‘হাসপাতালো চিকিৎসা খিতা করবায়। সুইডাও নাই তারার খাছে। ওষুদপত্রও থাহে না। তারার খাছে আইলে ফাডাই দেয় অন্যহানোত ...।’ চুনারুঘাটের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রত্যাশিত চিকিৎসাসেবা না পাওয়ায় এভাবেই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন এক রোগীর স্বজন। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি জানান, চিকিৎসকরা নিজেদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। তবে সরঞ্জাম না থাকলে তাদেরই-বা কী করার আছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাইরে চিকিৎসা নিতে গেলে তাদের প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চিকিৎসা শুধু নামেই, আসলে বিশেষ কোনো সেবা তারা পাচ্ছেন না ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী ও জনবল নেই। রোগীদের চাপ থাকলেও নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক। প্রতিমুহূর্তে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের।
উপজেলার ৫ লাখ মানুষের জন্য চারজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে চলছে পুরো হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম। ঝামেলা এড়াতে রোগীদের প্রায়ই পাঠিয়ে দেওয়া হয় অন্য কোথাও। হাসপাতাল সূত্র জানায়, এ উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার মানুষ চিকিৎসা নিতে আসে চুনারুঘাট হাসপাতালে। গড়ে প্রতিদিন এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন ৫ শতাধিক মানুষ। তবে চিকিৎসক ও চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট থাকায় সেবা পাওয়া যাচ্ছে না ঠিকমতো।
চারজন চিকিৎসক দিয়ে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে সঠিকভাবে চিকিৎসাসেবা দিতে না পারার কথা স্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষও। পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও জনবল না থাকায় জরুরি ক্ষেত্রে রোগীদের স্থানান্তর করা হয় হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল বা সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে সাত মাস ধরে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রীর সরবরাহ নেই। এতে চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। হাসপাতালের বাইরে চিকিৎসা নিতে গিয়ে চাপে পড়ছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। সরকারিভাবে ক্যানুলা ও সিরিঞ্জ সরবরাহ কম হওয়ায় রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়ার পর প্রয়োজনীয় ওষুধের অধিকাংশই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। এতে তাদের আর্থিক চাপ বাড়ছে। অনেকে সেবা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
হাসপাতালের নার্স সুবর্ণা ও তানিয়া জানান, চিকিৎসা দিতে গেলে ক্যানুলা, সিরিঞ্জ ও স্যালাইনের মতো অতিপ্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী যথেষ্ট পরিমাণে থাকতেই হবে। বাধ্য হয়ে রোগীদের সেগুলো কিনতে হচ্ছে। 
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন সেখানে গড়ে ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। এ ছাড়া বহির্বিভাগে বহু রোগী ভিড় জমান। এসব রোগীর পক্ষে ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী বাইরের ফার্মেসি থেকে কেনা কঠিন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জানান, হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রীর মজুত কম। তবুও চেষ্টা থাকে জনগণের কষ্ট লাঘবের।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চাপে পড়ে নয়, অনুরোধে ভারতে ইলিশ পাঠানোর অনুমোদন: ফরিদা আখতার

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, কোনো চাপে পড়ে নয়; বরং ধর্মীয় সৌজন্যবোধ ও অনুরোধের কারণে ভারতে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ পাঠানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি গত বছরের তুলনায় অর্ধেকের কম। এ ছাড়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ১১ হাজার টন ইলিশ পাঠানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন উপদেষ্টা। এর আগে জেলা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, নারী কৃষক এবং স্থানীয় এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা সভায় অংশ নেন তিনি।

গত বছরের তুলনায় এবার ইলিশ রপ্তানি কমেছে জানিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, ‘গত বছর আমরা ভারতে ইলিশ রপ্তানি করেছি তিন হাজার টন। আর এ বছর রপ্তানির জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ১ হাজার ২০০ টন। তাই কোনো চাপের ফলে ইলিশ পাঠানোর কিছু নেই; বরং আমরা ধর্মীয় সম্প্রীতির জায়গা থেকে ইলিশ পাঠাচ্ছি।’

দুর্গাপূজায় ভারতে যাচ্ছে ১২০০ টন ইলিশ, রপ্তানির অনুমতি দিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

বাজারে ইলিশের কম সরবরাহের বিষয়ে এই উপদেষ্টা বলেন, চলতি বছর জাটকা নিধনের ফলে ইলিশের উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কমেছে। গত মৌসুমের তুলনায় চলতি বছরের জুলাই মাসে ৩৭ শতাংশ ও আগস্ট মাসে ৪৭ শতাংশ কম ইলিশ ধরা পড়েছে। এর কারণে বাজারে ইলিশের দাম বেশি। তবে এ মাসেই দেশের কিছু জায়গায় সাশ্রয়ী মূল্যে ইলিশ বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনএত ইলিশ হঠাৎ কোথায় গেল০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফরিদা আখতার বলেন, কৃষিতে যেমন প্রণোদনা আছে, মৎস্য খাতে তেমন প্রণোদনা নেই বললেই চলে। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার জনকল্যাণের জন্য নানামুখী কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। গবাদিপশুকে এলএসডি (লাম্পি স্কিন ডিজিজ) মুক্ত করতে সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জসহ চার জেলাকে সম্পূর্ণভাবে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে।

আলোচনা সভায় কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ, সিভিল সার্জন স্বপন কুমার বিশ্বাস, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোক্তাদির খান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ রানাসহ প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুনভরা মৌসুমেও বড় ইলিশ নাগালের বাইরে, ভরসা ‘টেম্পু ইলিশ’০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাদারীপুরে পুকুরে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যু
  • হাতে ভোট গণনাসহ ছাত্রদলের ৬ দাবি, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত
  • সিলেটে রোগীর মৃত্যুর জেরে হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুর, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া
  • গুদামে খাওয়ার অনুপযোগী চাল নিয়ে রাজশাহী খাদ্য বিভাগে তোলপাড়, ৮ তদন্ত কমিটি
  • ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর কখন পড়বে
  • ‘কেনতো পারমু না, হেইতে ইলশার সুরতটা দেইখ্যা যাই’
  • যে হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ, বিদ্যুৎ–সংযোগ কিছুই নেই
  • সিজারের সময় নবজাতকের পা ভেঙে ফেলার অভিযোগ
  • যুক্তরাজ্য থেকে আসছে মাদক এমডিএমএ, গ্রেপ্তার ৫
  • চাপে পড়ে নয়, অনুরোধে ভারতে ইলিশ পাঠানোর অনুমোদন: ফরিদা আখতার