Prothomalo:
2025-12-12@06:17:00 GMT

কাটা হচ্ছে হাজারো গাছ

Published: 11th, January 2025 GMT

উন্নয়নের কারণে গাছ কাটতেই হবে, এটিই যেন এ দেশের নিয়ম হয়ে গেছে। গাছ না কেটে বা পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করে কীভাবে উন্নয়ন করতে হবে, সেই বিবেচনাবোধ কখন আমাদের নীতিনির্ধারক ও সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজ করবে, আমরা জানি না। দুই বছর ধরে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে গাছ কাটা নিয়ে বেশ শোরগোল উঠেছিল। কিন্তু কোনো প্রতিবাদই দিন শেষে কাজে আসছে না। যার কারণে আমরা দেখছি বান্দরবানে একটি সড়ক সম্প্রসারণের কাজে কেটে ফেলা হচ্ছে হাজারেরও বেশি গাছ। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

বান্দরবান সদর উপজেলার বান্দরবান-কেরানীহাট প্রধান সড়ক থেকে শুরু হয়ে রেইচা-গোয়ালিয়াখোলা হয়ে কেয়ামলং ও গুংগুরু সংযোগ সড়কে গিয়ে মিলেছে এ সড়ক। দুই বছর আগেও সাত কিলোমিটারের সড়কটির দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সমারোহে সবুজ বেষ্টনী মোড়ানো ছিল। কিন্তু রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য এসব গাছ কাটা শুরু হয়েছে। স্থানীয় লোকজন জানান, সড়ক সম্প্রসারণের কথা বলে সড়কের দুপাশের পাঁচ শতাধিক গাছ ইতিমধ্যে কাটা হয়েছে। কিছু গাছের গুঁড়ি এক্সকাভেটর দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়েছে, যেন গাছ কাটার কোনো চিহ্ন পাওয়া না যায়। এ নিয়ে ডেইলি স্টার বাংলা অনলাইন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। 

২০১৮ সালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নোমানের সই করা নিলাম ও গাছ কাটার অনুমতিপত্র অনুযায়ী সড়কটির সম্প্রসারণের জন্য ৬৬৬টি মেহগনিগাছ, ৩৩৪টি শিশুগাছসহ মোট এক হাজার গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়। ঠিকাদার ২৮০টি গাছ কেটে ফেলার পর সে কাজে বাধা দেওয়ায় উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ, এলজিইডি ও বন বিভাগের বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি।

 বান্দরবান সদর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদের বক্তব্য, রাস্তাটি স্থানীয় প্রশাসনের অধীন। বন বিভাগ এটার অংশীজন নয়। রাস্তার দুই পাশে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে আদালতে মামলা চলমান। সে মামলায় বন বিভাগও আসামি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী পারভেজ সারোয়ার হোসেনের বক্তব্য, বান্দরবান এলজিইডি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাস্তাটি সম্প্রসারণের প্রকল্প হাতে নেয়। পরিবেশের ক্ষতি হয়, এমন কোনো কাজ এলজিইডি করবে না এবং তারা কাউকে গাছ কাটা কিংবা পরিবেশ ধ্বংসের জন্য সুপারিশ বা অনুমতি দেয় না।

রাস্তার দুই পাশে গাছ কাটা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান, আবার গাছ কাটার অনুমতিও এলজিইডি দেয় না; তাহলে রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য গাছগুলো কীভাবে কাটা হচ্ছে? কারা ঠিকাদারকে এ গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছে? ওই সড়কে ৭০–৮০ বছর থেকে শতবর্ষী অনেক গাছ আছে। এসব গাছ কোনোভাবেই কাটার সুযোগ নেই। গাছ কেটে এভাবে সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পটির প্রয়োজনীয়তাও যাচাই করা হোক।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

টাইম সাময়িকীর বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হলেন এআইয়ের স্থপতিরা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ‘টাইম’ সাময়িকী এবার বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) স্থপতিদের বেছে নিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সাময়িকীটি ২০২৫ সালের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্বের নাম ঘোষণা করে। তবে এবার একক কোনো ব্যক্তিকে বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে নির্বাচিত করা হয়নি।

টাইম সাময়িকী জানিয়েছে, ২০২৫ সাল ছিল এআইয়ের জন্য যুগান্তকারী একটি বছর। এই বছর এআই প্রযুক্তি অপ্রতিরোধ্যভাবে দৃশ্যপটে এসেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে টাইম বলেছে, এআইয়ের স্থপতিরা এমন এক যুগ উপহার দিয়েছেন, যখন যন্ত্র মানুষের মতো চিন্তা করতে পারছে। এটি মানবজাতিকে যেমন বিস্মিত করছে, তেমনি উদ্বিগ্নও করছে। বর্তমানকে রূপান্তরের পাশাপাশি এটি সম্ভবের সব সীমাকে ছাড়িয়ে গেছে।

এ কারণেই ২০২৫ সালের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হয়েছেন এআইয়ের পেছনের কারিগরেরা।

টাইম এবার একটি সচেতন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা সরাসরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে বর্ষসেরা ঘোষণা করেনি, বরং এটি নিয়ে যাঁরা চিন্তা করেছেন, নকশা করেছেন এবং তৈরি করেছেন—তাঁদের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। অবশ্য অতীতে বর্ষসেরা হিসেবে প্রযুক্তি বা ধারণাকে বেছে নেওয়ার নজির রয়েছে।

টাইমের প্রধান সম্পাদক স্যাম জ্যাকবস বলেন, তারা এর আগেও ব্যক্তির বাইরে বিভিন্ন গোষ্ঠী বা ধারণাকে বর্ষসেরা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। যেমন ১৯৮৮ সালে বিপন্ন পৃথিবী বা ১৯৮২ সালে ব্যক্তিগত কম্পিউটার।

জ্যাকবস বলেন, অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসকে বাদ দিয়ে ‘ব্যক্তিগত কম্পিউটারের’ ধারণাকে বর্ষসেরা হিসেবে বাছাই করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তখন অনেক নাটকীয়তাও হয়েছিল। এ বিষয়টি পরবর্তী সময়ে বই ও সিনেমায় স্থান পেয়েছে।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ফরেস্টারের প্রধান বিশ্লেষক থমাস হাসন এই নির্বাচনকে সমর্থন দিয়ে বলেছেন, ২০২৫ সাল ছিল এআইয়ের জন্য রূপান্তরের একটি বছর। এ বছরে এআই কেবল প্রযুক্তিপ্রেমীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের মূলধারার অংশে পরিণত হয়েছে। এই ব্যাপক ব্যবহারই এটিকে বর্ষসেরা নির্বাচনের যোগ্য করে তুলেছে।

এবারের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্বের দৌড়ে এআই স্থপতিদের পাশাপাশি এনভিডিয়ার সিইও জেনসেন হুয়াং এবং ওপেনএআইয়ের স্যাম অল্টম্যানের নামও আলোচনায় ছিল। সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় আরও ছিলেন পোপ লিও চতুর্দশ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং নিউইয়র্কের মেয়র জোহরান মামদানি।

গত বছর টাইম সাময়িকীর বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২৩ সালে এ তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন জনপ্রিয় পপ তারকা টেইলর সুইফট।

সম্পর্কিত নিবন্ধ