হবে, সেটা আমরা পুকুর ভরাটকারীদের কাছ থেকে আদায় করব। এই পুকুর ভরাটের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় আর কোনো পুকুর ভরাট হবে না। আমরা খবর পেলে বন্ধ করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনব।’’
পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক তাছমিনা খাতুন বলেন, ‘‘এই পুকুর ভরাটের খবর পেয়ে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আমরা স্পটে এসে কাউকে পাইনি। তারপরও যাদের নামে এ জমি আছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা নিয়মিত মামলা করব। এরপর থেকে কেউ কোনো পুকুর ভরাট করতে পারবে না।’’
একসময় রাজশাহী শহরে অসংখ্য পুকুর ছিল। কিন্তু অল্প কিছু পুকুর ছাড়া সবই ভরাট হয়ে গেছে। এ অবস্থায় হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ ২০১৪ সালে হাইকোর্টে রিট করে। তখন বোয়ালিয়া ভূমি কার্যালয় গণনা করে নগরে ৯৫২টি পুকুরের অস্তিত্ব পায়। ২০২২ সালের ৮ আগস্ট হাইকোর্ট এই পুকুরগুলো সংরক্ষণসহ কয়েকটি নির্দেশনা দেন। রাজশাহী শহরে আর কোনো পুকুর যেন ভরাট না হয়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়।
পাশাপাশি ভরাট হওয়া পুকুরগুলো পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনারও নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। সিটি মেয়র, পরিবেশ অধিদপ্তর, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন ও রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। কিন্তু ওই নির্দেশনার পরও শহরে একের পর এক পুকুর ভরাট হয়েছে। দীর্ঘ সময়েও একটি পুকুরও আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়নি।
সবশেষ গত মার্চে নগরের ঘোষপাড়া মোড় এলাকায় ‘জোড়া পুকুর’ নামের একটি পুকুরের আংশিক উদ্ধার করা হয়। প্রায় সাড়ে ৩ বিঘা আয়তনের পুকুরটি অল্প অল্প করে ভরাট করা হচ্ছিল। খবর পেয়ে নগরের বোয়ালিয়া থানা ভূমি অফিসের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ সরকার ভরাট কার্যক্রম বন্ধ করেন। এ পুকুরটি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সংরক্ষণের তালিকায়ও আছে। পুকুরটির প্রায় ১০ কাঠা পুনঃখনন করা হয়। এরপর মোল্লাপাড়া এলাকার এ পুকুরটির পুরোটিই আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
ঢাকা/কেয়া/বকুল