টেস্টে বেপরোয়া শট খেললে টিকতে পারবেন না কনস্টাস, মনে করেন পন্টিং
Published: 11th, January 2025 GMT
স্যাম কনস্টাসকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত অনেকেই। বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফির শেষ দুই টেস্টে সাহসী ক্রিকেটের জন্য তিনি এখন বিশ্ব ক্রিকেটে পরিচিত মুখ। মেলবোর্নে অভিষেক টেস্টেই যেভাবে যশপ্রীত বুমরার ওপর তিনি চড়াও হয়েছেন, সেটি তো এখনো আলোচনার বিষয়। তবে এর মধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক রিকি পন্টিং বললেন, কনস্টাসের কৌশলই কাল হতে পারে তাঁর জন্য।
কনস্টাস টেস্ট ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত খেলেছেন ৪ ইনিংস। তবে তাঁকে ঘিরে বেশি আলোচনা অভিষেকে ৬০ রানের ইনিংসকে ঘিরে। আলোচনার অবশ্য যথেষ্ট কারণও আছে। কী হয়েছিল সেই ইনিংসে, সেটা আরেক দফা মনে করিয়ে দিলে আরও বাড়াবাড়ি মনে হবে না। সেদিন এমিসিজেতে ইনিংসের শুরুতে বুমরার করা প্রথম ওভার মেডেন দিয়েই শুরু করেছিলেন কনস্টাস। দ্বিতীয় ওভারে নিয়েছিলেন ২ রান।
এরপর বুমরার করা তৃতীয় ওভারেও মেডেন দেন কনস্টাস। বিশ্বের অন্যতম সেরা পেসারের সামনে অভিষিক্ত ব্যাটসম্যানের এমন হাঁসফাঁস দশা মোটেও অস্বাভাবিক মনে হয়নি। বুমরার প্রথম ১৮ বলে কনস্টাস করতে পারেন মাত্র ২ রান।
ফিফটির পর স্যাম কনস্টাস.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতীয়রা ষড়যন্ত্র করে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে: জামায়াত সেক্রেটারি
বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি অভিযোগ তুলেছেন, “দিল্লির পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ভিত্তিতে ভারতীয়রা আমাদের বুদ্ধিজীবী তথা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে জাতিকে মেধাশূন্য করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে।”
আরো পড়ুন:
টিটোর আত্মত্যাগে শত্রুমুক্ত হয় সাভার
বিজয় দিবস উদযাপনে প্রস্তুত হচ্ছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্ম গেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট হল রুমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই অভিযোগ উত্থাপন করেন গোলাম পরওয়ার।
গোলাম পরওয়ার বলেন, “স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও বুদ্ধিজীবী হত্যার রহস্য এখনো রহস্যাবৃতই রয়ে গেছে।”
স্বাধীনতার পর কোনো সরকারই এ হত্যাকাণ্ডের বিচারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি দাবি করে গোলাম পরওয়ার বলেন, “বরং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য সব দোষ জামায়াতের ঘাড়ে চাপিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করা হয়েছে। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের সাথে ভারত এবং তাদের এ দেশীয় এজেন্ট জড়িত ছিল; তা ভারতীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি ও লেখকদের লেখনি থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়।”
গোলাম পরওয়ারের ভাষ্য, “মূলত, ১৪ ডিসেম্বর পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের কথা থাকলেও ভারতীয় পরিকল্পনায় তা দুই দিন বিলম্বিত হয়। আর এ দু’দিনে আমাদের শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক, প্রকৌশলী, আইনবিদসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়েছিল। মূলত, যাদেরকে সে সময় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল, তারা স্বাধীনতার স্বপক্ষে হলেও ভারত ও তাদের এদেশীয় এজেন্টদের আদর্শবিরোধী ছিলেন। তাই তাদের পথচলাকে নির্বিঘ্ন করার জন্যই এই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, স্বাধীনতা-পরবর্তী কোনো সরকারই বুদ্ধিজীবী হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। বরঞ্চ আওয়ামী লীগ তদন্ত রিপোর্ট চাপা দিয়ে রেখেছে।”
এ সময় শহীদ বুদ্ধিজীবী জহির রায়হানের প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি অভিযোগ করেন, “এমনকি চলচিত্রকার শহীদুল্লাহ কায়সারের ভাই জহির রায়হানের অন্তর্ধানের ঘটনা আজো রহস্যাবৃত্তেই রয়ে গেছে।”
বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের আহ্বান জানান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল।
একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় দিবসের মাত্র দুদিন আগে ঢাকাসহ সারা দেশে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতেই এমন নৃশংসতা চালিয়েছিল পাকিস্তান। এতদিন এই ইতিহাস চর্চিত হয়ে এলেও মিয়া গোলাম পরওয়ার দাবি করছেন, ভারতীয়রা ষড়যন্ত্র করে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল।
মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাস বিতর্কে গোলাম পরওয়ারের প্রকাশ্যে এই দাবি নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা হলো স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের জামায়াত আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১২ আসনে জামায়াতের পদপ্রার্থী সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন।
উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা ও ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য জিয়াউল হাসান, মু. আতাউর রহমান সরকার, জামাল উদ্দিন, মুহিবুল্লাহ ও নাসির উদ্দীন প্রমুখ।
মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, “বুদ্ধিজীবীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাই আমরা তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে বিভাজন করতে চাই না। তারা যে আদর্শেরই হোন না কেন, তাদেরকে আমরা সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করতে চাই।”
তিনি দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
ভারতের দিকে ইঙ্গিত করে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, “জাতি হিসেবে যারা আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দিতে চায়নি, তারাই এই নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের অপশক্তি। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় যে, বিজয়ের ৫ দশক অতিক্রান্ত হলেও এ হত্যাকাণ্ডের কুশীলবরা আজো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। স্বাধীন দেশে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও কথা সাহিত্যিক শহীদুল্লাহ কায়সারের ভাই জহির রায়হানের হত্যার রহস্যের জট এখনো খোলেনি।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল